শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইসেন্সবিহীনদের তালিকা করেও বন্ধ করতে পারছে না সিভিল সার্জন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৪৮ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ বুধবার

 

#এক  সপ্তাহ আগে নোটিশ দিলেও এখনও বন্ধ হয়নি

 

 

সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ শহরে লাইসেন্সবিহীন ও অনুমোদনহীন শতাধিক ক্লিনিক-হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন খোদ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এছাড়া ও চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্লিনিক মালিকরা জিম্মি করে রাখছেন রোগীদের।

 

ইতিমধ্যে লাইসেন্সহীন না থাকা, সনদ নবায়ন না করা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, অনুমোদনবিহীন ল্যাব পরিচালনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অপারেশন পরিচালনাসহ বিভিন্ন অভিযোগগুলোকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বেশ কিছু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের লিস্টে করে সেগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ক্লিনিক-হাসপাতালের প্রায় ২০ থেকে ২২টির মতো ক্লিনিক হাসপাতালের কাগজ না থাকার কারণে তা শীঘ্রই বন্ধের ঘোষণা হয়েছে।

 

যা ইতিমধ্যে দেদারসে চালু কোন ভাবেই বন্ধ করতে সক্ষম হচ্ছে না সিভিল সার্জন। বন্ধ ঘোষিত হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকরা বলছে, পরিবেশ ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নিয়ে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় যে কারণে আমাদের নতুন লাইসেন্স ও নবায়ন করতে একটু সময় লাগে আর যেহেতু এটা একটি রানিং ক্লিনিক বা হাসপাতালে পরিণত হয়েছে সেই প্রেক্ষিতে কাগজ তৈরি, অনলাইন বা নবায়নের জন্য তো হাসপাতালটি বন্ধ রাখা যাবে না।

 

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি হাসপাতালের লাইসেন্স না থাকার কারণে গত (১৭ জানুয়ারী) সিভিল সার্জন অফিস থেকে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এগুলো বন্ধ রাখতে কিন্তু সিভিল সার্জনের সেই নির্দেশকে পা ঠেলে দিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছেন।

 

অবৈধভাবে সরকারি নিয়ম না মেনে চালু থাকা ক্লিনিক হাসপাতালগুলোকে এক সপ্তাহ আগে নোটিশ দিলে ও এখনো নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল নাগবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল (ইউনিট-২) নবাব সলিমুল্লাহ রোড, স্টাফ লাইফ হাসপাতাল চাষাড়া প্রেসিডেন্ট রোড, খানপুরের আহিল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, দেওভোগের এনসিসি, এসবিএফ কিডনি ডায়ালাইসিস হাসপাতালসহ নির্দেশনা না মেনেই চালু রয়েছে সকল ছাড়পত্রবিহীন ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।

 

আবার অনেক ক্লিনিকের লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি। এমন শহরের আনাচে-কানাচে নোংরা পরিবেশে হুটহাট গড়ে উঠছে ক্লিনিক। সেখানে চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসা হচ্ছে। রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া এই অবৈধ লিস্টে থাকা এই হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো বিনা লাইসেন্সে এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে না জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে রোগীদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন চালিয়ে আসছে।

 

তাছাড়া বর্তমানে নাগবাড়ী ডায়াবেটিস হাসপাতালের মতো আরো বহু হাসপাতাল রয়েছে যারা দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ তাদের কাগজ রিনিউ করেননি। এদিকে শহরে বর্তমানে আনাচে-কানাচে শুধু হাসপাতাল খানপুর মজিদ রোড থেকে শুরু করে কাজী পাড়া পর্যন্ত সহ আশেপাশে বেড়ে উঠেছে নানান হাসপাতাল যারা লাইসেন্স কা হা কে বলে এখনো তা বলতেই পারেন না। কিন্তু সিভিল সার্জনের চোখে ফাঁকি দিয়ে নানাভাবে চলমান রয়েছে অবৈধ হাসপাতালগুলো।

