‘বিআরটিএ না.গঞ্জের পরিবহন মালিকদের সাথে আঁতাত করে’
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:০০ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার
# ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাসভাড়া ৫০ টাকা করার দাবি
বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহবায়ক রফিউর রাব্বির সভাপত্বিতে ও সদস্য সচিব ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিকী, যাত্রী অধিকার ফোরামের সদস্য দুলাল সাহা, বাংলাদেশের ওর্য়াকাস পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হীমাংশু সাহা, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি নিখিল দাস, জেলা খেলা ঘরের সভাপতি রথিন চক্রবর্তী, নারী সংহতি জেলার সম্পাদক পপি রাণী সরকারসহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর গণপরিবহনের ভাড়া নিয়ে দেশে নতুন করে অস্থিরতা তৈরী হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সারা দেশে গণপরিবহনের ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও সে অস্থিরতা কাটেনি। যদিও বিআরটিএ যে হারে ভাড়া নির্ধারণ করে তা কখনোই জনগণের পক্ষে আসে না। সবসময়ই তাদের পক্ষপাত থাকে পরিবহন মালিকদের দিকে।
কিন্তু তার পরেও বিআরটিএ'র নির্ধারিত ভাড়াও পরিবহন মালিকরা মানেন না। নারায়ণগঞ্জে বাস ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি দীর্ঘদিনের। এখানে পরিবহন মালিকেরা গোষ্ঠী বিশেষের পক্ষ হয়ে সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো ভাড়া নির্ধারণ করে বছরের পর বছর নারায়ণগঞ্জের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে এখানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাসের ভাড়া কোন পরিবহনে ২০ টাকা, কোনটায় ১৫ টাকা করে বাড়িয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে থাকে। সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার সাথেও যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার অভ্যন্তরের ক্ষেত্রে বাস ও মিনিবাস ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করেছে প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ৪০ পয়সা।
এখানে পরিবহন মালিকরা প্রথম যে কারসাজি করে তা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব নিয়ে। নারায়ণগঞ্জের ১নং রেলগেটের বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা যেতে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। আর ঢাকা থেকে এখন সানার পাড় হয়ে নারায়ণগঞ্জ আসতে দূরত্ব ১ কিলোমিটার বেড়ে হয়েছে ১৯ কিলোমিটার (যা সাময়িক বৃদ্ধি)। গড়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব এখন সাড়ে ১৮ কিলোমিটার। নতুন নির্ধারিত ভাড়া হিসেবে ১৮.৫০ কিলোমিটার ২.৪০ টাকা হিসেবে ৪৪ টাকা ৪০ পয়সা। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল ৫ টাকা যুক্ত করে সর্বমোট ভাড়া দাঁড়ায় ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা।
তিনি দাবি করে বলেন, আমরা আজকে এ সম্মেলন থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাসভাড়া সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। আমরা জেলার আরটিসি'র চেয়ারম্যান হিসেবে জেলা প্রশাসককে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাস ভাড়া ৫০ টাকা ও জেলার সকল রুটের বাস ভাড়া সরকারি প্রজ্ঞাপনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণের জন্য দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি বাসের ভাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি।
পরিবহন সংকটের এই সময়ে হঠাৎ করেই নারায়ণগঞ্জে রেলের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে, যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সরকারী সংস্থা বিআরটিসি ও রেল কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে স্থানীয় পরিবহন মালিকদের সাথে আঁতাত করে সরকারী এ গণপরিবহনকে লোকসানে ফেলেছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর উপর পরিবহন মালিকদের সেচ্ছাচারিতা কোন ভাবেই মানা হবে না। দ্রুত এ সংকটের সমাধান না হলে উদ্ভূত সকল পরিস্থিতির জন্য সরকার ও প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আমরা অতি শীঘ্রই রেল কর্তৃপক্ষের সাথে বসবো। জনস্বার্থে তাদের সাথে আলাপ করবো। তাছাড়া জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলবো ভাড়া কমানোর বিষয়ে। আমাদের এই যৌক্তিক দাবি, যদি মানা না হয়। তাহলে মানানোর জন্য যা যা করা লাগে প্রয়োজনে সব করবো। আমার কাছে মনে হয় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জের পরিবহন মালিকদের সাথে আঁতাত করে বিভিন্ন কার্যক্রম করে।’ এন.এইচ/জেসি