লোকনাথ ডাইংয়ের যাঁতাকলে পিষ্ঠ ইসদাইরবাসী
সাইমুন ইসলাম
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:২৩ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার
পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গ্যাস লাইন কেটে দেওয়ার পরও ক্ষতিকর ঝুঁট পুড়িয়ে চলছে এ ডাইং এর কার্যক্রম ফতুল্লা থানাধীন ফতুল্লা ইউনিয়নের অন্তর্গত ৬ নং ওয়ার্ড এর ইসদাইর বাজার রেললাইন ঘেষে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে লোকনাথ ডাইং নামক একটি ডাইং কারখানা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠা এই ডাইং এর কবলে পড়ে ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।
আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা এ ডাইং এর কালো ধোঁয়ার কারণে বাড়ছে শ্বাসনালীর সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি। অন্যদিকে এ ডাইং এর পানির কারণে শুষ্ক মৌসুমেও হচ্ছে জলাবদ্ধতা। সামনে বর্ষা মৌসুমে এ অবৈধ ডাইং এর ক্যামিকেল মিশ্রিত পানির ফলে সবাই পড়বে ব্যাপক ভোগান্তিতে। রেললাইনের পাশে গড়ে উঠা এ ডাইং পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় এ ডাইং এর ইটিপি ব্যবস্থা নেই। তারা কাঠ ও ঝুঁট পুড়িয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যা একেবারেই নিয়ম বহীর্ভূত। এতে করে কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো এলাকা।
শুধু তাই নয় এসব ডাইং এর কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত পানি ড্রেনের মধ্যে দিয়ে খাল হয়ে নদীতে পৌঁছায়। যা পরিবেশের জন্য মারাত্নক হুমকিস্বরুপ। এর ফলে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এসব ডাইং এর বিষাক্ত পানি রাস্তায় জমে থাকে দিনের পর দিন। এসব পানির সংস্পর্শে আসলে পায়ে ঘা হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হতে হয়। এ ডাইং এর ফলে এ জনপদ অভিশপ্ত হয়ে আছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্যমতে, এ ডাইং এর কারণে দিনের পর দিন কাশি, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন জটিলতায় পড়তে হয়। ডাইং মালিকরা ব্যবসা করে এই এলাকাতেই বাড়ি করেছে কয়েকটা অথচ তাদের এসব প্রতিষ্ঠান এর ফলে এ জনপদের মানুষের অসুবিধা হচ্ছে সেটা তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। এসব ভাবার যেনো কেউ নেই।
এ নিয়ে লোকনাথ ডাইং এর ম্যানেজার রতন এর সাথে কথা বললে গ্যাস এর পরিবর্তে তারা কাঠ ও ঝুঁট পুড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে নেন। তিনি আরোও জানান, আগে গ্যাস ছিলো তবে ইটিপি না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গ্যাস লাইন কেটে দেওয়া হয় যেনো ডাইংটি না চলে।
তবে তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের আদেশের তোয়াক্কা না করে কাঠ ও ঝুঁট পুড়িয়ে তাদের কার্যক্রম চালু রেখেছে বহুদিন ধরেই। এতে করে স্থানীয়রা রয়েছে চরম বিপাকে। কোনো ডাইং আবাসিক এলাকায় দিনের পর দিন নিয়মনীতি না মেনে এভাবে পরিচালিত হচ্ছে এর জন্য অনেকেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এক ডাইং মালিক আক্ষেপ করে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎপরতায় আমার ডাইং বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি কয়েক বছর আগে। তবে এখন এক সাথে এতগুলো ডাইং চলে এলাকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিন্তু নিরব ভূমিকায় পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে ইসদাইরবাসীর প্রাণের দাবি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে বন্ধ করে বিশেষ করে বর্ষার আগে বন্ধ করে ইসদাইরবাসীকে প্রাণ খুলে নিশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। তাদের এমন অভিশপ্ত অবস্থা থেকে মুক্ত করা হোক।
এ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এর যোগাযোগ করতে চাইলে ফোন রিসিভ করেননি। এস.এ/জেসি