রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হকার-ব্যবসায়ীদের দখলে শহরের ফুটপাত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০২:১৪ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার


নগরীর ডিআইটি এলাকায় জনসাধারণের চলাচলের ফুটপাত দখল করে দেদারসে ব্যবসা করছে ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাত দখল করে রাখায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। ফুটপাত দখল করে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা চালিয়ে গেলেও এসব ফুটপাত দখল মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

 


সরেজমিনে দেখা যায়, ডিআইটি এলাকায় বঙ্গবন্ধুর সড়কের পাশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী ব্যবসা করছেন ২৫/৩০জন ব্যবাসায়ী। এ স্থানে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে ব্যবসা করছে এসব ব্যবসায়ীরা। ফুটপাতের উপরে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক পাখাসহ নানা পণ্য সামগ্রী।

 

 

এসব পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে দেদারসে ব্যবসা করছেন তারা। ফুটপাত দিয়ে পথচারীরা চলাচল করার কথা থাকলেও অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করার জন্য এসব ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারছে না সাধারণ পথচারীরা।

 

 

তাই নিরুপায় সাধারণ মানুষকে এক প্রকার বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার উপর দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। ফলে, ফুটপাতের এ অংশে যাতায়াতের সময় বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পথচারীদের।

 


দেখে যেন ফুটপাত চেনার উপায় নেই। হাসান মিয়া নামে এক পথচারী জানান, এমনিতেই নগরীর অধিকাংশ সড়ক ও ফুটপাত হকারদের দখলে। এ অংশটিতে হকারদের দৌড়াত্ম না থাকলেও ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ফুটপাত দখল করে ফ্যানসহ নানা পণ্য রেখে ইচ্ছেমত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারছি না। বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেইন সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করছি।

 


মোবারক নামে আরেক পথচারী জানান, এখানে ফুটপাত নেই বললেই চলে। দোকানদাররা যে যার মত করে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে। আমরা সাধারণ মানুষ। আমাদের ভোগান্তি নিয়ে কারো যায় আসে না। এসব বলেও লাভ নেই।

 


শুধু ইলেকট্রনিক্স ব্যবাসয়ীরাই নয়, পুরো ডিআইটি মার্কেটের সামনের দোকানিরাই নিজের মতো করে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে। এছাড়া, ১নং রেল গেইট, ২নং রেল গেইট, চাষাড়া, কালিরবাজারেও চলছে একই অবস্থা। এসব এলাকায়ও হকারদের পাশাপাশি মার্কেট ব্যবসায়ীরা দখলে রেখেছে ফুটপাত ও সড়ক।

 

 

১নং রেল গেইট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্রোকারিজ পণ্যের পসরা সাজিয়ে ফুটপাত দখল করে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, হকাররা এখানে রেল লাইনের পাশে নানা পণ্য সামগ্রী নিয়ে বসায় চরম বিপাকে পড়েছে পথচারীরা। এখানে প্রায়ই রেল দুর্ঘটনাও ঘটে বলে জানা গেছে।

 


নগরীর ২নং রেল গেইটের সৈয়দ আলী চেম্বারের সামনে থেকে আনন্দ হোটেল হয়ে পুরো চেম্বার রোডের সড়ক-ফুটপাত হকার ও ব্যবসায়ীদের মালামালে ভরপুর। একজন মানুষ চলাচলেরও জায়গা নেই এখানে। ফলে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে সড়ক দিয়ে হাটতে হয় পথচারীদের। এখানেও বিপত্তি বাধায় হকাররা। টি-শার্ট সহ পোষাক সামগ্রীর দোকান বসিয়ে সড়ক দখলে রাখে তারা।

 


কালিরবাজারে গিয়ে দেখা যায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এখানে মূল সড়কের দুই পাশ দখল করে ব্যবসা করছে হকাররা। পুরাতন কোর্ট রোড থেকে ফ্রেন্ডস মার্কেট পর্যন্ত সড়কে দুই পাশে অন্তত ৩০০ চকি বসিয়ে পোষাক, জুতা, কসমেটিক্সসহ নানা পণ্য সাজিয়ে ব্যবসা করছে হকাররা।

 

 

ফ্রেন্ডস মার্কেট থেকে কালিরবাজারের দেলোয়ার টাওয়ার পর্যন্ত সড়কেও একই অবস্থা। মূল সড়কের দুই পাশ ফল বিক্রেতাদের দখলে। রাস্তার উপরে ২ ধাপে ভ্যানগাড়ি বসিয়ে ব্যবসা করছে তারা। ফলে চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।

 


এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি ও ডিআইটি মার্কেট কমিটির সভাপতি হাজী নুরুদ্দিনের সাথে। অভিযোগ স্বীকার করলেও নিজে ফুটপাত দখল করেন না বলে জানান তিনি।

 

 

তিনি বলেন, আমি দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের বলেছি ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে। বললে ২/৪দিন ঠিক থাকে, এরপর আবারও পুরোনো অবস্থায় ফিরে যায় তারা। শুধু এখানেই নয়, পুরো শহরের ফুটপাত যাতে দখলমুক্ত হয় এবং পথচারীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।

 


একইবিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ করেন নি, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।এন.হুসেইন রনী /জেসি