সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কমতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজির দাম

আবু সুফিয়ান

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪১ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার

 

# কাঁচা মরিচের ঝাঁজ বেড়েছে তিন গুণ।

 

নারায়ণগঞ্জে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে অন্য সবজিরও দাম। ফলে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। আর এক সপ্তাহ পর আরও দাম কমবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের দিগুবাবুর বাজারের বিক্রেতারা। নারায়ণগঞ্জের খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। ক্রেতা বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট শহরের সব পাইকারি সবজি বাজার। শীতকালীন সবজিতে বাজার এখন ভরপুর। এসব সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দামও।

 

ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম,মুলা, গাজর, টমেটোসহ সব ধরনের সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালে রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের চেয়ে সবজি ভেদে কেজি প্রতি ২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আজ বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের দিগুবাবুর বাজারে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি কমেছে শিমের বাজার। দিগুবাবুর বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। ফুলকপি এবং বাঁধাকপি সাইজ ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

 

এছাড়া মিষ্টি আলু ৬০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০ টাকা, লম্বা বেগুন ২০ টাকা, গোল বেগুন ২০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, শসা ৪০ টাকা। এদিকে পাঁচ কেজি দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। পাঁচ কেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আর রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১০০ টাকা, আদা কেজি প্রতি ১০০ টাকা।

 

সবজি ক্রেতা মিলন জানান, শীতের সবজির ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। বাজারেও শীতের সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম। কয়েক দিন আগে সবজির দাম আকাশছোঁয়া ছিল। আজ বাজারে এসে দেখি দাম কিছুটা কমেছে তাই একটু বেশি করেই সবজি কিনলাম। তিনি আরও বলেন, আজ বাজারে দেখলাম সব ধরনের সবজির সরবরাহ রয়েছে কিন্তু দাম সে হিসেবে আরো কমার দরকার ছিল।

 

দ্বিগুবাবুর বাজারের সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, পাইকারি বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। আর কিছুদিন গেলে আরও দাম কমবে বলে তিনি জানান। শহরের পাইকারি বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের চেয়ে অধিকাংশ সবজির দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সবজি ক্রেতা কলিমুদ্দিন জানান, শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি আর শিম। শীতকালীন এই সবজিগুলো দিয়ে কাঁচাবাজার ভরপুর থাকে। দাম চলে আসে একেবারে হাতের নাগালে। দাম এতটাই কমে আসে যে মানুষ নিজেরা খাবার পাশাপাশি গরু ছাগলকেও কেউ কেউ সেই খাবারগুলো খেতে দেয়। কারণ দাম থাকে একেবারে স্বাভাবিক।

 

কিন্তু এ বছর দাম কমেনি এই শীতকালীন সবজিগুলোর। তিনি আরো বলেন, এখনো এক একটা ফুলকপি বা বাঁধাকপি কিনতে ৩০ টাকার উপরে কিনতে হয়। অথচ এই সময় এই ফুলকপি আর বাঁধাকপির দাম থাকা উচিত ছিল সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস। শেষে তিনি বলেন, শিমের দাম কিছুটা কমে গেলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়। বাজারে সব ধরনের সবজির সরবরাহ আছে তারপরেও সবজির দাম কমছে না। ভরা মৌসুমেও দাম না কমায় অসন্তোষ ক্রেতাদের মাঝে।

 

বিক্রেতারা বলছেন, এখনও পুরোদমে শীতকালীন সবজির সরবরাহ শুরু হয়নি। আরও কিছুদিন পর আমদানি বাড়ার সঙ্গে দামও কমে যাবে। শহরের দ্বিগুবাবুর বাজার সহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে তিনগুণ। আজ কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। যা কয়েকদিনের ব্যবধানে বেড়েছে তিন গুণ। হঠাৎ বেড়ে যাওয়া কাঁচ মরিচের দামে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে ক্রেতারা। এখন এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনতে ক্রেতাদের ১৫ টাকা গুনতে হচ্ছে।

 

গত কয়েকদিন আগে এক পোয়া কাঁচা মরিচের দাম ১০ টাকা ছিল। কাঁচা মরিচের দামের বিষয়ে শহরের কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন কারণে বাজারে সরবরাহ কমেছে মরিচের। যার প্রভাব দাম বেশি দেখা যাচ্ছে। সবজি ক্রেতা আকমল জানান, হঠাৎ কয়েক দিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা। জানা গেছে, কয়েক দিন আগেও শহরে খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২০ টাকা।

 

আমদানি কারক সূত্রে জানা যায়, বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমার কারণেই দাম বেড়েছে। তারা বলেন, বর্তমানে আমাদের বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমদানিকারক আফজাল বলেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে এলে দাম কমে আসবে। কয়েকজন ক্রেতা বলেছেন, খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কম। তবে অনেক নিত্যপণ্যের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে আমনের নতুন ধান বাজারে এলেও চালের দাম না কমায় অস্বস্তির কথা বলছেন ভোক্তারা।

এস.এ/জেসি