নারায়ণগঞ্জেও ঘটতে পারে, চট্টগ্রামের মতো রেল ট্রাজেডি
আরিফ হোসেন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৫৭ পিএম, ১ আগস্ট ২০২২ সোমবার
বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি রেলওয়ে স্টেশন যা নারায়ণগঞ্জ শহর ও পাশ্ববর্তী এলাকাতে যাত্রী সেবা প্রদান করে।নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে জংশনটি ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের বিখ্যাত প্রাচীনতম রেল স্টেশন যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।বর্তমানে প্রায় ত্রিশ হাজারো বেশি যাত্রী নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীতে যাতায়াত করে।আর এই নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানী যাওয়ার পথে রেল ক্রসিং এর মোট ১২-১৩ টি গেট সরকারী ভাবে দেওয়া থাকলেও এই রুটে এর থেকে দ্বিগুন রাস্তা রয়েছে যার কোন রেলক্রসিং এর গেট নেই এবং গেটম্যান নেই।আর যার জন্য দেখা যায় বিভিন্ন সময় এই রেল ক্রসিং না থাকার কারনে প্রায় সময়ই ঘটছে রেল দূর্ঘটনা এমনকি রেল ক্রসিং এবং গেট ম্যান থাকা সত্তেও বিভিন্ন সময় দেখা যায় গেট ম্যান থাকেনা।
এমনি এক ঘটনা ঘটেছে চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ে গত শুক্রবার ২ টার দিকে বড়তাকিয়া রেল স্টেশনের উত্তরে একটি লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকার কারনে ট্রেনের সাথে মাইক্রবাসের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। এরই সূত্রপাতে দেখা যায় নারায়ণঞ্জেও ঘটতে পারে বড় ধরনের রেল দূর্ঘটনা।
এরই পেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেল বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তা থাকলেও সেখানে নেই কোন রেল ক্রসিং এবং নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য গেটম্যান। এমনি এক রাস্তা নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর যাওয়ার পথে পাগলা স্টেশনের একটু আগে নন্দলালপুরের একটি রাস্তা রয়েছে। আর এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। তবে এই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও নেই কোন রেলক্রসিং এবং গেটম্যান আর যার জন্য প্রতিনিয়তই হচ্ছে রেল দূর্ঘটনা।
গত বছর ফেব্রুয়ারীর ৪ তারিখে নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন এই নন্দলালপুরে অবৈধ রেলক্রসিংয়ে একটি মাইক্রবাসের সাথে ধাক্কা লাগে । দ্রুতগামী এই ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে উল্টে গিয়ে প্রায় চারশো ফুট দূরে গিয়ে পড়ে।তবে মাইক্রবাসটিতে তখন চালক ছাড়া কেউ ছিল না সেখানে মাইক্রোবাস চালক আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।আর নন্দলালপুরে প্রায় সময়ই ঘটে রেল দূর্ঘটনা।
আর সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল রেল আসলে গাড়ি থামানোর জন্য নেই রেল ক্রসিং ও গেটম্যান আর এতে করে দেখা গেল গাড়ি অবাদে চলছে কোন রকম বাধা ছাড়াই।এ বিষয়ে স্থানীয় এক পথচারী জানান ,এখানে প্রায় সময়ই ঘটে রেল দূর্ঘটনা ,আমরা চাই এখানে স্থায়ীভাবে একটি রেলক্রসিং ও গেটম্যান প্রয়োজন তা না হলে এই এলাকাতে রেল দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়।
কারন এখানে প্রতিদিনই কয়েক হাজার গাড়ি চলে।এর আগে একটি দূর্ঘটনার পর এলাকাবাসী ও স্থানীয় শিল্প কলকারখানার মালিকেরা একটি অবৈধভাবে রেলক্রসিং ও গেটম্যান রাখলেও সেটি এখন আর নেই। যার জন্য এই সড়কটি দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলাচল করে থাকে।আর আমি মনে করি এটার সমাধান যদি এখনই না করা হয় তাহলে চট্রগ্রামের মিসরাইয়ের মতো ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা।তাই রেল কতৃপক্ষের উচিৎ বৈধভাবে এই নন্দলালপুরে রেলক্রসিং করে দেওয়া।
এ বিষয় নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশনের মাস্টারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের এই নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর যাওয়ার জন্য রাস্তাতে মোট ১২-১৩ টি রেলক্রসিং আছে ,তবে তার থেকে বেশি অবৈধ রেল ক্রসিং রয়েছে। সরকারীভাবে নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এর থেকে বেশি রেলক্রসিং ও গেটম্যান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই যেই সকল এলাকাতে রেলক্রসিং নেই সেই সকল জায়গায় একটু গাড়িচালক ও পথচারীদের একটু সচেতন থাকতে হবে।তাহলে হয়তো দূর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে।এসএম/জেসি