শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সবজির দাম কমলেও নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখি

শ্রাবণী আক্তার

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:১৭ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার

 

বসন্ত আসতেই সবজির দাম অনেকটাই কমেছে। এ বছর শীতে শীতকালীন সবজির দাম তুলনামূলক বেশি ছিল। তবে এ সপ্তাহে কাঁচাবাজারে ফিরেছে স্বস্তি। শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমলেও বাড়তে শুরু করেছে মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দাম। এদিকে মাছের দাম বাড়ায় বাড়তে শুরু করেছে শুঁটকির দামও। আলু, বেগুন, টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর সহ প্রতিটি সবজির কেজিতে ১০ থেকে  ১৫ টাকা কমেছে। 

 

নগরীর পাইকারী দিগুবাবুর বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, আলুর কেজি ২৫-৩০ টাকা, প্রতি কেজি শিম ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিছ ৩০ টাকা, বড় সাইজের প্রতি পিছ ফুলকপি ২০-২৫টাকা, মূলা ২০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, গাজর ২০ টাকা। তবে এখনও কিছু সবজির দাম চওড়া। যেমন- লতি ৯০ টাকা, মটরশুঁটি ৭০ টাকা ও করোলা ৮০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকা। ক্রেতারা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অপেক্ষায় আছেন। আশা করছেন আমদানি হলে পেঁয়াজের বাজারের উত্তাপ কিছুটা কমবে।

 

রোজা আসার আগেই বেড়েছে শসা, লেবু ও পুদিনা পাতার দাম। শসার কেজি ৫০ টাকা, প্রতি হালি লেবু ৪০-৫০ টাকা, পুদিনা পাতা ১ আঁটি ৪০ টাকা। এছাড়াও ছোলার কেজি ১১০ টাকা, বুটের বেসনের কেজি ১৪০ ও এংকর ডালের বেসন ১২০ টাকা।

 

মাছ বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ২০০-২৫০ টাকা, পাঙ্গাস মাছের কেজি ২০০ টাকা, টেংরা মাছের কেজি ৭০০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ টাকা। প্রতি কেজি মাছে প্রায় ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে।

 

বিক্রেতারা বলছে, একে তো শীতে মাছের দাম সব সময় বেশি থাকে। আবার বাজারের রাস্তার পাশে মাছ বাজার উঠে গেছে যার কারণে মাছের দাম বাড়তি।

 

জানা যায়, মাছের দাম বাড়ায় বাড়তে শুরু করেছে শুঁটকির দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি শুঁটকির দাম বেড়েছে  ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এ সপ্তাহে লইট্টা ১০০০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা ও টেংরা মাছের শুঁটকি ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

শুঁটকি বিক্রেতা জানান, যেসব শুঁটকির চাহিদা বেশি সেসব শুঁটকির দাম একটু বেশি। মাছের দাম বাড়ায় আমাদের দাম দিয়ে শুঁটকি কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বেশি দামেই বিক্রি করছি।

 

গত সপ্তাহে ১ কেজি মুরগি ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে ২১০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। লাল লেয়ার ৩২০ ও কক মুরগির কেজি ৩৫০ টাকা। পাইকারী বাজারে ১ হালি মুরগির ডিমের দাম ৪৫ টাকা তবে খুচরা মূল্যের ব্যবসায়ীরা ৪৮ টাকায় বিক্রি করছেন।

 

খানপুর বউ বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি কেজি সবজির দাম পাইকারি বাজারের চেয়ে ১০-২০ টাকা বেশি। মাছ ও মুরগির ক্ষেত্রেও তাই। তবে বেশির ভাগ দোকানগুলোতে এখনও ছোলা আনেনি বিক্রেতারা। এক ব্যবসায়ী জানান, শবে বরাতের পর দোকানে রোজার সকল পণ্য উঠাবেন। কয়েকটি দোকানে ছোলা পাওয়া গেলেও তুলনামূলক দাম বেশি।

 

বাজার করতে আসা গৃহিনী রুবিনা জানান, সবজির দাম কম থাকলেও মাছ মাংসের দাম বাড়তি। একটার দাম কমলে আরেকটার দাম বেড়ে যায় তাই বাজারে আসার আগে অনেক চিন্তা ভাবনা করে আসি। আগের মতো নিজের ইচ্ছা মতো বাজার করতে পারি না যেটা বেশি প্রয়োজন শুধু সেটা কিনেই চলে যেতে হয়।

 

দিনমজুর মহিউদ্দিন বলেন, রোজা আসলে জিনিসের দাম বাইড়া যায় ভাবলাম আগেই বুট, ডাইল, বেসন কিন্না ফালাই আইয়া দেহি এহনি দাম বাড়তি। কি আর করমু এহন আধা কেজি কইরা কিন্না লইয়া যাইতাছি।

 

শুঁটকি কিনতে আসা মিনা বেগম শুঁটকির দাম শুনে বলেন, মাছের দাম বেশি দেইখা ভাবলাম শুঁটকি কিনে নিয়ে যাই আইসা দেখি শুঁটকির দাম আরো বেশি। কি একটা অবস্থা, সবজির দাম কমছে কিন্তু মাছের দাম আগের থাইকা বাইরা গেছে। এস.এ/জেসি