রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পুরান কোর্ট মসজিদে দোকান উচ্ছেদ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৫৭ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৩ বৃহস্পতিবার

 

# আমাদের কাছে থাকার অনুমোতি ছিলো, তাও উচ্ছেদ করেছে : দোকানি
# উচ্ছেদ অভিযানটি অবৈধ : খোকন সাহা
# টেন্ডারে হেরে তারা দোকান ছাড়তে চাচ্ছে না : মসজিদ কমিটি

 

 

নারায়ণগঞ্জের নগরীর শায়েস্তা খান সড়কের পাশে পুরাতন কোর্ট সংলগ্ন কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটের দোকানদারদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উচ্ছেদ করা হয়। দোকানদারদের দাবী এই মার্কেটের দোকান নিয়ে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

অপর দিকে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারির দাবী দোকানদারদের সরিয়ে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া তাদের মামলার বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। সেই আপিল আদালত আমলে নিয়ে গ্রহণ করেছে। এই ঘটনায় দুপর থেকে পুরাতন কোর্ট এলাকায় মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভ তৈরী হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ফতুল্লা এসিল্যান্ড বা সহকারি কমিশনার মো. সাজ্জাত হোসেনের নেতৃত্বে  মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

ভুক্তভোগী দোকানদার মোশারফ হোসেন জানান, আমরা এই মার্কেটে মসজিদ কমিটি থেকে চুক্তির মাধ্যমে ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ এখানে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। প্রশাসনের লোকজন যখন এসে আমাদের বললো ২ মিনিটের মধ্যে দোকান পার্ট খালি করতে বললো। তখন আমরা তাদের বলি এই মার্কেটের দোকান নিয়ে সিনিয়র সহকারি জজ চতুর্থ আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যার মামলা নম্বর দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৩৪৬/২০২৩।

 

এই মামলার আদেশে বাদী বিবাদী উভয় পক্ষকে স্থিতিশীল বজায় রাখার জন্য বলা হয়। আর আপনাদের কাছে কোন নোটিশ থাকলে আমাদের দেখান আমরা চলে যাবো। তখন প্রশাসনের লোকজন আমাদের কোন কাগজ দেখাতে পারেন নাই। তারা জোর পূর্বক ভাবে আমাদের মালামাল বের করে দিয়ে দোকান তালা মেরে চলে যান।

 

এসময় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহ নেওয়াজ বলেন, আমাদের কমিটির পক্ষ হতে প্রতিটি দোকানদারের সাথে ভাড়া চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পুরাতন দোকানদারদের ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাদেরতে দোকান ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করি। নতুন দোকানদারদের ভাড়ার জন্য আমরা ওপেন টেন্ডার আহ্বান করি।

 

তখন বর্তমান ভাড়াটিয়ারা এই ওপেন টেন্ডারে অংশ গ্রহন করেন। টেন্ডারে যারা বেশি রেট দিয়েছে তারা দোকান পেয়েছে। কিন্তু পুরাতন ভাড়াটিয়ারা টেন্ডার না পেয়ে আদালতে মামলা করেন। তাদের মামলার বিপক্ষে আমরাও জেলা জজকোর্টে আপিল করি। আদালত তা গ্রহণ করেন।

 

এসময় এড. মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আমরা তাদের মামলার বিপক্ষে আদালতে আপিল করি। পরে আদালত তাদের মামলা ভেকেট করে দেন। তারা মসজিদ কমিটি থেকে দোকান ভাড়া নিয়ে সাবলেট ভারা দেন। যা নিয়মে নেই। এই ভাবে সাবলেট ভাড়া দিয়ে ২০ হাজার দোকানের ভাড়া তারা ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। এছাড়া পুরাতন ভাড়াটিয়াদের দোকান ভাড়ার সময়ও শেষ হয়ে গেছে। গেন হিসেবে তাদেরকে দোকান ছেড়ে দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। আর এজন্য প্রশাসন এসে তাদের উচ্ছেদ করে গেছে।

 

এসময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহা বলেন, রোজার দিনে ঈদের আগ মুহুর্তে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে প্রশাসন অমানবিক কাজ করেছে। তাছাড়া এখানকার মসজিদ মার্কেটের দোকান নিয়ে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাদের যেভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে করা হয়েছে।

 

এছাড়া আমি জেলা জজকে জিজ্ঞেস করেছি তাদের মামলা ভেকেট করেছি কি না। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন  বিবাদী  পক্ষে মামলার আপিল গ্রহন করেছে কিন্তু বাদী পক্ষের মামলা ভেকেট করে নাই। আমি বলব ডিসি সাহেবকে ভুল বুঝিয়ে অসহায় মানুষদের সাথে অমানবিক বিচার করা হয়েছে। তাদের উচ্ছেদ করাটা বেআইনি হয়েছে। আমি ডিসি সাহেবকে অনুরোধ করবো দোকানদারদের যেন পুনর্বাসন করা হয়।  

এস.এ/জেসি