সেতু ভেঙে খালে, তিনদিনেও শুরু হয়নি সংস্কার কাজ
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০২৪ রোববার
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ১নং ওয়ার্ডস্থ হীরাঝিল আবাসিক এলাকার কাসসাফ শপিং সেন্টার সংলগ্ন ব্রিজটি পথচারী নিয়ে ভেঙে খালে পড়ার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সংস্কার কাজ শুরু করা হয়নি। এদিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বন্ধ থাকায় চলাচলকারী হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গেলো ১৭ জানুয়ারি রাতে ব্রিজটির অর্ধেক অংশ ভেঙ্গে ডিএনডি খালের মধ্যে পড়ে যায়। এরপর থেকে পথচারী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঘুরে নিজেদের গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে। ভেঙ্গে পড়া ব্রিজটির পশ্চিম দিকে আরেকটি ব্রিজ থাকলেও অধিক মানুষের যাতায়াতে সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন মূহুর্তে সেটিও ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা করছে পথচারীরা।
গতকাল শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে ভাঙ্গা অবস্থায় ব্রিজটি দেখা গেছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, প্রায় এক বছর যাবত ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মানুষ পারাপারে সার্ভিস দিয়ে আসছিল। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।
একপর্যায়ে গত বছরের আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ ব্রিজটির কয়েকটি পিলার ভেঙ্গে গেলে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের নিজ উদ্যোগে জোড়াতালি দিয়ে ব্রিজটি সাময়িকভাবে সংস্কার করা হয়েছিল। সংস্কারের কয়েকমাস ভালো গেলেও গত কয়েকদিন ধরেই ব্রিজটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন থেকে ব্রিজটি যেকোনো সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
পরবর্তীতে বুধবার কয়েকজন পথচারী নিয়ে ভেঙ্গে খালে পড়ে যায়। এতে কেউ গুরুতর আহত না হলেও প্রাণহানী থেকে বেঁচে যান পথচারীরা।
হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, এই ব্রিজটি দিয়ে এলাকাবাসী মার্কেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় তাদের এখন অনেক ঘুরে গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে। পুরুষরা কোনোভাবে যেতে পারলেও নারী ও বৃদ্ধদের জন্য কষ্টকর বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
চিটাগাংরোডস্থ মার্কেট ব্যবসায়ীরা জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ার পর থেকে মার্কেটে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। অপরপাশে অন্য আরেকটি ব্রিজ থাকলেও সেটা ব্যবহারে অনিহা দেখিয়ে মানুষজন আসা-যাওয় কমিয়ে দিয়েছেন। তবে যারা মার্কেটে এসে ভারী জিনিসপত্র ক্রয় শেষে ফেরার পথে মালামাল নিয়ে অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অতি দ্রুত এটি সংস্করণ শুরুর দাবিও জানাচ্ছেন তারা।
সংস্করণ কাজ শুরু হচ্ছে না কেনো জানতে চাইলে (নাসিক) ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম জানিয়েছেন, ব্রিজটি ভাঙ্গার পর আমরা বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশন বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি। তারা এটি আমলে নিয়েছেন। আমরা আগামীকাল সেখানে গিয়ে আপডেট জানবো। তবে, অতি শীঘ্রই এটির কাজ ধরা হবে।
আসলে আমি তো আর নিজে থেকে কিছু করতে পারিনি। কারণ আমি সিটি করপোরেশনের চাকরি করি তাদের অনুমতির প্রয়োজন হয়।। পাশাপাশি পশ্চিম পাশের যে ৬ ফুট ব্রিজটি রয়েছে সেটিতে অতিরিক্ত চাপ পড়াতে সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা ওই ব্রিজটিকে ১২ ফুট করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেটির কাজও ধরা হবে।
উল্লেখ্য: সংশ্লিষ্ট সূত্রেমতে, এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে এবং শিমরাইল মোড়ের মার্কেটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ১১ বছর পূর্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে।
ব্রিজটিতে বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকতো। এছাড়া খাল পারাপারের জন্য কাছাকাছি কোনো ব্রিজ না থাকায় আশেপাশের ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল এই ব্রিজটি দিয়ে আনা নেওয়া করতো।