রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

না.গঞ্জে যাত্রীবাহী নৌ-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ২০ জুন ২০২৩ মঙ্গলবার


নারায়ণগঞ্জে তৈরি হচ্ছে নতুন একটি যাত্রীবাহী নৌ টার্মিনাল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বি আইডব্লিউটিএ) উদ্যোগে প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রায় ২৯ শতাংশ বেশি খরচে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। 

 

 

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ- সংক্রান্ত একটি পূর্ত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, প্রকল্পটি (বি আরডব্লিউটিপি-ডব্লিউ ৩)-এর লট-১ বাস্তবায়নে গত বছর (২০২২ সাল) ফেব্রুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়।

 

 

ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র সংগ্রহ করলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে দুটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং দুটি দরপত্রই দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি থেকে রেসপনসিভ বলে বিবেচিত হয়। তমা কন্সট্রাকশন ছাড়াও দরপত্রে অংশ নেওয়া অন্য প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে যৌথভাবে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনডিই ও এসএসআরআই এবং কোরিয়ার দেই ইয়াং। যৌথ এ তিন প্রতিষ্ঠানের দর প্রস্তাব ছিল ৬৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা পূর্তকাজের প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। 

 

 

প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ব্যয়ের এই প্রাক্কলন ২০২১ সালের। কোভিডসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কারণে নির্মাণ সামগ্রীর দর বর্তমানে বিশ্বে ও দেশে অত্যাধিক বেড়েছে। বিষয়টি ওই দরপত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। এ কারণে প্রস্তাবিত দর বেশি পাওয়া গেছে। 

 

 

আলোচ্য প্যাকেজ (বি আরডব্লিউটিপি-ডব্লিউ ৩)-এর পুরো কাজ তথা চারটি লটের কাজ বাস্তবায়নে ডিপিপি-তে ২৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর বিপরীতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত ব্যয় হচ্ছে ৩৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৬০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি। 

 

 

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ আলোচ্য যাত্রীবাহী টার্মিনাল উন্নয়নের কাজটি বি আইডব্লিউটিএ কর্তৃক বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন প্রকল্প-২ (চট্রগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌ-পথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ)-(১ম সংশোধিত)শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উন্নয়ন করা হবে। কাজটি প্যাকেজ নং বি আরডব্লিউটিপি- ডব্লিউ ৩-এর একটি অংশ। 

 

 

সূত্র জানায়, অনুমোদিত আরডিপিপি (ব্লক বরাদ্দ)-তে ৯০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা অব্যয়িত রয়েছে। অব্যয়িত এ অর্থ থেকে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ৬০ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। এঅবস্থায় প্রস্তাবিত ব্যয় অন্তর্ভূক্ত করে ডিপিপি সংশোধন-পূর্বক আরডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

জানা যায়, বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন প্রকল্প-২ (চট্রগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌ-পথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ)-(১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে একনেক থেকে সংশোধিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৩৪৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

 

 

এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ ২৯৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং বিশ্বব্যাংক ঋণ ৩ হাজার ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম নৌ করিডোরের আশুগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালে মূল নদী ও শাখাসমূহ ড্রেজিং-এর মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ ও নাব্যতা সংরক্ষণ। 

 

 

চারটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন (শ্মশানঘাট, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ও বরিশাল) এবং ২টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন (পানগাঁও ও আশুগঞ্জ); নৌ করিডোরটির বিভিন্ন স্থানে ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ; নৌ করিডোর বরাবর ৬টি স্থানে নৌ-যানসমূহের জন্য ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ ও ২টি মাল্টিপারপাস ভ্যাসেল সংগ্রহ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।  এন. হুসেইন রনী /জেসি