নাসিকের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মত বিনিময় সভা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৩:১৭ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার
জাইকার সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উপ প্রকল্প ১ ও ২ বাস্তবায়ন উপলক্ষ্যে নাগরিক মতবিনিময় সভায় গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের শীতলক্ষ্যা ১৮/১ বখতিয়ার খিলজি রোডস্থ আফ্রিদি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরবান ডেভেলপমেন্ট এন্ড সিটি গভারন্যান্স প্রজেক্ট (ইউডিসিজিপি), এলজিইডি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ কামরুল হাছান মুন্না। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাসিকের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল আজিজ, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজগর হোসেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী ইসমাইল চৌধুরী, পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম, সাবেক প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ বিভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহমুদ খান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মুহাম্মদ শাহ আলম, জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগের উপ পরিচালক ডা: মো: ফারুক আহমেদ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. ফজলুল কবীর।
এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী তাহেরা খাতুন, বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী প্রকৌশলী আবু কাউসার পুলক, জাইকার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ জাঙ্কো কুওয়াবারা, ল্যান্ডফিল স্পেশালিষ্ট আব্দুল্লাহ হারুন, পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: মোবারক হোসেন প্রমুখ।
মত বিনিময় সভায় স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাসিকের ১৮নং ওয়ার্ডের আলআমিন নগরে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে উন্মুক্তভাবে বর্জ্য ডাম্পিংয়ের কারণে তাদেরকে চরম দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বর্জ্যের ভাগাড়ের কারণে নানা ধরনের পোকামাকড় বসতবাড়ি এমনকি মসজিদেও প্রবেশ করছে।
দুর্গন্ধে ওই এলাকার ভাড়াটিয়া আসেনা। এমনকি আত্মীয় স্বজনও বেড়াতে আসতে চায়না। আত্মীয়তার সমন্ধ করতে গিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে তাদেরকে নানা ধরনের রোগে ভুগতে হচ্ছে। তারা দ্রুত এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান।
সভায় জানানো হয়, আরবান ডেভেলপমেন্ট ও সিটি গভারন্যান্স প্রজেক্ট প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার ও জাইকা। এই প্রকল্পের অধিনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জালকুড়ি ও আলআমিন নগরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উপ প্রকল্প-১ ও ২ বাস্তবায়ন করা হবে।
সভায় আরো জানানো হয়, পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০২০ সালে দৈনিক বর্জ্য উৎপাদন হয় ৭৩৫ টন যা ২০২৮ সাল নাগাদ বর্জ্য উৎপাদন হবে ১ হাজার ৯৪ টন। ২০২০ সালের পরিসংখ্যানে দৈনিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন করা হচ্ছে ৫০০ টন। ২০২৮ সালে দৈনিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন করা হবে ৮২১ টন। উপ প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা যাবে ৫১৩ টন।
প্রকল্পটি দু’টির ল্যান্ডফিল এরিয়া জালকুড়িতে ৪.৪ হেক্টর ও আল-আমিন নগরে ১.৭ হেক্টর। প্রকল্পের বাজেট জালকুড়িতে ৮৮০.৯ মিলিয়ন টাকা ও আল-আমিন নগরে ৫১০.৬ মিলিয়ন টাকা। প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয়েছে জালকুড়ি ২০২৫ সালের জুন মাস ও আল আমিন নগরের ২০২৫ সালের মার্চ মাসে।
নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, আমি এক মাস পূর্বে অত্র সিটি করপোরেশনে যোগদান করেছি। আপনাদের দুর্ভোগের কথা শুনে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। আশা করছি কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা না থাকলে প্রকল্প দু’টি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। আমরা ইতিমধ্যে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। সেই বিদ্যুৎ হয়তো নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্যই কাজে লাগবে।
সভাপতির বক্তব্যে নাসিকের ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ কামরুল হাছান মুন্না বলেন, মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে ৫ মিনিট বসলেই বোঝা যায় তিনি নারায়ণগঞ্জ নগরবাসীর জন্য কতটুকু চিন্তা করেন। আমি এর আগে দীর্ঘ ১৩ বছর তার সঙ্গে কাজ করেছি এবং অনেক কিছু শিখেছি। মেয়র আইভী আপনাদের জন্য অনেক চিন্তা করেন। এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনেও প্রকল্প নিয়েছেন মেয়র আইভী।