মৌমিতার কারণে ভোগান্তি চরমে
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৬:১২ পিএম, ৩০ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার
# ডিসি সাহেবের আসা যাওয়ার সময় রাস্তা খালি রাখতে বলা হয়েছে : সুপারভাইজার
# এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে : টিআই (এডমিন)
নারায়ণগঞ্জবাসী বর্তমান সময়ে যানজটে জর্জরিত। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট সমস্যায় অতিষ্ঠ শহরবাসী। যার জন্য শহরবাসী জোরালোভাবে দায়ী করছেন মৌমিতা নামক যানজট সৃষ্টিকারী একযান্ত্রিক দানবকে। বুধবার(২৯ জুন) সরজমিনে চাষাড়া মোড়, মেট্রোহল, খানপুর, রাইফেল ক্লাব এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মৌমিতা পরিবহনের একাধিক বাস প্রশাসনের উপস্থিতিতেই গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়েছে। কোনোটা আবার থেমে থেমে চলছে । যা সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী।
সিংহভাগ যানজট মূলত মৌমিতার এই বেপরোয়া আচরণ এর কারণেই ঘটছে। যানজটের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসী। এতে করে হাজার হাজার কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে সিরাজ নামের এক নগরবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খানপুর হাসপাতালের সামনে তারা অবৈধভাবে স্ট্যান্ড তৈরি করে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে যার কারণে মাঝে মাঝে এম্বুলেন্স যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে। তিনি এ নিয়ে প্রশাসনের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, কোন শক্তির প্রভাবে মৌমিতা শহরবাসীকে এভাবে ভোগান্তিতে ফেলছে। মৌমিতার কারণে ভোগান্তি চরমে এটা প্রকাশ্য হলেও কেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা । প্রশাসনের নিশ্চয়ই কোন দূর্বলতা আছে। তাদের এই দূর্বলতা ঘুচিয়ে শহরবাসীকে এই যানজট নামক নরকের হাত থেকে রক্ষার আহব্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে শহরের আরেক বাসিন্দা মো. ইয়াকুব মিয়া যুগের চিন্তাকে জানান, প্রতিদিন শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া গোলচত্ত্বরে কয়েকটি স্পটে একাধিক বাস দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রেখে যাত্রী উঠায় মৌমিতা। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর একটি বাস এসে যখন আরেকটির পিছনে দাঁড়ায় তখনই সামনে দাঁড়ানো বাসটি ঢাকার দিকে যাচ্ছে। তারপর আবারও পরবর্তী বাসটি দাঁড়িয়ে থাকে। এভাবে মৌমিতা বাসের একটি সারাক্ষণ দাঁড়িয়েই থাকে এখানে। শুধু যে সান্তনা মার্কেটের সামনে এমনটা নয়।
তারা খাজা মার্কেটের সামনেও একইভাবে দাঁড়িয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। রাইফেল ক্লাবের সামনেও তারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। শহরে যানজট সৃষ্টি ছাড়াও মৌমিতার বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, যত্রতত্র বাস পার্কিং, ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সাথে অসদাচরণ সহ অভিযোগের শেষ নেই। মৌমিতার চালকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। তাদের খামখেয়ালির জন্য ছোট বড় দুর্ঘটনাও বাড়ছে।
এ ব্যাপারে মৌমিতা বাস এর খানপুর স্ট্যান্ড এর সুপারভাইজার আলম জানান, এখানে যেনো আমাদের বাসের কারণে যানজট সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। এখানে আমাদের লোক রাখা আছে, তারা যানজট যেনো সৃষ্টি না হয় সে জন্য কাজ করছে। তিনি আরোও জানান, ডিসি অফিস থেকে আমাদের বলা হয়েছে ডিসি স্যার যখন বের হয় অর্থাৎ আমরা যেনো সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত এবং লাঞ্চের সময় অর্থাৎ একটা থেকে দুইটার সময় পর্যন্ত রাস্তাটা খালি রাখি । আমরা সেই কথা অনুযায়ী এই সময়ে রাস্তা খালি রাখি। তবে কি শুধু ডিসি স্যার এর জন্য রাস্তা খালি রাখলেই হবে? সাধারন জনগণের ভোগান্তির কি কোনো দাম নেই প্রশ্ন সুধীজনদের।
মৌমিতা বাসের এমডি কালু শেখ জানান, আমাদের মোট ১২৫টি বাসের রুট পারমিট নেয়া আছে তবে বর্তমানে আমাদের ৯৩টি বাস চালু আছে। তিনি আরোও জানান, আমাদের বাস এর কারণে শহরে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় তা আমরা গুরুত্বের সাথে দেখাশোনা করছি। মৌমিতার কারণে সৃষ্ট যানজট সমস্যার ব্যাপারে পুলিশের ট্রাফিক এডমিন এমএ করিম যুগের চিন্তাকে জানান, আমরা এ ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বের সাথে দেখছি। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সপ্তাহ আগেও বৈঠক হয়েছে। আবারও বৈঠক হবে। এ ব্যাপারে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। তিনি খুব শীঘ্রই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান এর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এন.এইচ/জেসি