ফাউন্ডেশনকে ইট পাথরের খাঁচায় বন্দী না করে উন্নত করতে হবে: কাদের
সোনারগাঁ প্রতিনিধি
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১২:২৭ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার
# অসুস্থ রাজনীতি করতে গিয়ে মির্জা ফখরুলরাও আজ অসুস্থ হয়ে গেছে
সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ডিজিটালের ছোঁয়ায় স্মার্ট যাদুঘর না করে এটাকে ইট পাথরে খাঁচায় বন্দী না করার আহবান। আগের যে ঐতিহ্য রয়েছে, তা ঠিক রেখেই আমাদেরকে স্মাট ভাবে এই বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সোনারগাঁ জাদুঘরকে উন্নত করতে হবে। আমি বড় ভুল করেছি কুষ্টিয়ার লালন শাহার সমাধি ইট পাথরের খাঁচায় বন্দী করে দিয়ে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ঘিরে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। যাতে বর্তমান প্রজন্ম বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি জানতে পারে।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লোকজ মঞ্চে মাসব্যাপী মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন কালে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার ও জানমাল রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি-জামাত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী নয়। তারা দেশের জনগণের জানমালের ক্ষতি করলে আমরা এর সমচীত জবাব দিব।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘অসুস্থ রাজনীতি করতে গিয়ে মির্জা ফখরুলরাও আজ অসুস্থ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব হাসপাতালে যায়, মির্জা আব্বাস এখনো হাসপাতালে। এ অসুস্থতা রাজনৈতিক অসুস্থতা নয়। কেনো আন্দোলনের ডাক দিয়ে হঠাৎ হাসপাতালে চলে যায়। অসুস্থ রাজনীতি করতে করতে ফখরুল সাহেবরা আজ অসুস্থ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শান্তি চাই। আমরা ক্ষমতায় আছি কোনো অশান্তি চাই না। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আমরা বিএনপির সাথে পাল্টাপাল্টিতে নেই। আমরা শান্তি সমাবেশ করছি। তারা উস্কানি দিচ্ছে সংঘাতের, সহিংসতার ও ভাঙচুরের। তারা পুলিশের উপর নিত্য এ কাজগুলো করতে চায়। তারা যদি এগুলো করতে চায় আমাদের সমুচিত জবাব দিতে হবে।
কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত যারা দেশের জনগনের জানমালের নিরাপত্তা বিঘিন্ত, আগুন সন্ত্রাস ও ভাঙচুর করতে আসবে আন্দোলনের নামে তাদের সমুচিত জবাব দিতে হবে। এখানে কোনো আপোস নেই। যারা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে আমরা তাদের প্রতিরোধ করবো।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থান আপনারা আজ পযর্ন্ত নেন নাই। আমরা উস্কানি দিবো না। আপনারাই কিন্তু উস্কানি দিচ্ছেন। এ উস্কানীমূলক তৎপরতা বন্ধ করুন। তা না হলে দেশের জনগন আপনাদের প্রতিরোধ করবে।
মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য গাজীপুর -৪ আসনের সংসদ সদস্য বেগম সিমিন হোসেন রিমি এমপি, নেত্রকোনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মুনসুর, শিল্পী হাসেম খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হাসনাত সহিদ মোহাম্মদ বাদল, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ান উল ইসলাম, উপজেলা সহকারি ভূমি মোঃ ইব্রাহীম মিয়া, সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মাহবুবুর আলম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওসমান গণি।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, যুবলীগ সাধারন স¤পাদক আলী হায়দার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সি, আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম মাসুদ দুলাল, বারদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল, নাসরিন সুলতানা ঝরা ও ছগির আহাম্মেদ প্রমুখ।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে থাকে। এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনীর জন্য ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন।
এ বছর সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য ও জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী প্রদর্শন করা হবে। দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্ত প্রায় গ্রামীণ খেলা, কর্মরত কারুশিল্পীদের কারু পন্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। মাসব্যাপী লোকজ উৎসব ও মেলা ১৮ জানুয়ারী থেকে আগামী ১৬ ফেব্রয়ারী পর্যন্ত চলবে। এন.এইচ/জেসি