সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও টনক নড়েনি প্রশাসনের, নগরবাসীর ক্ষোভ

যুগের চিন্তা অনলাইন

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১২:৩৬ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার

# ডিসি ও এসপি বরাবর  ট্রাকের স্ট্যান্ড উচ্ছেদের জন্য স্থায়ীভাবে আদেশ প্রদান করে হাইকোর্ট


# অনেকে এরআগে ভাওতাবাজি করেছেন, এবার উচ্ছেদ করুন : এড.মাসুম


# আরো আগে থেকেই কাজ করা উচিৎ ছিলো : এড.এবি সিদ্দিক



হাইকোর্ট থেকে স্থায়ী নির্দেশনা আসার পরও শহরের নিতাইগঞ্জ থেকে মণ্ডলপাড়া পর্যন্ত সড়কের দুপাশে গড়ে উঠা অবৈধ ট্রাকের স্ট্যান্ডগুলো প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা। এতে এক দিকে যেমন আদালতের নির্দেশনা অমান্য করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কমছেনা। কারণ এই অবৈধ স্ট্যান্ডের জন্য নগর ভবন, ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল, মণ্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনসহ শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে।  

 


জানা গেছে, এই এলাকা থেকে সব ধরণের অবৈধ স্ট্যান্ড অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৬ সালে একটি রিট পিটিশনটি করেছিলেন নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদের আদেশ দেন। কিন্তু দেখা যায় এই আদেশের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার নিতাইগঞ্জ ও মণ্ডলপাড়া এলাকার ট্রাকের স্ট্যান্ডগুলো উচ্ছেদ করা হলেও, এরপর আবার অদৃশ্য শক্তির বলে সেখানে ট্রাকের স্ট্যান্ড গড়ে উঠে।

 


এদিকে গত ২ সেপ্টেম্বরও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একে.এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ সুপারকে এই ট্রাকের স্ট্যান্ড উচ্ছেদের জন্য স্থায়ীভাবে আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের কাছে এখনো এই আদেশের কপি এসে পৌঁছায়নি।

 


জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ‘হাইকোর্ট যেহেতু আদেশ দিয়েছে তাই সেই আদেশের কপি কোনো না কোনোভাবে অবশ্যই তাদের কাছে এসে পৌঁছানোর কথা। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি যে, নগরবাসীর স্বার্থে তারা যেনো এই বিষয়টিতে একটু নজর দেয়। কারণ এই অবৈধ স্ট্যান্ড না উচ্ছেদ করলে শহরের যানজট একটুও কমবেনা। তিনি আরো বলেন, এই ট্রাকের স্ট্যান্ড উচ্ছেদের বিষয়ে সেলিম ওসমান নিজেও একবার বলেছিলেন যে, তিনি এই সমস্যা সমাধান করে দিবেন। কিন্তু সেটা ছিলো তার একটি রাজনৈতিক ভাওতাবাজি! মূলত তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেনি।’  

 


সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও রফিউর রাব্বি বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে উচ্ছেদের স্থায়ী আদেশ আসার পরও যেহেতু প্রশাসন থেকে অবৈধ ট্রাকের স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদ করা হচ্ছেনা, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, প্রশাসন নিজেও দেশের আইনের তোয়াক্কা করেনা। তাছাড়া তারা এখানে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে আসেনি, এসেছে একটি নির্দিষ্ট মহলের প্রতিনিধিত্ব করতে। ফলে এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য।’

 

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক বলেন, ‘সরকারি অথোরিটির এই ট্রাকের স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদের জন্য আরো আগে থেকেই কাজ করা উচিৎ ছিলো। তাদের আদেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে কেন? কারণ একটি জিনিস তো স্পষ্টই যে, এর জন্য শহরময় যানজট তৈরি হয়। তাই প্রশাসনের তো নিজে থেকেই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কাজ করা প্রয়োজন।’