না.গঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনে সেফটি কোডের বালাই নেই
আবু সুফিয়ান
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:১৭ পিএম, ১০ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার
# মৃত্যু ঝুঁকিতে নির্মাণ শ্রমিকসহ পথচারীরা
বহুতল ভবন নির্মাণে যেসব সেফটি কোড আছে তার অধিকাংশই মানছে না নারায়ণগঞ্জের বেশির ভাগ ভবন মালিক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে করে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন বিল্ডিং নেট দিয়ে ঢেকে দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।
নিয়ম অনুসারে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের চারপাশে ”সেফটি ফাস্ট” লেখা বাউন্ডারি রাখার কথা থাকলেও এই ধরনের কোন কিছুর বাস্তবায়ন করছে না নারায়ণগঞ্জের ভবন মালিক এবং ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। নারায়ণগঞ্জের বেশির ভাগ ভবন মালিক এবং নির্মাণ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মানে সেফটি কোড-এর ব্যাপারে উদাসীন।
আর এই ধরনের চিত্র নারায়ণগঞ্জের বেশির ভাগ নির্মাণাধীন ভবনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। চলাচলের রাস্তার পাশে নির্মাণাধীন ভবনে পথচারীদের জন্য সামান্য নিরাপত্তার কথাও চিন্তা করা হয় না। যার কারনে ভবনের নির্মাণ শ্রমিক সহ পথচারীদের থাকে জীবনের ঝঁকি। শুধু কি তাই নারায়ণগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবন থেকে নির্মাণ উপকরণ পরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসিন্দা মো. সাইফ উদ্দিন জানান, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের মিশনপাড়া এলাকায় জাহানারা বেগম নামের ৫০ বছর বয়সের এক নারী মারা যান। ঐ সময়ের দৈনিক পত্রিকা থেকে জানা যায়, মো. তোতা মিয়া নামের এক ব্যক্তির নির্মাণাধিন ভবনের ১১ তলা থেকে শাবল পরে ঔ নারীর মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, এ রকম আরো অনেক ঘটনা আমাদের নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার নির্মাণাধীন ভবনে ঘটে থাকে। শেষে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনা গুলো ঘটে ভবন মালিক এবং ভবন নির্মাণের ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে ; তারা সব সময় নির্মাণ শ্রমিক এবং পথচারীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদাসীন।
এই ধরনের একটি ভবনের দেখা পাওয়া যায় শহরের জামতলার হীরা কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন এলাকায়। নির্মাণাধীন এই ভবনে পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য যা ব্যবহার করা হয়েছে তা আসলে নাম সর্বস্ব। এ রকম মন্তব্য করেন এই ভবনের নিচ দিয়ে চলাচলকারী মো. আল আমিন। তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি প্রতিদিন এই ভবনের নিচ দিয়ে কলেজে যাই এবং বাসায় ফিরি।
রাস্তা সংলগ্ন এই ভবনের নিচে চলাচলকারী মানুষদের জন্য কোন নেট দেয়া হয় নাই। আসলে মানুষকে দেখানোর জন্য টিন দিয়ে একটা নিরাপত্তা বেষ্টনি দেয়ার নাটক করেছে এই ভবন মালিক। নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের এই শিক্ষার্থী বলেন, আমি ভবন নির্মাণ এর কোন নির্মাণ শ্রমিককে মথায় হেলমেট বা পায়ে গাম বুট পরতে দেখি নাই।
এছাড়া রাতের বেলা নির্মাণ সম্পৃক্তদের বিশেষ জ্যাকেট পরতেও দেখি নাই। এই শিক্ষার্থী আরোও বলেন, এরা নিজেরাও জীবনের ঝুঁকিতে আর পথচারীদেরও ঝুঁকিতে ফেলে। জামতলার এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী এক ব্যক্তি বলেন, এই রাস্তা সহ পাশে কয়েকটি ভবন নির্মান চলছে।
কোন ভবনেই পরিপূর্ণ ভাবে ভবন নির্মাণের সেপটি কোড অনুসরণ করা হয় নাই। মো. আমিনুল ইসলাম নামের বেসরকারি চাকরিজীবী এই ব্যক্তি আরও বলেন, ভবন মালিকরা তাদের বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার পাশে রেখে পথচারীদের চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি করছে। এদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি দেয়া খুব জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এই ভবন মালিকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে প্রথমে তিনি রাজি হন নি। কিন্তু পরে নিজের অস্বীকার করে তিনি জানান, আমরা ভবন নির্মাণে সব ধরনের সেফটি কোড ফলো করেছি। আসা করি এখানে পথচারীদের কোন সমস্যা হবে না।
নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন নির্মাণ ঠিকাদারের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা সব সময় নতনি ভবন নির্মাণের শুরুতে সকল সেফটি কোড অনুসরন করি। যাতে আমাদের নির্মাণ শ্রমিক এবং পথচারীদের কোন রকম অসুবিধা না হয়। এন.হুসেইন/জেসি