কথা রাখেনি বিদ্যুৎ বিভাগ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৬:২৫ পিএম, ২১ জুলাই ২০২২ বৃহস্পতিবার
# এক ঘন্টার জায়গায় অধিক সময় লোডশেডিং
# বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার লোডশেডিং
# ভোগান্তিতে মানুষ
বিদ্যুত ও জ্বালানি সাশ্রয়ে দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের জালানি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। যা গত মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকায় এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার কথা রয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসি বিভিন্ন এলাকার লোডশেডিংয়ের সময়ও ইতোমধ্যে নির্ধারন করে দিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সেই সিদ্ধান্তের ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। কিন্তু তাদের সিদ্বান্তের বিষয়ে নগরবাসির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ করে নগরবাসি জানান, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা গুলোতে ১ ঘন্টা করে বিদ্যুৎ নেয়ার কথা থাকলেও তার চেয়ে বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকে না। কোন কোন এলাকায় ১ ঘন্টার জায়গায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন ছিল। আর এতে করে সচেতন মহল বলছেন নারায়ণগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের কথা রাখেননি। সিডিউল অনুযায়ী যখন বিদ্যুৎ যাওয়ার কথা তখন বিদ্যুৎ না গিয়ে অন্য সময় একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যায় বলে জানান নগরবাসি। আর এতে এক ধরণের ক্ষোভ প্রকাশ করে মানুষজন।
এদিকে কিন্তু নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশেই দিনভর লোডশেডিংয়ের কবলে নাজেহাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষজনকে। বেশিরভাগ জায়গাই দফায় দফায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুতহীন ছিল। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের বাজারের অস্থিরতার কারণে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চ মূল্যে কেনা বন্ধ রাখায় জ্বালানি সঙ্কটে বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখতে হচ্ছে বিদ্যুত উৎপাদন। এমন অবস্থায় প্রথমে বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে দাম বাড়ানোর চিন্তা করা হলেও ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে রেশনিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সঙ্কট কাটাতে প্রতিদিন এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিংসহ নেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত।
সোমবার সাম্প্রতিক জ্বালানি তেলের সঙ্কটে উদ্ভূত সমস্যা মোকাবেলায় এক জরুরী বৈঠক করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সভায় জানানো হয়, মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে দেশ। সরকারী-বেসরকারী অফিস ভার্চুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। ওই বৈঠকে দেশজুড়ে প্রতিদিন এলাকাভিত্তিক ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুধু তাই নয় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ডিজেলচালিত বিদ্যুতকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখা হবে পেট্রোল পাম্পও। রাত আটটার পর দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ না করলে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করা হবে। সরকারী অফিস আদালতের সভা-সেমিনার আবারও অনলাইনে করার চিন্তা-ভাবনাসহ অফিস সময় ১ থেকে ২ ঘণ্টা কমিয়ে আনার কথাও বলা হয়। শুধু তাই নয় মসজিদ-মন্দিরসহ সব ধরনের উপাসনালয়ে অপ্রয়োজনে এসির ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে শুধু নারয়ণগঞ্জ শহর নয়, জেলার বিভিন্ন স্থানেই দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার লোডশেডিং হয়েছে। এক ঘণ্টার বদলে ঘড়ির কাঁটায় সময় পৌঁছেছে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত। নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকা, মাসদাইর, টানবাজার এলাকা, নিতাইগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা সহ এলাকাসহ প্রায় সব জায়গায়ই দিনে তিন থেকে চারবার বিদ্যুত যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকার বাসিন্দা নাজমা রহমান অভিযোগ করে বলেন, সরকার তো কইছে বিদ্যুত যাইব এক ঘণ্টা। কিন্তু এ কি সকাল ১০ টায় গেল একবার, দুপুর দুইটার দিকে গেল আরেকবার, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গেল একবার। এমন হইলে ক্যামনে চলবে? এমনিতেই গরম তার ওপর এত লোডশেডিংয়ে থাকা সম্ভব?
একই অভিযোগ করেন থানা পুকুরপার এলাকার বাসিন্দা আলমগীর। তিনি বলেন, ভরদুপুরে তীব্র গরমে যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখনই লোডশেডিং। প্রায় এক ঘণ্টা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন। এক ঘণ্টা পর আসলেও আবার শেষ বিকেলে আধা ঘণ্টা যাবত লোডশেডিং। সাশ্রয়ের নামে যদি সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই হয় তাহলে কিভাবে সম্ভব?
তবে দোকানপাট সময়মতো অর্থাৎ সন্ধ্যা আটটার মধ্যে বন্ধ করতে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে দোকানপাটং সহ শপিংমলে রাত আটার মাঝে দোকান পার্ট বন্ধ না করায় বিভিন্ন শপিংমলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসন কর্তপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, জেলার মাঝে প্রায় লক্ষাধিক অটো ইজিবাইক, অটো রিকশার রয়েছে। যেখানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এই সকল অটোচার্জ দেয়া হয়। আর এতে করে রাস্ট্র রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন। এবিষয়ে নগরীর কিল্লারপুল ডিপিডিসি কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এমই/জেসি