রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

যানজটের নেপথ্যে ‘মৌমিতা’

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:১৩ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার

 

নারায়ণগঞ্জ শহরে লাগাতার যানজটের মূল কারণটি সবাই জানেন, কিন্তু সাহস করে কেউ বলতে চান না কিংবা পারেন না। ট্রাফিক প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, পথচারি, চাঁদাবাজ, এমনকি পরিবহন মালিক-শ্রমিকরাও এ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল।

 

এ কথা স্পষ্ট যে, যানজট নিরসন হয়ে গেলে পথচারী ছাড়া বাকিদের অবৈধ আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা ইচ্ছে করেই শহরে প্রবেশ এবং নির্গমনের জায়গাটি (চাষাঢ়া চত্বর) সবসময় যানবাহনে ঠাসা রাখতে চায়। ফলে চাষাঢ়া চত্বরে দিনরাত যানজট লেগেই থাকে। এখানে লেগে থাকা যানজট মহামারির মতো ধীরে ধীরে গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে।

 

টানা ৩ দিন ৩ বেলা (সকাল-দুপুর-বিকেল) চাষাঢ়া চত্বরে সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে দেখা গেছে, মৌমিতা পরিবহনের বাস গুলোই যান জটের মূল কারণ। এই পরিবহনের প্রায় শতাধিক বাস খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের সামনে থেকে প্রতি ৫ মিনিট পর পর ছেড়ে আসে। ধীরগতিতে চলতে চলতে চাষাঢ়া চত্বরে এসে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী উঠাতে থাকে। একের পর এক আসতে আসতে ৪/৫ টা বাস চাষাঢ়া এসে গোটা চত্বরটাই দখলে নিয়ে নেয়।

 

ফলে ঢাকা ও ফতুল্লামুখী পথ বন্ধ হয়ে মৌমিতা বাসের পেছনে সব গাড়ি আটকা পড়ে। শুরু হয় যানজট। নিমিষেই তা গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে থেকে স্থবির হয়ে যায় নাগরিক জীবন। ট্রাফিক পুলিশ মৌমিতার এই অনিয়ম দেখেও রহস্যজনক কারণে না দেখার ভান করে অন্যদিকে ফিরে থাকে।

 

দেখা গেছে, চত্বর পেরিয়ে আর্মি মার্কেটের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠাতে থাকে। এই পরিবহনের কোন টিকেট কাউন্টার নেই। একই দৃশ্যের অবতারণা হয় ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের সামনে। ওখানে মৌমিতার অবৈধ স্ট্যান্ড থাকায় রোগীদের আসা যাওয়ার পথেও নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময়ই সেখানে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে।

 

খাঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌমিতা পরিবহনের বাসগুলোর গন্তব্য হলো, নারায়ণগঞ্জ-টু-চন্দ্রা ইপিজেড। ঢাকার হেড অফিস থেকে এই রুটে চলাচলের জন্য ৩০ টি বাসের অনুমোদন নেয়া হলেও এখন চলছে প্রায় শতাধিক বাস। রুট পারমিটে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছিলো তার কোনটাই মানছে না মৌমতার চালক-হেলপাররা। বাসগুলো ছাড়ার কথা ছিলো ২ নং রেলগেট থেকে। কিন্তু কতিপয় পরিবহন নেতা এবং ট্রাফিক প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কব্জায় এনে তারা নিজেদের ইচ্ছা মতো বাস চালাচ্ছে। এস.এ/জেসি