মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জনগণ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:৫৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার
নগরীতে বেড়েছে মশার উপদ্রব। শুধু রাতের বেলাতে নয় দিনের বেলাতেও মশার উৎপাত নগরীর বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে। মশার উৎপাত থেকে বাচার জন্য নগরবাসীর কাছে দিনের বেলাতেও মশারি টানিয়ে ঘুমানো নতুন দৃশ্য নয়। তবে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ নগর বাসি। ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও নেই স্বস্তি।
এমন অবস্থায় সিটি করপোরেশন থেকে মশা নিধনে উদ্যোগ গ্রহন করলে নগরবাসীর অভিযোগ মিলছে না কোনো সুফল। এছাড়াও তারা বলছে মশা নিধক কর্মীদের ঔষধ দিতে দেখে না। এদিকে জনপ্রতিনিধিরা বলছে এখনোও সিটি করপোরেশন থেকে তাদেরকে মশা নিধকের কোনো ঔষধ দেওয়া হয়নি।
নগরবাসীদের ভাষ্যমতে, শীতের শেষ এ দিক থেকে শুরু করে এখন পযর্ন্ত রাতের বেলা তো দূরের কথা দিনের বেলাতেও ঘরে বা বাহিরে বসা যায় না। এতো মশা যে মশারি টানিয়ে ঘুমালেও কোনো কাজ হয় না। মশা মারার জন্য আগে হ্যান্ত স্প্রে দিয়ে ঔষধ দিতো এখন তাও দেয় না। বড় বড় কালো মশার কামড়ে বাচ্চা আর প্রাপ্ত বয়স্ক কি সবারই কামড়ানো স্থানে ফুলে লাল হয়ে যায়। মশার জ্বালায় মানুষ এখন এক জায়গায় ঠিক মতো বসতে পারে না। মশা মরার বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করলেও তাও কমে না।
এ বিষয়ে হাসেম নামে এক ব্যক্তি বলেন, কি দিন আইলো। মশার কামড়ের কারণে বাঁচা যায় না। শুধু আমাদের এখানে না। সব জায়গায় মশার কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হইয়া গেছে। সিটি করপোরেশন থেকে যে মশার ঔষধ দেওয়া হয় সেটা দিলে কোনো কাজ হয় না। কর্মীরা ঔষধ দেওয়ার পর পরই মশা থাকে না। কিন্তু তারা যাওয়ার আধা ঘন্টা পরই আবার যেমন পরিবেশ ছিলো তেমন হয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং প্যানেল মেয়র-১ যুগের চিন্তাকে বলেন, মশার উপদ্রব বেড়েছে এ কথাটা সত্যি। প্রতিদিন সকালে আসলে দেখতে পাবেন আমার ওয়ার্ডে পাঁচ জন মশা নিধক কর্মীরা এলাকার প্রতিটি জায়গা মশার ঔষধ দিচ্ছে। কিন্তু তার উপর ও কেনো মশা কমছে না এটা জানি না।
এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান বলেন, আমরা নিয়মিত মশার ঔষধ দিচ্ছি। এছাড়া এলাকাতে যেসব জায়গাতে ময়লা-আবর্জনা ছিলো সেজায়গা পরিষ্কার করেছি এবং এলাকবাসীদের বলেছি তারা যেন ময়লা জমিয়ে না রাখে। এভাবে আমি চেষ্টা করছি যেন মশা কমে যায় তবে বর্তমানে মশা নিধকের ঔষধের দিক থেকে সিটি করপোরেশনে একটি ঘাটতি রয়েছে। যে তারা এখনো ঔষধ আমাদের দেয় নি। ট্রেন্ডার এখনো আসেনি। তবে খুব তাড়াতাড়ি আশা করছি ঔষধ হাতে পেয়ে যাবো। আগে যে ঔষধ রয়েছে আমি সেগুলো দিয়েই কাজ করছি। এছাড়া আমার ওয়ার্ডে মশা নিধকের কর্মীও কম।
এ দিকে মশা উপদ্রব বেড়েছে ১২নং ওয়ার্ডেও। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে নাসিক ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলেন, আমি নিজেই হাতে মশার কয়েল নিয়ে বসে আছি। এতো মশা। এখন সিটি করপোরেশন থেকে কেনো আমাদের মশার ঔষধ এখনো দেয়নি তা আমি জানি না। আমার জানা মতে, মশার ঔষধের ট্রেন্ডার হয়েছে আরো ৪-৫ মাস আগে কিন্তু কেন এখনও আমাদের ঔষধ দিচ্ছে না। এলাকাবাসী যখন সেবা নিয়ে প্রশ্ন করে তাহলে খুব খারাপ লাগে। সিটি থেকে যদি আমাদের এখন ঔষধটা দেওয়া হতো তাহলে হয়তো মশার উপদ্রব এতো বাড়তো না।
মশা নিধকের বিষয়ে নাসিক ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহেন শাহ আহম্মেদ বলেন, মশা মারার জন্য আমি প্রতিদিন সকাল-বিকাল ঔষধ দিচ্ছি। তবে যে ঔষধটা দেওয়া হচ্ছে সেটা পাওয়ার কম এ কারণে মশা মরে না।
একই দৃশ্য দেখা গেল নাসিক ২২ নং ওয়ার্ডেও। এই ওয়ার্ডবাসী বলেন রাতের বেলাতে মশার কামড় থেকে মশারির কারণে বাঁচতে পারলেও দিনের বেলাতে একদম আতঙ্কে থাকি। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেভাবেই ঔষধ এলাকার বিভিন্ন জায়গা বা ডোবাতে ছিটিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া আমার এলাকার লোক আমাকে যেখানে যে সময় মশার ঔষধের কারণে ডাকছে আমি সাথে সাথে আমার লোক সেখানে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হোসেন এবং শ্যামল চন্দ্র পাল এর মুঠোফোনে বহুবার ফোন দিলেও তারা ফোন কলটি রিসিভ করেননি। এস.এ/জেসি