জেলার এক অবহেলিত জনপদের নাম ফতুল্লা, দায়ী কে ?
ফতুল্লা প্রতিনিধি
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৫:৫৬ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২১ শনিবার
# ভালো কোনো রাস্তা নেই, অধিকাংশ রাস্তা দিয়েই দুটি প্রাইভেট কার পাস হতে পারে না
# গড়ে তোলা হয়নি কোনো ড্রেনেজ ব্যাবস্থা, তাই ভয়াবহ জলাবদ্ধতা হচ্ছে
# রাজনৈতিক শেল্টার পাওয়ায় মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজরা বেপরোয়া
নারায়ণগঞ্জের এক অবহেলিত জনপদের নাম হলো ফতুল্লা। অথচ নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচেয়ে জনবহুল জনপদ হলো এই জনপদ। ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নে লোক বাস করেন অন্তত ১৫ লাখ। এই জনপদের কেবল মাত্র কুতুবপুর ইউনিয়নেই বসবাস করনে কম করে হলেও পাঁচ লাখ মানুষ। এই ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যাই আড়াই লাখ। পাশের ফতুল্লা ইউনিয়নেও বহু লোক বাস করেন। এনায়েতনগর এবং কাশীপুর ইউনিয়ন এলাকায়ও বাস অন্তত তিন লাখ করে মানুষ। নদীর ওপার বক্তাবলীর জনসংখ্যাও এখন প্রায় এক লাখ। ফলে দেখা যায় সব মিলিয়ে ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নে অন্তত পনের লাখ মানুষ বসবাস করেন।
অথচ এই বিপুল সংখ্যক মানুষের বাস যেই জনপদে সেই জনপদেই পরিকল্পিত কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। কারণ কি? এর জন্য দায়ী কে? প্রথমত একটি শহর এলাকা হওয়া সত্বেও অত্র এলাকাকে দিয়ে রাখা হয়েছে গ্রামের মর্যাদা। সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বাধা দেওয়ার কারণে ফতুল্লা থানা এলাকাটি সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে অত্র এলাকায় কোনো পরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে না। ইউনিয়ন পরিষদগুলির হাতে উন্নয়ন করার মতো কোনো বাজেটই নেই। নেই কোনো পরিকল্পনাবিধ বা উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করার মতো কোনো লোকবল বা যন্ত্রপাতি। আর এটাই ফতুল্লার উন্নয়ন না হওয়ার জন্য এক নম্বর দায়ী। অথচ ফতুল্লাকে আরো পাঁচ বছর আগেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতায় নেয়ার চেষ্ঠা করেছিলেন মেয়র আইভী। কিন্তু শামীম ওসমান সেটি হতে দেননি। সূত্র মতে জানা গেছে মূলত শামীম ওসমানের বাধার কারণেই ফতুল্লা থানা এলাকা এখনো গ্রামের মর্যাদায় রয়ে গেছে।
এদিকে ফতুল্লার উন্নয়নের দায়িত্ব শামীম ওসমান তার নিজের হাতে রাখলেও তিনি আসলে জানেনও না কোথায় কি সমস্যা রয়েছে। এবারের বর্ষায় ফতুল্লাবাসী সীমাহীন যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফতুল্লার লালপুর এলাকায় এখনো রাস্তায় পানি। বিগত দিনে টানা দুই মাস গোটা কুতুবপুর এবং ফতুল্লা ইউনিয়ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে ছিলো। এনায়েত নগর এবং কাশীপুরেরও বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে ছিলো। ফলে এসব এলাকায় বসবাসকারী সাধারন মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগের মাঝে জীবনযাপন করতে হয়েছে।
অপরদিকে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোনো এলাকায়ই পরিকল্পিত কোনো রাস্তাঘাট গড়ে উঠেনি। রাস্তাগুলির বেশি ভাগই এতোটাই সরু যে দুটি প্রাইভেট কার পাস হতে পারে না। আর কোনো ড্রেনেজ ব্যাবস্থা বলতেতো কিছুই নেই। শামীম ওসমান কোথাও কোনো ড্রেনেজ সুবিধা গড়ে তোলেননি। তাই পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আগামী দিনে এই জনপদে মানুষ বাস করতে পারবে না। এছাড়া এখানে নাগরিক সুবিধা বলতে কিছুই নেই। বরং ফতুল্লা আরো অনেক আগে থেকেই একটি ক্রাইম জোন হিসাবে পরিচিত। এখানে অন্য থানার তুলনায় অনেক বেশি মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী এবং জুট সন্ত্রাস, চোরাই তেলের ব্যাবসা সহ নানা রকম অপরাধীদের অভয়ারন্য হিসাবেও পরিচিত। কারণ এখানে অপরাধীরা রাজনৈতিক শেল্টার পায় বেশি। তাই মানুষ এখানে অনেকটাই সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মী। মূলত এভাবে প্রায় সব দিক থেকেই পিছিয়ে পরেছে শামীম ওসমানের ফতুল্লা অঞ্চল।