রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১   ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আজ পহেলা বৈশাখ

নুরুন নাহার নিরু ও মেহেরীন জারা

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার


আজ বাংলা বর্ষবরণ। বাংলা চিরয়াত উৎসব চৈত্রসংক্রান্তি। যার মাধ্যমে বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হবে নতুন সাল ১৪৩০। পুরাতন সব কিছু মছে যাক এবং নতুন করে আবার সবকিছু শুরু হোক। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই এপ্রিল এই উৎসবটি পালন করা হয়। বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছাবাক্য হলো শুভ নববর্ষ। অতীতে বাংলা নববর্ষ  পালিত হতো ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে।

 

 

এই উৎসবে পান্তাভাত, হালখাতা, শোভাযাত্রা, মেলা ইত্যাদি আরো অনেক সাংস্কৃতিক উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। এছাড়া এ দিনে প্রতেক ব্যবসায়ীরা পুরাতন খাতার  হিসাবনিকাশ সম্পন্ন করে নতুন করে হিসাবের খাতা  খোলেন এবং এ উপলক্ষ নতুন-পুরাতন খদ্দরদের আমন্ত্রন জানিয়ে মিষ্টি খাওয়ান ও তাদের সাথে নতুন করে ব্যবসায়িক মধুর সম্পর্ক স্থাপন করেন। এ দিনে ছোট থেকে শুরু করে সবাই লালসাদা জামা-শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যায়। 

 

 

দিনটি সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানী সহ সারা দেশে থাকবে বর্ষবরনের নানা আয়োজন। এছাড়াও বিনোদন কেন্দ্রগুলো মুখোরিত হয়ে উঠে হাজারো প্রকৃতিপ্রেমি মানুষের পদভারে। দিনটি বরন করতে অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট গুলোতে আয়োজন করে পান্তা-ইলিশসহ বৈশাখি বিভিন্ন ধরনের দেশি খাবার উৎসবের। এই সময় শহড়তলীর নানা স্থানে বর্ষবরন উপলক্ষে মেলার আয়োজনও করা হয়।

 

 

সারাদিনব্যাপি বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃতি, শিশুদের চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা ও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরন পালন করা হয়। এবার রমজানে ২২ রোজায় নববর্ষের আগমন ঘটেছে। যার ফলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পহেলা বৈশাখ কেন্দ্র করে তেমন কোনো আয়োজন রাখবেন না।

 

 

তবে বাংলা নববর্ষ ও ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে নগরীর পোশাক মার্কেটগুলো। তাই নববর্ষ উপলক্ষে পোশাকের মধ্যে ব্যবসায়ীরা তুলে ধরতে চেষ্টা করছে বাংলার সংস্কৃতি ও বৈশাখের নতুনত্ব। নববর্ষের এই দিনে সরকারি এবং বেসরকারি নানা টেলিভিশন ও বেতারে পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। 

 

 

মূলত, ১৫৫৬ সালে বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে।পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রমীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের।

 

 

পরবর্তীতে আমাদের স্বাধীনতার পর এই উৎসব ধীরে ধীরে বাঙ্গালির জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। কালক্রমে বর্ষবরণ শুধু মাত্র আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়। এটি বাঙ্গালির সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এন.হুসেইন/জেসি