বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিও’র সিন্ডিকেট এর কারণে নিতাইগঞ্জে পাইকারি বাজার এখন ধ্বংসের পথে

স্টাফ রিপোর্টার

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪৯ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

 

# বিনা চালানে লাভের জন্য ডিও’র কাগজ পকেটে পকেটে রেখে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে : আব্দুল কাদির

 

নিতাইগঞ্জের পাইকারি বাজার এখন ধ্বংসের পথে। দিন যত যাচ্ছে এই পাইকারি বাজারটি ততই ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ মেইল কারখানা। এক সময় দৈনিক এই বাজারটিতে ২০০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও এখন এটা ১০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে।

 

 

বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান বা বড় কোম্পানিগুলো এখন আটা-ময়দা, চাল, ডাল, লবণ, চিনি, তেল সহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায় চলে এসেছে। এ কারনে বড় কোম্পানি গুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করার মতো সাহস পাচ্ছে না নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।

 

 

তাই তারা বড় কোম্পানির মালামাল গুলোই ডিলার এর মাধ্যমে কিনে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে রেখেছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্স করে সেই কোম্পানির পণ্য গুলো ডিওর মাধ্যমে কিনে রাখছেন।

 

 

প্রতিদিন এক এক পণ্যের ডিও ১০-১২টি করে বিক্রি হলেও পণ্য বাজারে পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে নিতাইগঞ্জ খুচরা ও পাইকারী বহুমূখী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদির জানান, বর্তমানে নিতাইগঞ্জে কেউ নিজে ডিও কিনে ব্যবসা করে, আবার কেউ শুধু ডিওর বেচাকেনা করেন।

 

 

অনেকেই দোকান ছেড়ে ডিওর ব্যবসায় চলে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে ডিও বেচাকেনায় নগদ টাকা পাওয়া যায়। নিতাইগঞ্জে ৬০% ব্যবসায়ী এখন ডিওর লেনদেন করেন কিন্তু তারা বাজারে পণ্য আনে না। তাদের কাজই ডিওর কাগজটি হাত বদল করে দাম বৃদ্ধি করা। আরও ৩০%-৪০% ব্যবসায়ী ডিও কিনে পণ্য এনে বাজারে বিক্রি করেন।

 

 

খুচরা ব্যবসায়ীরা ৪-৫টা ডিও কিনে দোকানে উঠিয়ে মাল বিক্রি করেন, আর যাদের একটু অর্থ বেশি তারা ২০থেকে ৩০টি ডিও কিনে রেখে দেন, সেই সকল ডিওর দাম বাড়লে তারা বিক্রি করেন। অল্প টাকার ডিওর কাগজ কিছু ব্যবসায়ীরা পকেটে পকেটে রেখে দাম বৃদ্ধি করে। আর সেই হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো পায়।

 

 

সরকারি নিয়ম ১৫দিনে মধ্যে ডিও বিক্রি করতে হবে, কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী বিনা চালানে লাভ করার জন্য ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ডিওর কাগজ পকেটে রাখে দাম বৃদ্ধি করা জন্য।

 

 

তিনি আরও জানান, ১৫ দিনের মধ্যে যদি ডিওর পণ্য বাজারে আসে তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাবে না। আমি চাই কোম্পানির ডিও গুলো যাতে ১৫ দিনের মধ্যে বাজারে আসে।

 

 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী জানান, নিতাইগঞ্জে এখন সবাই ডিওর ব্যবসা করে, ডিও হচ্ছে এক ধরনের জুয়া। পকেটে কাগজ রেখে দাম বৃদ্ধি করে। সকালে এক মূল্য দুপুরে আরেক মূল্য বিকেলে আরেক মূল্য। এই ডিও বেচাকেনার ব্যবসাটি নিতাইগঞ্জ ডাউলপট্টি এলাকায় গোপিনাথ ভান্ডারের সামনে চলে।

 

 

এদের মধ্যে রয়েছে গোপিনাথ ভান্ডারের বড় ভাই নারু ও তার ছোট ভাই সঞ্চয়, মোক্তার সরদার, হোসেন, বিপ্লব, জামান সহ আরও কয়েকজন। তারা প্রতিদিন সিন্ডিকেট করে এই ডিও ব্যবসাটি পরিচালনা করেন। তাদের এই সিন্ডিকেট এর কারণে কোটি কোটি টাকা হাতিনে নিচ্ছে বড় বড় কোম্পানি গুলো।

 

 

ডিওর সিন্ডিকেট এর কারনে প্রতিদিন বাজারগুলোতে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সকল সিন্ডিকেট বন্ধ করলে দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই প্রশাসন এই সকল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অতি তারাতারি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।