মাসদাইর পুলিশ লাইন এলাকার আতঙ্ক ন্যাশনাল ডাইং
সাইমুন ইসলাম
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:০৪ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার
# পরিবেশ অধিদপ্তর এর হস্তক্ষেপ কামনা এলাকাবাসীর
# ইটিপি ও ছাড়পত্র ছাড়াই প্রায় ১০ বছর ধরে চলছে
সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন এর অন্তর্গত ইসদাইর, মাসদাইর, লালপুর, পুলিশ লাইন এলাকাটি জলাবদ্ধতার কারণে প্রায়ই আলোচনা থাকে। ডিএনডি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকার কারণে এমনিতেই জলাবদ্ধতা একেবারে নির্মূল করা যাচ্ছে না। এতে করে প্রায় প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ জনপদের বাসিন্দাদের।
তবে এ দুর্ভোগের সাথে এ জনপদের বাসিন্দাদের ভোগান্তি আরো কয়েকধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে এ এলাকায় অবস্থিত ন্যাশনাল ডাইংটি । সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, পুলিশ লাইন এর চৌধুরী কমপ্লেক্স সংলগ্ন ন্যাশনাল ডাইংটি কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা মান্য না করেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।
এ ডাইং এর কালো ধোঁয়ায় অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে আছে গোটা এলাকা। শুধু তাই নয় ডাইং এর ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র জলাবদ্ধতা আর সেই জলাবদ্ধতার পানি মূলত বিষাক্ত ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি যা কারো সংস্পর্শে আসলে সৃষ্টি হয় নানাবিধ জটিল চর্মরোগ। আর বিষাক্ত ধোয়ার কারণে সৃষ্টি হয় শ্বাসনালীর জটিলতা।
সূত্র মতে, এই ডাইং এর নেই কোনো পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। নেই ইটিপি। তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে এ জনপদের মানুষের জনস্বাস্থ্য। এ ডাইং এর বিষাক্ত পানি ছড়িয়ে গোটা এলাকা জুড়ে। এ ডাইং এর ঠিক পাশেই রয়েছে মসজিদ, গরুর খামার। এ ডাইং এর কবলে পরে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন স্থানীয়রা।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে ইটভাটার উপর জোরালো অভিযান চলছে। এর মাঝেই পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর অবৈধ ডাইংগুলো নিয়েও অভিযান পরিচালিত হবে শীঘ্রই। তবে এত বছর ধরে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এ ডাইং স্থায়ীভাবে বন্ধ না হওয়ায় এলাকা জুড়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, এ ডাইং এর কারণে আমরা দীর্ঘদিন ধরে অনেক সমস্যায় আছি। এদের কালো ধোঁয়ার কারণে আমাদের বুকে সমস্যা দেখা দিয়েছে। নিঃশ্বাস নিতে এখন কষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে এই ডাইং এর কারণে পানি পায়ে লাগলে পা পঁচে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। তবে কারো অসুবিধার কথা চিন্তা না করে তারা তাদের স্বার্থের জন্য ঝুঁকিতে ফেলছে গোটা এলাকার বাসিন্দাদের। যা মোটেও কাম্য নয়। তিনি এ ডাইং বন্ধ করে দিয়ে এ এলাকার মানুষদের এ অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তির দাবি জানান।
আরেকজন জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে তাদের অরাজকতা। তবে এ ডাইং নিয়ে মালিক সাইফুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ না করতে পারলেও এ ডাইং এর ম্যানেজার মিন্টু জানান, ২০১৫ সাল থেকে এ ডাইংটি চলছে। যদিও ইটিপি নেই তবে ইটিপির কার্যক্রম চলছে। ছাড়পত্রের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তবে এলাকাবাসী চায় এসব অবৈধ ডাইং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাকে অভিশাপ মুক্ত করা হোক। এখন দেখার বিষয় পরিবেশ অধিদপ্তর এলাকাবাসীর এ সমস্যা সমাধানে কি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারা এসব ক্ষতিকর প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ দেখতে চায়। কারণ জরিমানা করা হলে তারা পুনরায় এসব কার্যক্রম চালু রাখে। এস.এ/জেসি