গত তিন মাসে না.গঞ্জে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ১৯০৪ জন, মৃত্যু ১৯
স্টাফ রিপোর্টার
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০১:৪২ পিএম, ২৬ জুন ২০২৩ সোমবার
বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটার) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সাংবাদিক সমাজের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল রবিবার (২৫জুন) সকাল ১১টায় পলি ক্লিনিকের ৫ম তলায় সম্মেলণ কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা নাটার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা.মো.শাহনেওয়াজ চৌধুরী’র সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডা.এ.এফ.এম.মুশিউর রহমান বলেন, যক্ষ্মা বা টিবি একটি বায়ুবাহিত ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগ সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়ায় এবং দেহে প্রবেশ করে, প্রথমে ফুসফুসে আশ্রয় নেয়।
এছাড়াও যক্ষ্মা আক্রান্ত সব রোগীর কাছ থেকেই কিন্তু যক্ষ্মার জীবাণু ছড়ায় না। যাদের থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তাদের হাঁচি-কাশি, এমনকি কথা বলার সময়ও বাতাসে যক্ষ্মার জীবাণু ছড়ায়। এ জীবাণু বেশ কয়েক ঘণ্টা বাতাসে ভেসে থাকে। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুসে ঢুকে যেতে পারে বাতাসে ভেসে থাকা এ জীবাণু।
এভাবেই অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। প্রতি এক জন রোগী পরিবার, স্বজন ও আশপাশের অন্তত ১০ জনের মধ্যে সংক্রমন ছড়াতে পারে। সারাদেশে গড়ে ১ বর্গ কিলোমিটারে ১ হাজার ২৮০ জন মানুষ বসবাস করলেও নারায়ণগঞ্জে বসবাস করে ৫ হাজার ৭৮০ জন। এ জেলায় মানুষের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় সংক্রমন ছড়ানোর ঝুঁকিও বেশি।
তাই নারায়ণগঞ্জের মানুষের মাঝে যক্ষ্মার বিষয়ে সচেতন হওয়া বেশি জরুরী। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে যক্ষ্মার রোগে আক্রান্তের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ভারতে। তাই বাংলাদেশকে শতভাগ যক্ষ্মা রোগ থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে সরকার। যক্ষ্মা রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জের সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সমূহ, বিকেএমইএ‘র কারখানা গুলোতে বিনামূল্যে যক্ষ্মার পরীক্ষা ও যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসাপাতালে আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়।
এসময় বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটার) এর প্রজেক্ট কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জে গত তিন মাসে ১৯০৪ জন যক্ষ্মা রোগী রয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এই জেলায় সংক্রমন ছড়ানোর ঝুঁকিও বেশি। অতিরিক্ত ঝুঁকিতে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মানুষ।
নারায়ণগঞ্জে মোট জনসংখ্যা ৪৬ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন। নারায়ণগঞ্জে বছরে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয় প্রায় ৫ হাজার রোগী। গত গত ৩ মাসে ১৯০৪ জন যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আড়াইহাজারে আক্রান্ত রয়েছে ২৫১ জন, বন্দরে ১২৪ জন, সদর উপজেলায় ৬৭৭ জন, রূপগঞ্জে ৩৩৯ জন ও সোনারগাঁয়ে ৩১৯ জন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত বিজিএমইএ‘র সদস্য ভুক্ত কারখানা গুলোতে ৫৯ ও বিকেএমইএ‘র সদস্য ভুক্ত কারখানা গুলোতে ১৩৫ জন আক্রান্ত রয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের ৯৭ শতাংশ সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরছে আর মারা যাচ্ছে ২ শতাংশের বেশি। এসময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, ডা. সামিয়া মোশারফ হোসেন, প্রজেক্ট কর্মকর্তা ডা.উম্মে আজাদ লিপি, প্রজেক্ট ইটিবি কর্মকর্তা ডা.এস.এম নাছিরুল হক, ব্যাকের নারায়ণগঞ্জ জেলার এরিয়া সুপারভাইজার মাসুমা আখতার সহ প্রমুখ। এন.হুসেইন রনী /জেসি