দৌরাত্ম্য কমছে না ইসদাইরের অবৈধ ডাইংগুলোর
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৫৫ পিএম, ১০ মে ২০২৩ বুধবার
# সচেতনতামূলক সভায় কথা দিলেও কথা রাখেনি ডাইং মালিকরা
# ডাইংগুলোর বিষাক্ত পানি ও ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ এ এলাকার জনজীবন
# নিয়ম না মানলে ব্যবসায়িক ছাড়পত্র দেওয়া হবে না : আঃ আউয়াল
সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার অন্তর্গত ইসদাইর বাজার এলাকাটি বছরের প্রায় সবসময় বিভিন্ন রকম নেতিবাচক খবরের কারণে শিরোনামে থাকে। তবে সে সব নেতিবাচক শিরোনাম কে পাশ কাটিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ইসদার বাজার রেললাইন এর কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ডাইংগুলোর দৌরাত্ম্যে নাভিশ্বাস উঠেছে এলাকাবাসীর।
বিভিন্ন সময়ে এইসব অবৈধ নিয়ম বহির্ভূত ডাইং গুলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ডাইং মালিকরা এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। যার ফলশ্রুতিতে এলাকায় পানি ও বায়ু দূষনের মাত্রা সাধারণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এর প্রভাবে বৃষ্টির সময় এলাকাবাসি আক্রান্ত হয় চর্ম রোগে আর সারা বছর শ্বাসনালীর রোগে রোগাক্রান্ত থাকে এলাকাবাসী।
কিন্তু এলাকাবাসীর এসব সমস্যা দেখার যেনো কেউ নেই। ডাইং কর্তৃপক্ষ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত, এসব দেখার সময় তাদের হয়তো নেই। এসব সমস্যায় অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী দারস্থ হয় ওয়ার্ড সদস্য আঃ আউয়াল এর কাছে। কিন্তু তিনিও এ ক্ষেত্রে যেনো নিরুপায় এমনকি তিনি নিজেও ভুক্তভোগী বলে এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন তিনি।
সরেজমিনে ডাইংগুলো পরিদর্শন করে দেখা যায় একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা। গ্যাসের কোনো ব্যবহার নেই এসব ডাইংগুলোতে। গ্যাসের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। কাঠ পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন কালো ধোয়ার কারনে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না এ জনপদের মানুষ। শুধু তাই নয়। নেই প্রয়োজনীয় ইটিপি ব্যবস্থা, কারো বা ইটিপি থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য।
ফলে বিষাক্ত পানিতে ড্রেন গুলো ভরে থাকে সবসময়। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেই পানি রাস্তায় উঠে মানুষকে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত করছে। আর বর্ষা মৌসুমে তো এ ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। এত শত সমস্যা থাকা সত্বেও এসব অবৈধ ডাইংগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিরব ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে তাদেরকে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি এ পর্যন্ত। তবে এলাকাবাসী এ ব্যাপারে যথেষ্ট ক্ষুদ্ধ। তাদের দাবি আবাসিক এলাকায় কোনো রকম পরিবেশ এর জন্য ক্ষতিকর ডাইং কিংবা যেকোনো কিছু থাকতে পারবেনা। তারা এসব অপসারনের জোড়ালো দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার আ. আউয়াল জানান, আমরা আলোচনা সভা করেছি কিন্তু ডাইং মালিকরা কথা দিয়েও কথা রাখেনি। তারা সর্বশেষ বলেছে ঈদের পর এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে। আমরা এক সপ্তাহের মধ্যো আবার তাদের সাথে আলোচনায় বসবো। যদি তারা সমস্যার সমাধান না করে সেক্ষেত্রে চলতি বছরে জুন জুলাইয়ে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক যে ছাড়পত্রের দরকার হয় তা আর দেওয়া হবেনা।
তিনি আরোও বলেন, ডাইং মালিকরা যদি নিয়ম মেনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা না করে একটা সময় এলাকাবাসী হয়তো তাদের উপর ক্ষেপে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তবে এলাকাবাসী এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়। এখন দেখার বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও জনপ্রতিনিধি এ ব্যাপারে কতটা কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। জনতার আকাঙ্ক্ষাকে কতটা বাস্তবায়িত করতে পারে।
এস.এ/জেসি