মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথার গল্প শোনালেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা
স্টাফ রিপোর্টার
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১০:৪৯ এএম, ৫ জুন ২০২৩ সোমবার
নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে ও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব গাঁথা গল্প শোনালেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল রবিবার (০৪ জুন) সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে “বীরত্বগাঁথা শুনানো” শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীণ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
এ সময় অনুষ্ঠানটি দুপুর ১টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ ঘন্টাব্যাপী সময় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনানো হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এর সভাপত্বিতে এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) যুগ্ম সচিব মো.শাহ আলম সরকার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান বাচ্চু, নারায়ণগঞ্জ সদর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান ভূঁইয়া জুলহাস, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. নুরুল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা মহিউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাকিব আল রাব্বি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (শিক্ষা শাখা জেলা ই-সেবা কেন্দ্র) ইলোরা ইয়াসমিন, সহকারী কমিশনার (নেজারত শাখা, পর্যটন সেল, ট্রেজারী শাখা, রেকর্ড রুম শাখা) মোঃ রবিন মিয়া।
এসময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই শিক্ষার্থীদের তার বীরত্বগাঁথার বক্তব্যে শুনান দেশের জন্য আত্মত্যাগ, ১৯৬৯ এর গণআন্দোলন, ২৫ মার্চের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের টানা নয় মাসের ঐতিহাসিক দিনগুলোর কথা, যুদ্ধের সময় তাদের নানান ধরনের অভিজ্ঞতা এবং তারা কিভাবে যুদ্ধ করেছিলেন সে-সকল বিষয়, তারা যুদ্ধের সময় কিভাবে ট্রেনিং করেছিলেন।
তাদের কিভাবে শত্রুর মোকাবেলা করতে হয়েছিলো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৭ই মার্চ এর ভাষনে তারা উৎফুল্ল হয়ে নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে এই দেশকে স্বাধীন করার জন্য ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন এবং তারা এই দেশেকে স্বাধীন বাংলাদেশ করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের জন্ম হয়নি, তোমাদের অনেকের বাবা-মার জন্ম হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা বলে গেছেন, তোমরা যখন বড় হবে, তখন হয়তো মুক্তিযোদ্ধারা কেউ জীবিত থাকবে না। এই মুক্তিযোদ্ধাগণ মুক্তিযুদ্ধ করে আমাদেরকে একটি দেশ উপহার দিয়েছে।
আর এই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো, ৩০ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়ে আমাদেরকে এই লাল সবুজের পতাকা এনে দিয়েছেন। যাতে আমরা একটি স্বাধীণ দেশে স্বাধীণভাবে জীবনযাপন করতে পারি। কেননা ১৯৭১ সালের আগে এই দেশটি আমদের ছিলো না।
তাই এই মানুষগুলো তথা মুক্তিযোদ্ধারা যখন কথা বলে তখন আমাদের সকলকে শুনতে হবে। কারণ এই মানুষগুলোর কথা যদি না শুনি, সেই আদর্শ যদি ধারণ না করি তাহলে আমরা প্রকৃত বাঙ্গালী না। তাহলে আমরা বেঈমান হয়ে যাই, নতুন প্রজন্ম যদি ঐ প্রজন্মকে অস্বীকার করে তাহলে আমরা আর বাঙ্গালী থাকি না।
এই জন্যই জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলর আজ এতো সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কাজেই মুক্তিযোদ্ধাদের কথা আমাদের শুনতে হবে। এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা কালচারাল অফিসার রুনা লায়লা, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য হাজী আমজাত হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা শাহজাহান সহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আইইটি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, গনবিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় ও আদর্শ মহিলা আলিম মাদ্রাসার প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা গল্প শোনার পরে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত নানা ঘটনাবলী থেকে সাজানো ১০টি প্রশ্ন নিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঠিক উত্তরদাতা ১০ শিক্ষার্থীকে বই উপহার দেয়া হয় জামুকা’র পক্ষ থেকে। এন. হুসেইন রনী /জেসি