রাস্তার রাজা উৎসব-বন্ধন
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ৮ এপ্রিল ২০২৩ শনিবার
# খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে : এডি.এসপি ট্রাফিক
# সরিয়ে রাখার জন্য বলবো : বন্ধনের চেয়ারম্যান জুয়েল
নারায়ণগঞ্জে বর্তমান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ যোগদান করার পর পরই জেলার অবৈধ পরিবহন নিয়ে হুঙ্কার প্রধান করে বক্তব্য রাখেন। এমনকি তিনি অবৈধ পরিবহন, রুট পারমিটবিহীন বাস, লাইসেন্স বিহীন পরিবহন অভিযানের মাধ্যমে ডাম্পিংয়ে রাখার ঘোষনা দিয়েও চুপ হয়ে গেছেন। আর তা নিয়ে নাগরিক সমাজের নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এদিকে রমজান মাসের পর পরই দরজায় কড়া নারছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে ঘিরে শহরের সড়ক গুলোতে যানজট তৈরী হচ্ছে। আর দিনের বেলায় যেমন চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কে যানজট তৈরী হয়ে তেমনি রাতের বেলা ৯ টার পরেও শহরে যানজট সৃষ্টি হয়। এই যানজটের কারনে মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়। একই সাথে শহরে শপিংমল গুলোতে শপিং করতে আসা ভীড়ের কারনে অনেকে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরেন। কেননা ঈদকে ঘিরে সড়কে ছিন্তাইকারীরা সক্রিয় থাকেন।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিবাজার থেকে ১নং রেলগেটপর্যন্ত সিরাজউদ্দৌলা রোড দিনের বেলায় দখল করে রাখে হকাররা আর রাতের ৮ টার পর থেকে এই সড়কটি বন্ধন-উৎসব বাস পার্কিং করে রেখে রাস্তা দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বলে নগরবাসীর অভিযোগ। বাসগুলো রাস্তা দখল করে রাখায় জনগণ চলাচলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
তার বিপরীতে নগরীর ২ নম্বর রেলগেট থেকে ১ নম্বর রেলগেট হয়ে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সারিবদ্ধ ভাবে উৎসব-বন্ধন পরিবহন বাসগুলো পাকিং করে রাখায় এখানে রাতের বেলায়ও সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। অথচ স্বাভাবিক ভাবে রাতের বেলা রাস্তা ফাঁকা থাকে। কিন্তু সচেতন মহলের মতে উৎসব-বন্ধনের হর হামেশায় সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়ে আছে।
সিরাজউদ্দৌলা সড়কে জামা বিক্রি করা একাধিক হকার জানান, উৎসব এবং বন্ধন বাস প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ টার পর থেকে সারিবদ্ধ ভাবে পরিবহন রেখে চালকরা চলে যান। তাদের কারনে আমাদের বেচা কেনাও ঠিকমত করতে পারি না। রাস্তার রাজা যেন উৎসব বন্ধনের মালিকরা। তারা এমন ভাবে সড়ক দখল করে বাস পাকিং করে রাখে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের চারারগোপ থেকে ১নং রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করেছে বন্ধন উৎসব। কালিবাজার থেকে শুরু করে ১নং রেলগেট বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পুরো রাস্তাটি দখল করে রেখেছে। সড়কটির পাশে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ কলেজ এবং নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল। স্কুল-কলেজ আগত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানে আসতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। যেখানে ৫ মিনিট সময় লাগে প্রতিষ্ঠানে আসতে সেখানে ৬০ মিনিট সময় লাগে। বাসের নৈরাজ্যের কারণে অতিষ্ট শহরবাসী।
নারায়ণগঞ্জ কলেজের ছাত্রী তানিয়া জানান, বন্ধন, উৎসব, বন্ধুসহ বাসের চালকেরা কলেজের সামনে পুরো রাস্তাটি দখল করে বাসস্ট্যান্ড বানিয়েছে। রিক্সা ও প্রাইভেটকার চলচাল করতে পারছে না। চরম দূর্ভোগে জনসাধারনসহ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। সকালে কলেজ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে গিয়ে তাদের পরিবহন রাখায় সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারেন না। এ নিয়ে চরম ক্ষোভে পরেছে শহরবাসীও।
সিরাজউদ্দৌলা রোডের ভাসমান ব্যবসায়ী সোহেল জানান, রমজান মাসে ঈদকে ঘিরে রাতের ১১ টা কিংবা ১২ টা পর্যন্ত আমরা বেচা কেনা করবো তাও সম্ভব হয় না বাস চালকদের কারনে। কেননা তারা এখানে এসে রাস্তা দখল করে রাখে। অর্থাৎ বন্ধন উৎসব বাসের মালিকরা যেন এই রাস্তার রাজা তারা এমন ভাবে পরিবহন রাখেন। তাই তারা যেন সড়কে বাস না রাখতে পারে তার দাবী জানাই।
বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন বলেন, দুই-একটি বাস হয়তো রাখতে পারে। তবে আমি না রাখার জন্য বলে দিব।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক সোহান সরকার বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে রাতের বেলা এই সড়কে ফোর্স রাখার ব্যবস্থা করবো।
এস.এ/জেসি