পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বখাটেদের আড্ডা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:০৯ এএম, ৯ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার
# প্রতিদিনই ইভটিজিংয়ের শিকার স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা
# রেগুলার ফোর্স পাঠানোর মত লোকবল নেই : ওসি ফতুল্লা
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কুতুবপুরে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশপাশে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে বখাটেদের আড্ডা। স্কুল- শুরু কিংবা ছুটির সময় ছাত্রীদের প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে এই সকল বখাটেরা। এদের অনেকেই মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রির সাথে জড়িত।
এদের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেক ছাত্রীর পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ছাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়েছে । উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। তারা বখাটেদের উৎপাত রোধে স্কুলের সামনে টহল পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কুতুবপুরে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়টি একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বখাটেদের উৎপাতে পড়ালেখার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রবেশ ফটকের সামনে ও আশেপাশে ছোট ছোট দলে আড্ডা দিচ্ছে কিশোর বয়সী ছেলেরা।
ছাত্রীরা আসা মাত্রই তাদের লক্ষ্য করে নানা রকম মন্তব্য ছুড়ে দেয়। মেয়েরা মাথা নিচু করে বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে। দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, বাইরের ছেলেরা বিদ্যালয়ের আশপাশে আড্ডা দিয়ে থাকে। তাদের বেশি কিছু বলা যায় না। বলতে গেলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে তেড়ে আসে তাই তাদের ভয়ে কিছু বলতেও পারিনা।
এলাকার অনেকেই জানান স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে আড্ডা দিচ্ছিল বেশ কয়েক জন কিশোর ও যুবক। আড্ডা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিভিন্ন নানান রকমের অজুহাত দিয়ে কেটে পড়ে । স্কুল- ছুটির পর মেয়েদেরকে বাসায় নিতে আসেন অনেক অভিভাবক। তারা এ জানান,প্রতিদিন সকাল বিকাল প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বসে বখাটেদের আড্ডা।
এ কারণে আমরা মেয়েদের একা স্কুলে পাঠাতে সাহস পাই না। বখাটেরা প্রথমে মেয়েদের প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলেও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে থাকে। এমনকি তাদের কেউ কেউ মেয়েদের হাত ধরে টানাটানিও করে থাকে। স্কুল-কলেজের সামনে টহল পুলিশের ব্যবস্থা করলে বখাটেদের উৎপাত কমবে বলে তারা জানান। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে এমনটাই মনে করেন অভিভাবকরা।
অন্যদিকে অভিভাবক বিলকিস বানু বেগম জানান, বখাটেদের উৎপাতের কারণে দশম শ্রেনীতে ওঠার পর বড় মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ছে তাকেও প্রতিদিন স্কুল নিয়ে আসি এবং ছুটি হলে নিজে এসে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে যাই।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তারা। কিন্তু বাইরের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাদের নেই। এক্ষেত্রে বখাটেদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
এই বিষয়ে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রোজেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, “আমি স্কুলের সামনের রাস্তাটিতে সিভিল ড্রেসে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করার জন্য বলেছিলাম কিন্তু একদিন কল দেয়ার পর তারা আর আসেনি কেন এটা আমি জানিনা।”
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ রিজাউল হক দিপুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “একটা স্কুলের সামনে রেগুলার ফোর্স পাঠানোর মত লোকবল আমাদের নেই। আর উনি কি করেন শুধু প্রতিদিন ফোন করেন, উনার কোন দায়িত্ব নেই।” এন.হুসেইন/জেসি