মদনগঞ্জ-মদনপুর পুরো সড়ক জুড়েই ‘টিউমার’
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১০:৫১ পিএম, ২ আগস্ট ২০২১ সোমবার
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের বন্দরের মদনগঞ্জ-মদনপুর প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হওয়ায় পরও সড়কের অনেকস্থানে উঁচু- নিচু ‘টিউমার’ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য খানাখন্দের বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে। আবার বিভিন্নস্থানে ধসে গেছে সড়কের পাড়। পুরো সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হওয়া উঁচু-নিচু ‘টিউমার' ও গর্ত পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে যানবাহন। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মদনগঞ্জ-মদনপুর প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘ তিন মাস আগে সংস্কার করে ডাবল বিএসপি কার্পেটিং করা হয়েছিলো। সড়কে তিনটি সিমেন্ট কারখানার ভারী ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের অনেকস্থানে কার্পেটিং উঠে উঁচু-নিচু টিউমার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এ অবস্থাকে ‘সড়কের টিউমার’ বলেন। কোনও কোনও স্থানে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। এছাড়া বিভিন্নস্থানে ধসে গেছে সড়কের পাড়। সড়কটিতে শুধু বড় যানবাহন নয়, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল ও ভটভটির মতো যানবাহনও চলাচল করে।
সড়কের সৃষ্টি হওয়া গর্তে ও টিউমারে ধাক্কা লেগে মাঝে মধ্যে এসব যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেল থেকে আরোহী পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সড়কের এসব মরণফাঁদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেকে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। ভেঙে যাচ্ছে যানবাহনগুলোর মূল্যবান যন্ত্রাংশ। মদনগঞ্জ- মদনপুর সড়কের ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোরিকশা ও মোটসাইকেল চালকদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, দীর্ঘ তিন মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের সংস্কার কাজ হয়। মাঝে মাঝে মধ্যে বড় গর্ত ইট দিয়ে মেরামত করা হয়। কিন্তু এই সড়কে সবচেয়ে বেশী চলাচল করে সিমেন্ট কারখানার বড় বড় গাড়ি। এসকল সিমেন্ট কারখানার গাড়ি গুলো অতিরিক্ত টনের টনের মালামাল নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। সড়কের কার্পেটিং থেতলে গিয়ে ফুলে ছোট বড় টিউমার ও গর্ত সৃষ্টি হয়।
এর ফলে মদনপুর- মদনগঞ্জ সড়ক সংস্কারের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আবার নষ্ট হয়ে যায়। তারা আরও বলেন, সড়কের টিউমারের সঙ্গে ধাক্কা ও গর্তে পড়ে যানবাহনে প্রচুর ঝাঁকুনি হয়। চলন্ত গাড়ীর চাকা গর্তের মধ্যে ইঞ্জিন ও টায়ার-টিউবের সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি যাত্রীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের টিউমারের কারণে অনেক মোটরসাইকেল থেকে চালক ছিটকে পড়েন। এ অবস্থায় সামনের গাড়ি অতিক্রম করা সম্ভব হয় না। একটু অসতর্ক হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকে। তাই সড়কে অনেক ধীর গতিতে চলাচল করতে হয়।
নারায়ণগঞ্জ সওজ ও সড়ক উপ-বিভাগ ভিটিকান্দি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.আবুল হোসেন এবিষয়ে যুগের চিন্তা বলেন, গত জুনে মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কের ডাবল বিএসপি কার্পেটিং কাজসহ সংস্কারের জন্য এক বছরের জন্য ঠিকাদার কোম্পনীকে দেওয়া হয়েছে। তারা আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই সড়কের সংস্কার কাজ করবে। এই সড়ক দিয়ে তিনটি সিমেন্ট কারখানার অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই ভারী ভারী গাড়ি চলাচল করায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে থেতলে গিয়ে উঁচু-নিচু টিউমার ও গর্ত সৃষ্টি হতে পারে। আর অতি বৃষ্টির কারণে সড়কে পানি জমে রাস্তার পাড় ভেঙ্গে পড়ে।
সড়কের উঁচু-নিচু টিউমার ও গর্ত মেরামত চলমান রয়েছে। আমরা এই গুলো সংস্কার করার জন্য ঠিকাদার কোম্পনীকে বলে দিবো তারা দ্রুত তা করে দিবে। তিনি আরও বলেন, মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কটি একনে ২৭’শ কোটি টাকা পাশ হয়েছে। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর জন্য ৩৬ ফুট চড়া হবে এই সড়ক। সড়কটি মদনপুর থেকে শীতলক্ষ্যা সেতুর ওই পার হয়ে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত হবে।