লোডশেডিং-গ্যাস সংকটে চিন্তার ভাঁজ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:১৬ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২২ রোববার
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বাড়ায় আমদানি নির্ভর জ্বালানি ও গ্যাস সরবরাহ নিয়ে টালমাটাল গোটা দেশ। বৈশ্বিক এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি ব্যবহার কাটছাট করছে সরকার। সিদ্ধান্ত হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের, গ্যাস সরবরাহে করা হচ্ছে রেশনিং। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে শিল্পোৎপাদনে। শিল্পমালিকরা বলছে, গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ধস নামলে দেশের অর্থনীতি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে সরকারের কাছে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুতের নিশ্চয়তা চান তারা।
ব্যবসায়ী সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত নারায়ণগঞ্জে চলমান লোডশেডিংয়ের চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা গ্যাস সংকট নিয়ে। গ্যাসের এই সংকট মোকাবেলা করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চলমান লোডশেডিংয়ের প্রভাব সেভাবে উৎপাদনে প্রভাব না ফেললেও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এব্যাপারে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম যুগের চিন্তাকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে যে দুইঘন্টার লোডশেডিং করা হচ্ছে, তাতে উৎপাদন কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। কিন্তু আমরা ম্যানেজ করে নিচ্ছি। আমাদের বড় সমস্যা গ্যাসের সংকট। এটা এতো বড় সমস্যা যে দুই ঘন্টার লোডশেডিংও বড় কোন ব্যাপার না। গ্যাসের সংকট কোনভাবেই পূরণ করা যাচ্ছেনা।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দেখা যায় কোন কোন এলাকায় সারাদিনই গ্যাস থাকেনা, রাতে আসে। যেখানে আমাদের ১৫ পিএসআই গ্যাস পাওয়ার কথা, সেখানে গ্যাস সরবরাহ সর্বোচ্চ ১ কিংবা দেড় বা ২ পিএসআই।
সংকট নিরসনের ব্যাপারে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা গ্যাস সংকট নিরসনে তিতাস গ্যাস এবং পেট্রোবাংলা দুই প্রতিষ্ঠানকেই বলেছি। যদিও এই সমস্যাটি শুধু নারায়ণগঞ্জের নয়, এটিই আমাদের জন্য সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয়।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল যুগের চিন্তাকে বলেন, লোডশেডিংয়ে ব্যবসায় প্রভাব পড়লেও জাতীয় স্বার্থে আমাদের সিদ্ধান্ত তো মানতেই হবে। তবে উৎপাদন যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। লোডশেডিংয়ের এই সমস্যাটি সাময়িক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সায়েম প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাসান ইমাম যুগের চিন্তাকে বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকার লোডশেডিংয়ের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে সাধুবাদ জানাই। তবে দোকান মালিকরা রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে। করোনার ধকল এখনো উতরে যেতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
দুপুর ২টার পর থেকে দোকান চালানোর সিদ্ধান্ত দিলে ক্রেতা ও বিক্রেতা দুইপক্ষই সুফল পেত। প্রচণ্ড গরমে ক্রেতারা সন্ধ্যার আগে মার্কেটমুখী হননা। কিন্তু রাত আটটায় দোকান বন্ধ করার নির্দেশনা থাকায় ব্যবসায়ীরা দোকান খোলা রাখতে পারছেনা। দোকান খুললেই জরিমানা কিংবা তালা মেরে দেয়ার ঘটনা ঘটছে। আর তাই আমাদের প্রস্তাবনাটা বিবেচনায় নেয়ার জোর দাবি জানাই।এসএম/জেসি