মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিএনডি প্রজেক্টের সাফল্য নিয়ে জনগণের মাঝে দুশ্চিন্তা

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৪৫ পিএম, ২৪ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

গতকাল এক দিনের বৃষ্টিতেই ডুবেছে ডিএনডির ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বিশাল এলাকা। দুটি থানার অধিকাংশ এলাকা গতকাল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল থেকে ফতুল্লার লালপুর এবং কুতুবপুরের পাগলা দেলপাড়া রোড পর্যন্ত বিশাল এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। ফলে এসব এলাকার মানুষ গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোষ্ট দিয়ে নিজ নিজ এলাকার চিত্র তুলে ধরেছেন। অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়ে পরেছে যে এসব এলাকায় ঘরে ঘরে এখন বোবা কান্না। মানুষ কার কাছে যাবে বুঝতেই পারছে না।

 

কারণ ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনী কাজ করছে চার বছর হতে চললো। কিন্তু দিনে দিনে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। এবার পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে খারাপ হয়েছে। এদিকে এ বিষয়ে গতকাল ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিছির আলী বলেছেন, আমরা খুবই অসহায় হয়ে পরেছি। আমি ইসদাইর এলাকায় আমার বাড়ি নির্মাণ করেছিলাম রাস্তা থেকে পাঁচ ফুট উঁচু করে। কিন্তু আমার সেই বাড়ি আজ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য দুই দফায় তেরোশ কোটি টাকা দিয়েছেন। প্রথমেই তিনি সারে পাঁচশ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। তখন বলা হয়েছিলো এই টাকার কাজ শেষ হলে ডিএনডির ভেতর আর কোনো জলাবদ্ধতা হবে না। কাজ শেষ হবে দুই বছরের মধ্যে। কিন্তু সেই দুই বছর শেষ হয়ে চার বছর হতে চললো পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটে আরো অবনতি ঘটেছে।

 

তাই আমরা মনে করি এতো বিশাল অংকের টাকার কি কাজ হচ্ছে তার একটি জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ। আমরা নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করবো তিনি যেনো বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়ে জনগণকে অবহিত করেন। কারণ আসলে ডিএনডি প্রজেক্টের নামে কি হচ্ছে এটা নিয়ে আমরা অন্ধকারে রয়েছি। দিনে দিনে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে অবনতি কেনো হচ্ছে সেটা জনগণকে জানানো জরুরী বলে মনে করি।


অপরদিকে কুতুবপুর ইউনিয়নের বিশিষ্ট নাগরিক হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেন, ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে যারা কাজ করছেন তারা আসলে আন্তরিকভাবে কোনো কাজ করছেন না। এই কাজের জন্য সরকার যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে শুনছি আসলে এই কাজের জন্য এতো টাকা লাগার কথা নয়। সরকার টাকা দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাই ডিএনডিবাসী জানতে চায় সরকারের দেয়া এই মোটা অংকের টাকায় কি কাজ হচ্ছে। কোন কাজে কতো টাকা খরচ হচ্ছে সেটার একটি জবাবদিহিতা থাকা জরুরী বলে আমরা মনে করি। একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, হিরাঝিলের এই রাস্তায় কখনো পানি জমেনি। কিন্তু আজকের (গত কালের) বৃষ্টির পর এই রাস্তায় পানি জমে গেছে। তাই ডিএনডি প্রজেক্ট নিয়ে আমরা চিন্তিত। এই প্রজেক্ট হিতে বিপরিত হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।

 


প্রসঙ্গত ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য আরো চার বছর আগে সরকার একটি মেঘা প্রকল্প গ্রহণ করে। আর এই প্রকল্পের কাজের জন্য প্রথমে সারে পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। তখন বলা হয়েছিলো এই মোটা অংকের টাকার কাজ শেষ হলে ডিএনডি এলাকা হবে দেশের অন্যতম আবাসিক এলাকা। কিন্তু সেই টাকা শেষ করে আরো সারে সাতশ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোথাও এতোটুকু উন্নয়ন হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে। এই মুহুর্তে গোটা ডিএনডি এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে।