মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১   ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তিন ওসি ও ছয় দারোগার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪৬ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২১ বুধবার

জালিয়াতি ও ঘুষের টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকুরি দেয়া একটি প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। ঠিকানা জালিয়াতি প্রমাণে চাকুরি হারিয়েছে ১৮ কনেষ্টবল। অভিযোগ রয়েছে, ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় চাকুরি দেয়া হয় ওই সব তরুনদের। তাদের ঠিকানা দেখানো হয় রূপগঞ্জে। এ ঘটনার ১৮ পুলিশ সদস্যের ঠিকানা যাচাইকারী তৎকালিন রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল, আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম ও ফতুল্লা থানার ওসি আসলাম হোসেন সহ ৬ পরির্দশককের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

 

সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কনেস্টেবল নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ২৪ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর জেলার রূপগঞ্জের বাগলা গ্রামে স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে পুলিশের কনেষ্টবল পদে যোগদান করেন ১৮ জন। তাদের ঠিকানা যাচাই করতে বলা হয় জেলা পুলিশকে। সেখান থেকে দায়িত্ব পান সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ৬ জন উপ-পরিদর্শক। তাদের ঠিকানা যাচাই বাছায়ের পর রাঙ্গামাটির বেধবুনিয়ার প্রশিক্ষনে যায় ১৮ পুলিশ কনেষ্টবল। সেখান থেকে প্রশিক্ষন শেষে তাদের বদলি দেয়া হয় ১৮ জেলায়। কিন্তু নতুন চাকুরি পাওয়া বিষয়ে এক তদন্তে বেরিয়ে আসে ঠিকানা জালিয়াতির তথ্য। পুলিশের নানা পদক্ষেপের পর শেষ পর্যন্ত চাকুরি হারান ওই ১৮ জন।

 

এরপর বেড়িয়ে আসে ওই ১৮ জনের ঠিকানা যাচাই বাছাইয়ের তদন্ত করেছিলেন কারা। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  প্রথম দফা তদন্তে বেরিয়ে আসে ঠিকানা যাচাইয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন  তৎকালিন রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান, আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম ও ফতুল্লার থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেন এবং ৬ উপ পরির্দশক মো. ফরিদ উদ্দিন, শাহজাহান খান, শামীম আল মামুন, খাইরুল ইসলাম, কৃষ্ণ কর্মকার ও আরিফুর রহমান। তবে তারা সঠিত ভাবে তদন্ত করেনি। তাদের দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও গাফলতির প্রমান পেয়েছে পুলিশের কর্মকর্তারা। শৃঙ্খলা বঙ্গের দায়ে তাদের বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশের দ্বিতীয় দফা তদন্তে রূপগঞ্জের তখনকার ওসি মাহমুদুল হাসান বদলী হয়ে ঢাকার ডিএমপিতে কর্মরত আছেন।

 

তবে রূপগঞ্জের আগের কর্মস্থল গাজিপুরে তার বিরুদ্ধে ছিলো নানা অভিযোগ। ১৮ কনেষ্টবল নিয়োগে মানবিক দিক বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছিলেন ওসি মাহমুদুল। সেই সাথে  জমি ক্রয়সূত্রে ওই এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত করেন তিনি। এসব তথ্য নিয়ে সোমবার একটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ পুলিশ সদস্যের মধ্যে একজন নাম হুমায়ন করিব। তার বাড়ি সিরাগঞ্জের শাহাদাতপুর হলেও তিনি মিথ্য ঠিকানা নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ দিয়ে জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছেন পুলিশে। অপর আরেকজন রাসেল তার বাড়িও সিরাগঞ্জে। তিনি প্রশিক্ষনের পর যোগদান করেছিলেন নড়াইল জেলায়। পুলিশ বেরিফিকেশনের জন্য ওই ১৮ জন তাদের ঠিকানা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জে। সেখানে জমি কিনে কেউ টিন শিটের ঘর বানিয়েছে আবার কারো খালি জমি দেখানো হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, তারা কেউ ওই এলাকার বাসিন্দা নয়। পুলিশের উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ কনেষ্টবল নিয়োগে জালিয়াতির আর কেউ জড়িত আছে কিনা না তা এখনো তদন্তাধীন।