 

এদিকে এই অবৈধ হাসপাতালের বিষয়ে সুদিমহল বলছে, যদি এই হাসপাতালে কোন প্রকারের দূঘটনা ঘটে তাহলে এটার দায়ভার কে নিবে। এদিকে কেউ কেউ বলছে তারা উপরে ম্যানেজ করেই তাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছে। কিন্তু যাদের নামে বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে তারা বলছে লাইসন্সের জন্য বহু কিছুর প্রয়োজন হয়। যাকে ঘিরে নানা জায়গায় নানা সময় লাগে। কেউ সিভিল সার্জনের বন্ধের ঘোষণার কোন গুরত্ব রাখছে না।

 

এ বিষয়ে দেওভোগ নাগবাড়ী ডায়াবেটিস হাসাপাতাল ও নবাব সলিমুল্লাহ রোডের ডায়াবেটিস হাসপাতালের সেক্রেটারী দেলোওয়ার হোসেন চুন্নু বলেন, আমরা এখানে সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করি এটা দীর্ঘ পুরনো একটি হাসপাতাল এই হাসপাতালটি মানুষের সু-চিকিৎসা সল্প মূল্যেতে দেওয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন সরকারী নিয়ম মেনেই কিন্তু কার্যক্রম আমাদের অবহৃত রয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস হয়েছে আমাদের হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

 

আর তা নবায়ন করা হয়নি, যাকে ঘিরে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আমাদের জন্য একটি সাধারণ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, শুধু অবগত করা হয়েছে কাগজ নবায়ন করার জন্য তাছাড়া বন্ধ করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এরই পাশাপাশি আমাদের ইউনিট-২ ও যেহেতু শহরে সেভাবে সেটা ও চলমান রয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করেছি সে বলেছে আমাদের কাগজ অনলাইন করতে হবে সেভাবে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শীঘ্রই আমাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়ে চলে আসবে।

 

শহরের প্রেসিডেন্ট রোডের স্টার লাইফ হাসপাতালের মালিক মো. সেলিম বলেন, আমাদের লাইসেন্সের কার্যক্রম অবহত রয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের সাথে যোগযোগ করেই আমাদের হাসপাতাল চালু রেখেছি। যেহেতু আমার কাগজ পত্র আছে কিন্তু একটু সমস্যা আছে পরিবেশ অধিদপ্তর কাগজের সেই পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন আমাদের বলেছে, আমাদের কার্যক্রম অবহৃত রাখতে।

 

খানপুরের আহিল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কতৃপক্ষ কবিতা আক্তার বলেন, আমরা কাগজপত্র করতে দিয়েছি আমাদের কাগজপত্র এখনো তৈরি হয়ে আসেনি। আর ইতিমধ্যে বা পূর্বে এখনো কোন বন্ধের নোটিশ দেয়নি সিভিল সার্জন সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছি।  

 

দেওভোগের এনসিসি, এসবিএফ কিডনি ডায়ালাইসিস হাসপাতাল ও চলমান অবস্থায় রয়েছে নেই কোন তোয়াক্কা। লাইসেন্স না থাকার কারণে বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালটির ম্যানেজার বায়েজিদ হোসেন বলেন, আমাদের কোন বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়নি। যার কারণে আমরা আমাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছি। আমরা এখনো আমাদের লাইসেন্সের বিষয়ে কিছু জমা দেইনি।

 

কিন্তু শীঘ্রই দিবো আমাদের বেড আগে ছিল ১০ টা এখন হয়েছে ১৫টা আমরা আমাদের ৩য় তলার কাজ শেষ করেই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতাম যেহেতু বর্তমানে অভিযান চলছে আর এটা ও সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত আমি আজকে মেয়র মহোদয়ের সাথে এই বিষয়ে যোগযোগ করবো। এস.এ/জেসি