সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফতুল্লার জলাবদ্ধতা যেন এলাকাবাসীর কান্না

যুুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৬:৫২ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার



নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হিসেবে বহুল পরিচিত। এসব শিল্প কারখানার অধিকাংশ ই ফতুল্লা ইউনিয়ন এ অবস্থিত। এসব কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে লাখ লাখ মানুষ যারা মুলত অনুন্নত গ্রাম থেকে আগত। তারা জীবিকার তাগিদে একটু উন্নত জীবন যাপনের আশায় শহরমুখী হয়ে বিভিন্ন গার্মেন্টস ও শীল্প কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।

 

 

স্বল্প বেতনের চাকরী করে এসব খেটে খাওয়া মানুষ কোনো রকমে দিন পার করছে। তাদের অবস্থা হয়েছে এতটাই করুন যে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। মৌলিক চাহিদা পুরন করতে তারা চরম ভাবে ব্যার্থ। এমন শোচনীয় ভাবে দিন পার করার পর ও বিধাতা যেনো তাদের কষ্টের ইতি টানার পরিবর্তে কষ্ট আরও বহুগুন বাড়িয়ে দেয় বৃষ্টি দিয়ে।

 

 

যেখানে অন্যান্য অঞ্চল বৃষ্টি আসলে খিচুরি নিয়ে মাতে সেখানে এই অঞ্চলের মানুষের কপালে দেখা যায় চিন্তার ভাঁজ। শ্রমিকরা চিন্তা করে কাল কিভাবে তারা কাজে যাবে। কারন সামান্য বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় হাটু সমান পানি। যা কয়েকদিন পর্যন্ত থাকে। দোকানিরা চিন্তা করে দোকানের পন্য ভিজে গেলো কিনা। বাসার নিচতলার ভাড়াটিয়ারা চিন্তায় থাকেন বাসায় পানি উঠে গেলো কিনা।

 

 

দিনমজুর চিন্তা করেন কাল কিভাবে কাজে বের হবে। কারন কাজ না করলে তার চুলা জ্বলবে না। মোটকথা ফতুল্লার অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে মনে হয় এ যেনো জনপ্রতিনিধিহীন, জনমানবহীন কোনো ভুতুরে জনপদ। অথচ এ অঞ্চলেই লাখ লাখ মানুষের বাস। এ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার পানি যেনো এই অঞ্চলের মানুষের কান্না। এ কান্না অনেক আগেই শুরু হয়েছে। এর শেষ কবে জানেনা কেউ।

 

 

রহিমা বানু নামক এক গার্মেন্টসকর্মী জানান, উন্নত জীবনের আশায় নারায়ণগঞ্জ এসেছিলাম। একটা ছেলে আছে। স্বামী মারা গেছে। তার ভরন পোষণ এর জন্য কাজ করি। কিন্তু এই এলাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে বিপাকে আছি। ময়লা পানির মাঝেই থাকতে হয়। এর মধ্যে দিয়েই কাজে আসতে হয়। পানি এতটাই ময়লা যে পায়ে ঘা দেখা দিয়েছে। এর জন্য মেডিসিন খেতে হয়।

 

 

কিন্তু তাও এমন বিষাক্ত পানির মধ্যে দিয়েই কাজে যেতে হয়। কাজ না করলে সংসার চলবে না। লালপুর, কোতালেরবাগ, টাগারপার এলাকার কয়েকটি কারখানার মালিকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ফতুল্লার এই জলাব্ধতার কারনে তারা অতিষ্ঠ। পানির কারনে শ্রমিকরা আসতে পারেনা অনেকেই এর জন্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে। তারা এর স্থায়ী সমাধান আশা করেন।

 

 

ফতুল্লার জলাবদ্ধতার বিষয়ে বিএনপির ও অন্যন্য দলের নেতাকর্মীরা এর জন্য দায়ী করছেন ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধিদের। তাদের ভাষ্যমতে বিরোধীদলের সাথে না খেলে জদি তাদের নির্বাচনী এলাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করে, তাহলে জনগন এর সুফল পাবে। তারা আরও জানায়, উন্নয়ন এর জন্য বরাদ্দ ঠিক ই হয় কিন্তু সুষম বন্টনের অভাবে কাজ হয় না।

 

 

ফতুল্লা ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার এর সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তার ব্যস্ততার কারনে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তবে চেয়ারম্যান স্বপন এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে ফতুল্লার এই জলাবদ্ধতা কবে নাগাদ শেষ হবে তার দিকে চেয়ে আছে এই অঞ্চলের মানুষ। তারা এর দ্রুত সমাধান প্রত্যাশা করেন