শিশু ধর্ষণ: ক্লু-লেস মামলার আসামি খালেক গ্রেপ্তার
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
দিনমজুর সেজে শিশু (৮) ধর্ষণ মামলার আসামী আ.খালেক (৩৫) নামের এক ব্য্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রূপগঞ্জের ইসলামবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে খালেক। এসময় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আ. খালেক রূপগঞ্জ থানার ইসলামবাগ এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তার বেপারীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের উপÍপুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ, আইসিটি এন্ড মিডিয়া) হাফিজুর রহমান। পুলিশ জানায়, আসামি আ. খালেকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও ধর্ষণ এবং মাদকের একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে। ঘটনাস্থলের পাশেই তার শশুর বাড়ি; শশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে সে শিশুটিকে ধর্ষণের মত জঘণ্য অপরাধ করেছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় শ্রেণীর বাৎসরিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ভুক্তভোগী ওই শিশু বেড়াতে এসেছিল মামা বাড়িতে। সন্ধ্যার সময় মামির অনুরোধে পাশের দোকান থেকে শুকনা মরিচ কিনতে সমবয়সী মামাত বোনের সাথে গিয়েছিল সে।
ওই সময় সেখানে দেখা হয় এক অপরিচিত মধ্যবয়সী পুরুষের (আ.খালেক) সাথে। সে জিজ্ঞেস করে জনৈক রবিনের(ছদ্দনাম) বাড়ী চিনে কিনা। সাথে থাকা মামাত বোন চিনে বলে জানালে তাদের দু’জনকে বলে বাড়িটি দেখিয়ে দিতে।
তারা ওই ব্যাক্তিকে (আ. ৎখালেক) সাথে নিয়ে রবিনের বাড়ির সামনে যায়। সেখানে গিয়ে ওই ব্যাক্তি নতুন কৌশলে মামাত বোনকে বলে তুমি আগে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখো পূর্ব পাশের ফ্লাটের দরজা খোলা আছে কিনা। সরল সহজ শিশুটি চলে যায় দ্বিতীয় তলায়।
এ সুযোগে সে ভুক্তভোগী শিশুর মুখ চেপে জোর করে পাশের বাড়ির বসত ঘরের পিছনে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে রক্তাক্ত অবস্থায় ভয়Íভীতি দেখিয়ে ফেলে চলে যায়। এসময় শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকে সেখানে।
অপরদিকে মামাত বোন এসে আদুরী এবং অপরিচিত সেই ব্যক্তিকে দেখতে না পেয়ে দৌঁড়ে বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনদের জানায়। এরপর খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া যায় অনেকটা জ্ঞানহীন অবস্থায়।
দ্রুত নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সিসিইউতে। তিন মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ, আইসিইউ এবং কেবিনে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কেটেছে সময়। চার ব্যাগ রক্ত লেগেছিল রক্ত শূণ্যতা কাটাতে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় থানায় মামলা হয় অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে। কিন্তু অনেক তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েও ঘটনার রহস্য এবং আসামী সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষে মামলা চলে আসে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে।
ডিবির চৌকস অফিসার এসআই মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান তদন্তভার গ্রহণ করে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে শনাক্ত করেন মূল আসামীকে। ছদ্দবেশে দিন মজুরের বেশে কৌশল অবলম্বন করে ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে আসামী আ. খালেক’কে (৩৫) গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
জেলা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ, আইসিটি এন্ড মিডিয়া) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আসামি আ. খালেককে তার নিজ গ্রামের বাড়ি রূপগঞ্জের ইসলামবাগ এলাকার একটি মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে উঠায় পুলিশ। বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে খালেক। এসময় বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এন.এইচ/জেসি