সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে শীতলক্ষ্যা পারাপারে ভোগান্তি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:০৭ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২২ মঙ্গলবার


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব পড়েছে নারায়ণগঞ্জেও। দিনব্যাপী গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদী পারাপারে দুইপাড়ের বাসিন্দাদের ভোগান্তি অনেক বেড়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে জবুথুবু অবস্থায় নদী পার হচ্ছেন মানুষজন।

 

 

সেই সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নৌকা ও ট্রলারযোগে নদী পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা। যদিও জরুরি কাজ ছাড়া কেউ নদী পার হচ্ছেন না। অনেককে আবার জীবিকার তাগিদে নদী পার হতে হচ্ছে। আর যারাই নদী পার হচ্ছেন তাদের এই অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নারায়ণঞ্জ সদর ও বন্দরের বাসিন্দাদের আলাদা করেছে এই শীতলক্ষ্যা নদী।

 

 

প্রতিদিন লাখো মানুষকে শীতলক্ষ্যা নদীর এপাড় থেকে ওপাড়ে যাতায়াত করতে হয়। আর তাদের যাতায়াতের মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। আর যেদিন প্রতিকূল পরিস্থিতি তথা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকে সেদিন এই যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হয় এই লাখো মানুষকে। বন্দরের বাসিন্দা আরিফ বলেন, আমি শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকার একটি হোসিয়ারিতে চাকরি করি। সে কারণে প্রতিদিনই নদী পারাপার হতে হয়।

 

 

কোনোদিন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি থাকলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। যেমন আজ ঝুঁকি নিয়েই নদী পারাপার হতে হচ্ছে। যদি এপাড় না আসি তাহলে আবার চাকরি থাকবে না। আরাফাত নামে নৌকার আরেক যাত্রী বলেন, আমি কোর্টে চাকরি করি। যার কারণে সপ্তাহে পাঁচদিন শহরে আসতে হয়। আজকে বৃষ্টির কারণে অনেক ভোগান্তি নিয়ে নদী পার হতে হয়েছে।

 

 

নদী পার হতে গিয়ে পুরো শরীর ভিজে গেছে। সেই সঙ্গে ঝুঁকি তো রয়েছেই। নৌকা চালক কামাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক কষ্ট করে নদী পার হতে হয়। যারা উঠতে চায় তাদের নিয়ে নদী পার হই। যারা নদী পার হয় তাদেরও যেমন প্রয়োজন তেমনি আমারও একদিন নৌকা না চালালে ঘরে ভাত জুটবে না। তাই কষ্ট করে হলেও নৌকা চালাতে হয়।

 

 

নারায়ণগঞ্জ সেন্ট্রাল ঘাটের ইনচার্জ রিয়েল বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হয়নি। যার কারণে আমাদের যাত্রী সংখ্যাও কমে গেছে। সারাদিনই যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে সেই হিসেবে নদী পারাপারে মানুষের ভোগান্তি থাকাটাই স্বাভাবিক।

 

 

তিনি আরও বলেন, এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখানে তো আসলে কারও হাত নেই। সবাইকে মেনে নিতে হবে। এদিকে, বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সোমবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে পাঁচটি রুটে চলাচলরত সবগুলো লঞ্চ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব লঞ্চ বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। সেজন্য সতকর্তামূলকভাবে আপাতত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।