বন্দরে তিন ওয়ার্ডে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট
নুরুন নাহার নিরু
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:১৬ পিএম, ৭ মে ২০২৩ রোববার
# রোজার পুরো একটা মাস এলাকাবাসী পানির সংকটে ভুগেছে
# দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু সেই পানি ছাড়াই গত এক সপ্তাহ ধরে দিন কাটাচ্ছেন বন্দরের ২১, ২২ এবং ২৩ নং ওয়ার্ডের কয়েক এলাকার বাসিন্দারা। গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) থেকে ওয়াসার পানি সরবরাহ হচ্ছে না এই তিনটি ওয়ার্ডে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীদের। ওয়াসার পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাদের পানির জন্য খুঁজতে হচ্ছে মটরপাম্প বসানো বাড়ি। এছাড়া ২২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বন্দর শ্রম অধিদপ্তর থেকে লাইন ধরে বালতি কিংবা অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে দূর দূর থেকে এসে পানি নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলতে গেলে কিছু লোক ঘিরে অভিযোগ করে যুগের চিন্তাকে বলেন, আগের যখন পানি সরবরাহের দায়িত্বে ওয়াসার হেড অফিসারের হাতে ছিলো তখন কোনো সমস্যা হলে তাকে জানালে সাথে সাথে সে এসে ঠিক করে দিয়ে যেত। কিন্তু যেদিন থেকে এই দায়িত্বটা মেয়র আইভী নিয়েছে সেই দিন থেকেই ধ্বংস দিকে গেছে তাদের ফোন দিতে দিতে আর তাদের কাছে যেতে যেত আমাদের জীবন শেষ।
এই সমস্যা কি শুধু একবার আর দুবার পরপর কয়েকবারই পাম্প নষ্ট হয়ে গেছে। রোজার পুরো একটা মাস এলাকাবাসী পানির সংকটে ভুগেছে। পানি ছাড়া চলা যায় নাকি। এতো দিন রিজার্ভ করা পানি দিয়ে কোনো রকম দিন কাটিয়েছি কিন্তু এখন তো সেই পানিও শেষ হয়ে গেছে এখন আমরা কীভাবে কী করবো। পানির যে সমস্যা হচ্ছে এ ব্যাপারটা আমরা মেয়র মহোদয়কেও জানিয়েছি কিন্তু সে আমাদের তেমন কোনো গুরুত্ব দেয় নাই আবার নির্বাচন আসুক ঠিকই গুরুত্ব দিবে। পানি পাচ্ছি না ঠিক কিন্তু বিল তো আমরা দিচ্ছি যা আসছে তাই এ দেই।
একই ব্যাপারে রোকসানা নামে এক ব্যাক্তি বলেন, পানি টেনে নিয়ে আসতে আসতে হাতে অবস্থা শেষ। হাতটা পুরো ব্যাথা হয়ে আছে। গোসল করতে না পেরে পুকুরের ময়লা পানিতে গোসল করে সবাই। আর শ্রম অধিদপ্তর থেকে খাবারের পানি দেয় দুইবার । সেখান থেকে পানি দিচ্ছে বলে এখনও পযন্ত মানুষ দিন কাটাতে পারছে।
এ ব্যাপারে বন্দর ওয়াসার পাম্প অপারেটর নুরুল আমিন যুগের চিন্তাকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে পাম্প নষ্ট অবস্থায় আছে। যদিও শুক্রবারের তা মেরামত করানো হয়েছিলো কিন্তু মেরামতের পর টানা ৪ ঘন্টা পানি দিয়ে আবারও পাম্পটি নষ্ট হয়ে যায়। এ বিষটি আমি এলাকার কাউন্সিলরকে জানিয়েছি এবং নারায়ণগঞ্জের অফিসেও জানিয়েছি। এ ব্যাপারে ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহীন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
একই ব্যাপারে ২২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব সুলতান আাহম্মেদ ভূইয়া যুগের চিন্তাকে জানায়, পাম্প বৃহস্পতিবার নষ্ট হয় আমি শুক্রবার সন্ধ্যার পরই সারারাত ধরে লোকদের দিয়ে কাজ করিয়ে পাম্প ঠিক করাই। ৪ ঘন্টা পানি দেওয়ার পর আবারও তা নষ্ট হয়ে যায়। এখন যে নতুন করে পাম্প বসাবো তাও তো প্রায় ১ মাসের মতো সময় লাগবে। আমার অনুরোধ আপনারা এই কথা গুলো সিটি করপোরেশনে গিয়ে ওয়াসা ডিপার্টমেন্টে এ জানান তারা যেন একটা পদক্ষেপ নেয় কারন সাধারন জনগন অনেক কষ্ট করছে।
২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব আবুল কাউছার যুগের চিন্তাকে জনান, শুধু আমার ওয়ার্ডে না ওয়াসার পানির সমস্যা প্রায় সব ওয়ার্ডেই আছে। আসলে পানির যেই লেয়ারটা তা একটু নিচে পরে গেছে কারন বর্তমানে অনেক বাড়িতেই তো মটর বসানো তো তাই তারা আগে মটর দিয়ে পানি তুলে নিয়ে আসে এ কারনে ওয়াসার পানিটা ঠিক ভাবে সরবরাহ হয় না।
এ বিষয়ে বন্দর ওয়াসার পানি সরবরাহ দায়িত্বে মুরাদ হোসেন ভূঁইয়া যুগের চিন্তাকে জানায়, ২২নং ওয়ার্ডের একটা অংশে পানির সমস্যা হচ্ছে কারন বন্দরের ওয়াসার পাম্পটি নষ্ট হয়ে গেছে গত বৃহস্পতিবার পরে পাম্পটি ঠিক করানোর পর আবারও নষ্ট হয়ে যায়।
পানি সরবরাহের পাইপটি আয়রন জমে ব্লক হয়ে গেছে সেটি পরিষ্কার করানোর জন্য একটা প্রস্তাব নিয়ে মেয়র স্যার যায় কিন্তু এলাকাবাসী তা মেনে নেয়নি তাদের দাবি একটি নতুন কূপ খনন করে পাম্প বসানো এবং তারপর নষ্টটি মেরামত করাতে। আশা করছি আগামী সোমবার দড়িসোনাকান্দাতে একটা নতুন পাম্প চালু হবে আর সেটি চালু হলে আর কোনো সমস্যা হবে না। এন.হুসেইন/জেসি