নারায়ণগঞ্জ-বন্দর সেন্টাল খেয়া পারাপার নৌকায় মালপত্র উঠলেই টাকা !
যুগের চিন্তা অনলাইন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:২৮ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ শুক্রবার
# ইজারাদার সাবেক কাউন্সিলর মুন্না, নিয়ন্ত্রণে সাজনু
# বিআইডব্লিউটিএ’র কর্তকর্তরা অন্ধ- নাগরিক নেতা
নারায়ণগঞ্জ-বন্দর সেন্টাল খেয়া ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে নৌকায় মালপত্র আনা নেয়ার সময় যাত্রীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হয়নি। তবে হঠাৎ করে এ নিয়মের পরিবর্তন ঘটেছে। এ ঘাট দিয়ে যাত্রীরা মালপত্র নিয়ে গেলে তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে টাকা। দশ টাকা থেকে শুরু করে একশত টাকা পর্যন্ত আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। একই অবস্থা শীতলক্ষ্যা নদীর ওপারে বন্দরের অংশে। সেখানে একটি সিন্ডিকেট একই ভাবে টাকা আদায় করছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। হঠাৎ এ পরবর্তনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
জানা গেছে, এ ঘাটের নতুন ইজারাদা সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না। তবে তার দাবি, ঘাট নিয়ন্ত্রন করে শহর যুব লীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইঁয়া সাজনু। যিনি ইতিমধ্যে শহরের আরেকটি বড় খেয়াঘাট হাজীগঞ্জ - নবীগঞ্জ ঘাট পরিচালনা করছেন। এ ঘাটের আগের সেন্টাল খেয়া ঘাটের দেখবাল করতো দিদার। তার বিরুদ্ধেও ঘাট চালানো নিয়ে নানা অভিযোগ ছিলো। দিদার ঘাটের চারপাশে দোকনপাট বসিয়ে যেমনি টাকা আয় করতো এখনকার ইজারাদারের লোকজনও তাই করছে। তবে দিদারের সময় নৌকায় মালপত্র নেয়া হলে সে জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে কোন টাকা নিতেন না। এভাবে চলছিলো গত বছর খানেক ধরে। হঠাৎ ইজারা পরির্তণের সাথে সাথে ঘাটের সব নিয়ম পরিবর্তন ঘটেছে। শুরু হয়েছে যাত্রীদের ভোগান্তি।
ভোক্তভুগীদের অভিযোগ, সেন্ট্রাল খেয়া ঘাট দিয়ে নৌকায় করে একটি বস্তা নিয়ে গেলেও দশ টাকা আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। টাকা দেয়া ছাড়া তারা নৌকায় মাল উঠাতে দেয় না। নৌকায় মালপত্র উঠলেই টাকা নেয়। এরপর নৌকায় করে মালপত্র নিয়ে (ওপার) বন্দর ঘাটে পৌছাঁলে সেখানে আরেক দল টাকা নিচ্ছে। তাদের কেও সব নিম্ন দশ টাকা দিতে হয়। ঘাটে এপার ও ওপার যদি একটি বস্তার জন্য দশ করে দিতে হয় তাহলে অন্য মালপত্র নেয়া হলে তারা কত টাকা নেয় তা সবাই বুঝে। এখন ঘাটে এ ধরনেরও হয়রানি করা হচ্ছে যাত্রীদের।
নাগরিক নেতার বলছেন, বন্দর ঘাট এমপি সেলমি ওসমান প্রথমে ফ্রি করলেন। তারপর ঘাটের দেখবাল করার দায়িত্বে থাকা দিদার দুই টাকা করে খেয়া পারাপার জন্য নেয়া শুরু করলো। এরপর এখন মালপত্র পারাপারের জন্য টাকা আদায় শুরু। সেই পুরনো নিয়মে ফিরে গেছে ঘাট গুলো। বরং লাভ বেড়েছে ইজারাদারদের। কারন আগে ছিলো পঞ্চাশ পয়সা আর বর্তমানে তা হয়েছে ২ টাকা। আগে মালপত্রের জন্য ছিলো ৫ টাকা এখন তা হয়ে গেছে ৫০ টাকা। তাদের এ ধরনের কৌলশের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
নাগরিক নেতারা আরো জানান, বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তরা অন্ধ। তাদের চোখ থাকলে ঘাটগুলোতে কোন সমস্যা থাকতো না। মানুষের ভোগান্তি বাড়তো না। সুতরাং আগে তাদের চোখের চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। তাহলে যদি মানুষের সমস্যা কমে।
তবে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল বলেছিলেন, ১ জুলাই থেকে ঘাটটি নতুন ভাবে ইজারা নিয়েছে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুুন্না। তিনি তার লোকবল দিয়ে ঘাটটি পরিচালনা করছেন। ঘাটে কোন সমস্যা থাকার কথা না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার দাবি করেছিলেন, বন্দর সেন্টাল খেয়াঘাটটি তার নামে ইজারা হলেও ঘাট চালায় শাহাদাৎ হোসেন সাজনু। মুন্না বলেন, ইজারা সার্বিক বিষয় দেখেন শাহাদাৎ হোসেন সাজনু।
এ বিষয়ে জানতে সাজনুর মুঠো ফোনে একাধিবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি।