রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আবার ডুবেছে ইসদাইর, দায় কার

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:০৭ পিএম, ২২ জুন ২০২৩ বৃহস্পতিবার

 

# ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় এবার ভোগান্তি চরমে

 

 

বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইসদাইর এলাকাকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলাকার মেম্বার হয়েছেন আবদুল আউয়াল। তিনি মেম্বার হওয়ার পর গত বছর মোটামোটি এলাকার ড্রেনগুলি পরিস্কার রাখলেও এবার ড্রেন পরিস্কার না করায় গোটা ইসদাইর এলাকা জুরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

 

গতকাল এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন ইসদাইর এলাকায় গেলে ইসদাইর বাজার পেরোতেই নজরে আসে রাস্তার উপর পানি। ডুবে আছে রাস্তা। স্থানীয় দোকানদার এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা বলেন গত প্রায় এক যুগ ধরেই বর্ষাকালে এই রাস্তা ডুবে যায়। তবে গত বর্ষার আগে বহু বছর পর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

 

তখন এলাকার চেয়ারম্যান এবং মেম্বার পদে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তারা সকলেই নির্বাচিত হলে অত্র এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। আমরা ভোট দিয়ে লুৎফর রহমান স্বপন সাহেবকে চেয়ারম্যান এবং আবদুল আউয়াল সাহেবকে মেম্বার পদে নির্বাচিত করি। তারা নির্বাচিত হওয়ার পর গত বর্ষার আগেই এলাকার ড্রেন এবং ক্যানালগুলি পরিস্কার করেছিলেন। তাই গতবার এই রাস্তায় তেমন পানি জমেনি।

 

কিন্তু এবার আর তারা জলাবদ্ধতাকে তেমন কোনো গুরুত্ব দেননি। যার ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। রাস্তায় পানি জমে গোটা এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে যাচ্ছে। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। তারা আরো বলেন গোটা ইসদাইর এলাকার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। ইসদাইরের ছেলেমেয়েরা এই রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজে যাতায়ত করেন।

 

অথচ এখন আর এলাকার ছেলেমেয়েরা পায়ে হেঁটে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। আমাদেরকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা আরো বলেন অত্র এলাকায় বিগত প্রায় এক যুগ ধরে এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের নিজেদের এলাকার বৃষ্টির পানিতো রয়েছেই তার উপর পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশন এলাকার পানি এসেও আমাদের এলাকা ডুবে যাচ্ছে।

 

তাই আমরা আমাদের এই দুর্ভোগের জন্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন এবং এই ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল আউয়ালকে দায়ী করবো। প্রথমত স্থানীয় এমপি সবেচেয়ে বেশি দায়ী। কারণ এলাকাটিতে তার নির্বাচনী এলাকা এবং অত্র এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের হাতে রেখেছেন।

 

অথচ এতো বছর ধরে জলাবদ্ধতা হচ্ছে তিনি সব কিছু জেনেও কার্যকর কোনো ব্যাবস্থা নেন নাই। প্রতি বছরই যখন এলাকাটি ডুবে যায় তখন মিডিয়ায় রিপোর্ট করার পর তৎপর হন শামীম ওসমান। তারপর আবার বর্ষাকাল চলে গেলে তিনি সব ভুলে যান। তাই স্থানীয় এই এমপির খামখেয়ালিপনার চরম মাশুল গুনছেন তার এলাকার জনগন।

 

ইসদাইর এলাকার বাসিন্দারা আরো জানান উত্তর জামতলা, চাষাড়া রেল লাইন, ওসমানী স্টেডিয়াম, অক্টো মোড় এবং মাসদাইর কবরস্থান সহ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের একটি বড় এলাকার পানি এসে ইসদাইর এলাকা ডুবে যায়। তাই শুনেছিলাম মেয়র আইভী তার নিজের এলাকার পানি সরাতে ইসদাইরের উপর দিয়ে এমন একটি ড্রেন নির্মান করবেন যার সুফল অত্র এলাকার সাধারণ মানুষ ভোগ করবে।

 

যেমনটি তিনি মাসদাইরের উপর দিয়ে করেছেন। কিন্তু এখন শেনা যাচ্ছে এমপি শামীম ওসমানের এলাকা বলে মেয়র আইভী এই ড্রেন নির্মান করবেন না। ফলে সিটি করপোরেশনের বিশাল এলাকার পানি তার নির্মিত ড্রেনগুলি দিয়ে এসে ডুবে যাবে ইসদাইর গাবতলী এলাকা। এতে যেনো সিটি করোপোরেশনের কোনো দায়ই নেই।

 

আর স্থানীয় চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন এবং মেম্বার আবদুল আউয়াল এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল রাখতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। যেখান দিয়েই পানি নামে ওই ড্রেন বা ক্যানালগুলি তারা পরিস্কার রাখেন নাই। যার ফলে এখনো তেমন কোনো ভারি বৃষ্টিপাত না হলেও সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যাচ্ছে গোটা এলাকার রাস্তাঘাট।

 

এদিকে এ বিষয় জানতে গতকাল স্থানীয় মেম্বার আবদুল আউয়ালকে টেলিফোন করলে তিনি বলেন, আমি এখন একটি মিটিংএ আছি। আপনি আমাকে পরে ফোন করেন। পরবর্তীতে আবার তাকে ফোন করলে তিনি আর ফোন ধরেন নি। এস.এ/জেসি