সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেখ রাসেল পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখল,বিব্রতকর অবস্থায় নারী-শিশু

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ পিএম, ২৭ জুন ২০২২ সোমবার

 

কোলাহলপূর্ণ যান্ত্রিক জীবনে নগরবাসীর মনে একটু প্রশান্তির ছোয়া দিতে নির্মানাধীন শেখ রাসেল পার্কের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। উদাসীনতার কারণে দৃষ্টিনন্দন এ পার্কটি এখন হকারদের দখলে। এদিকে, হকার উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

 

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে হাতিরঝিলের আদলে নির্মানাধীন শেখ রাসেল পার্কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে পরিত্যক্ত পুকুর খনন এবং জিমখানা বস্তি উচ্ছেদ করে শুরু হয় পার্কের নির্মাণ কাজ। নগরবাসীর কথা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের কথা চিন্তা করে, তাদের অবসর সময় কাটানোর লক্ষ্যে সকলের সাথে লড়াই করে পুনরায় শুরু করেন নির্মাণ কাজ।

 

তবে, নাসিক মেয়র আইভীর সেই আশায় গুড়েবালি। পার্কের রাস্তা-ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে হাটা-চলা করতে পারছেনা নারী-শিশুরা। ফলে নাসিকের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন পার্কটি উদ্বোধনের পূর্বেই তার গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে বলে মনে করছে নগরবাসী।  নগরবাসীর মতে, সিটি কর্পোরেশনের উদাসীনতার কারণে উদ্বোধনের পূর্বেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে পার্কটি। একবার যারা পার্কটিতে আসছেন, তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই ফিরছেন তারা সকলে। সঠিক তদারকি না করার কারণে নাসিকের আচরণে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ নগরবাসী।

 

এদিকে, গতকাল শনিবার ২৫ জুন কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় শেখ রাসেল পার্কেও আতশবাজিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিটি কর্পোরেশন। ফলে এদিন প্রচুর ভীড় ছিলো পার্কের চারপাশে। তবে, দৃষ্টিনন্দন এ আয়োজন উপভোগ করতে এসে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েন অনেকে।  সাইনবোর্ড এলাকা থেকে পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা এক নারী বলেন, ঢাকার রাস্তায় প্রচুর যানজট হয় বলে ঢাকার কোনো পার্কে না গিয়ে শেখ রাসেল পার্কে এসেছি একটু সময় কাটাতে।

 

কিন্তু এখানে এসেও চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে, পার্কের সামনেও প্রচুর যানজট ছিলো। মূলত পার্কের সামনের অবৈধ দোকানগুলোর কারণেই এ যানজট বলে জানান তিনি।  সৈয়দপুর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা এক নারী বলেন, জমকালো আতশবাজী দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে, পার্কের সামনে যেভাবে দোকান ও চেয়ার-টেবিল বসানো হয়েছে তাতে করে পার্কের পুরো অংশ ঘুরে দেখতে পারলাম না। স্বাচ্ছন্দ্যে হাটা-চলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে পার্ক দখলকারী এসব ব্যবসায়ীরা।

 

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিয়েই ব্যবসা চালাচ্ছে তারা। পুলিশকেও দিচ্ছে মাসোহারা। স্থানীয় গুন্ডা-পান্ডারা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে পার্কের রাস্তা-ফুটপাতের দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে বলেও জানায় তারা।

 

জনসাধারণের দাবী, এসব হকারদের উচ্ছেদ করে ফুটপাত উন্মুক্ত করে দেয়া হোক জনসাধারণের জন্য। তা নাহলে শত বাধা পেরিয়ে পার্ক নির্মাণে মেয়র আইভীর যে অর্জন তা ম্লান হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করেন তারা।

 

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পার্কের ফুটপাত ও রাস্তা দখলের বিষয়টি স্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন বলেন, বেশ কিছু অস্থায়ী দোকানপাট বসছে ওখানে, রাস্তার পাশে, লেকের ধারে। আমরা ওগুলো নিয়ে কথা বলছি এবং আমরা ব্যবস্থা নিবো। কিভাবে রাসেল পার্কের সৌন্দর্য্য বাড়ানো যায় তা নিয়ে নাসিক ভাবছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।এমই/জেসি