মায়াদ্বীপ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ সভা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৩৭ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২২ বুধবার
গতকাল ‘মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
সভায় বক্তারা
‘শিক্ষার আলো মাদকব্যবসায়ী বালুব্যবসায়ীদের জন্য হুমকি’
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের অবৈতনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান মানববন্ধনে উপস্থিত সংস্কৃতি কর্মী, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।
সংগঠনের সহসভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফউদ্দিন সবুজ, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জাহিদুল হক দিপু, প্রদীপ ঘোষ বাবু, সমগীতের সাবেক সভাপতি অমল আকাশ, নারী সংহতির সম্পাদক পপি রানী সরকার প্রমুখ। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ‘মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা’র প্রতিষ্ঠাতা কবি শাহেদ কায়েস। সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, দেশে এখন দুর্বৃত্ত রক্ষার রাজনীতি চলেছে সরকার দূর্বৃত্তদের উপর নির্ভর করে টিকে থাকার যে কৌশল প্রয়োগ করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখেছি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। সোনারগাঁয়ে যা ঘটছে এটি তারই এটি আলামত। একজন সরকারী দলের ওয়ার্ড সম্পাদকের নেতৃত্বে দীর্ঘ দুইজন রাতের অন্ধকারে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বাড়িতে হামলা চালায় আমরা বুঝতে পারি যদি সরকারী দল না হয় তাহলে এমন সাহস কখনো সে দেখাতে পারে না। সরকারী দলের হয়ে তারা মনে করছে তার পিছনে পুলিশ রয়েছে তার পিছনে প্রসাশন রয়েছে সরকার রয়েছে এবং তার যা ইচ্ছা তা করার একটি অনুমোদন রয়েছে, এই অনুমোদনের কারণে এখন যা তার ইচ্ছা তা করা এটা তার অধিকার রাতের অন্ধকারে একজন শিক্ষিকার বাড়িতে এভাবে হামলা করে তাকে তার মাকে, দুই ভাইকে, দেড়বছরের শিশুকে, এইভাবে আহত করার নজির আমাদের দেশে খুব কমই আছে। বিরুদ্ধ মতকে দমনের জন্য জনগনের জীবন দুর্ভিক্ষ হয়ে পরেছে। বিভিন্ন সময়ে এবং সোনারগাঁয়ের ঘটনা তার প্রমাণ ।
আমরা আজকের এ মানব বন্ধন থেকে দাবী করব যারা হামলা করেছে সরকার দলের যেই নেতার নেতৃত্বে ২০-২৫জন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে তাদের খুজেঁ বের করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তকমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে প্রসাশন রয়েছে পুলিশ রয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি এই মায়াদ্বীপের ঘটনায় উঠতে গেলে তারা সন্ত্রাসীদের চক্র অবলম্বলন করেছে । তারা স্কুল বন্ধ করে দিতে চায় কেন? এই স্কুলের মধ্যে দিয়ে এই দ্বীপে এই চরে সুবিধাবঞ্চিত যারা তারা শিক্ষা গ্রহন করে পথ তৈরি করবে, আলোর পথে তারা অগ্রসর হবে, এই সফলতা তারা চায় না। আমাদের ইতিহাসে আমরা বার বার দেখেছি চাষববত্তি প্রথম আঘাতটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হানে।
এটি আমাদের সমাজের চিত্র । যে যত বেশি জানে তত কম মানে। সরকারের কাছে দাবি জানাছি তারা এই দূর্বত্তদের এই মাফিয়াদের গ্রেফতার করে এই মায়াদ্বীপের সুবিধা বঞ্চিতদের স্কুল টিকিয়ে রাখার যথাযথ ব্যবস্থা করবেন। জেলা প্রসাসক নতুন নারায়ণগঞ্জে এসেছেন আমরা তাকে স্বাগত জানাই। ইতিপূর্বে অসংখ্য জেলা প্রসাশক নারায়ণগঞ্জে এসেছে এবং গেছেন তারা এই গডফাদারদের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। আমরা এমনটা এবার হবে না বলে আমরা আশা রাখতে চাই। তাই তার প্রতি আমরা আহ্বান জানাই আপনি এই ছোট মায়াদ্বীপের স্কুলটি রক্ষার জন্য এই দূর্বৃত্তদের গ্রেফতারের জন্য আপনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করুন। বক্তারা বলেন, সোনারগাঁয়ের মায়াদ্বীপ পাঠশালাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন কবি শাহেদ কায়েস।
এটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অবৈতনিক স্কুল। শিক্ষার আলো শিশুদের পর্যন্ত পৌঁছালে ওই এলাকার বালু সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য হুমকি। এই কারণে বারবার এই পাঠশালাটি বন্ধের অপপ্রয়াস চালিয়েছে সন্ত্রাসী মহল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ জানুয়ারি পাঠশালার প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার শিশু সন্তান, ভাইদের আহত করেছে। তারা আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটায়। কেননা তারা নিজেকে সবকিছুর উর্ধ্বে মনে করেন। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। শিক্ষকের বাড়িতে হামলার সাথে জড়িত আবুল হাশেম চিহ্নিত হুন্ডি ও মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষমতাসীন দলেরও নেতা। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাশেম তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারছে না। হামলার ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতারের দাবি জানান বক্তারা।