শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চাষাড়ায় অটোরিক্সা চালক ইউনিয়নের নামে রমরমা চাঁদাবাজি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৪১ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার

 

নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় গড়ে উঠেছে অবৈধ সিএনজি, অটো ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড আর সেই সাথে তাল মিলেয়ে ক্রমেই বেড়ে চলছে এই অবৈধ যানবাহন। এর ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে যানজট তাতেই নাকাল অবস্থায় নগরবাসী। আর এই অবৈধ যানজটকে ঘিরে তৎপর হয়ে উঠেছে নামে বেনামে কিছু ট্রাফিক পুলিশ ও কিছু নামধারী সংগঠন

 

অসহায় সিএনজি, অটো, ইজিবাইক চালকদের শহরে প্রবেশ করতে দেবার স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনই একটি চিত্রের দেখা মিলেছে চাষাড়ার সরকারি মহিলা কলেজের সামনে অবস্থিত সিএনজি স্ট্যান্ড যেখানে প্রায় অর্ধশত সিএনজি নারায়ণগঞ্জ জেলা অটো রিক্সা ইউনিয়নের নামে পরিচালনা হয়। সেই বরাতেই চাষাড়া টু পঞ্চবটী সড়কে চলাচলকারী কয়েকশত ইজিবাইক পুলিশের নাকের ডগাড় সামনে দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলাচল করছে।

 

সেই সকল ইজিবাইকগুলোকে ট্রাফিক পুলিশে দ্বায়িত্বে নিয়োজিত কোন সদস্য আটক করে না। কারণ দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ২টায় প্রতিটি ইজিবাইক থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে সেই জেলা অটো রিক্সা চালক ইউনিয়নের আওতাধীন নিয়োগ পাওয়া ভাঙ্গরী নুরার সহযোগী দুধু, জিয়া, মঞ্জু, বাবুল এদের নেতৃত্বে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২০ টাকা আর বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২০ টাকা করে নিয়মিত অটো প্রতি তোলা হয়।

 

জানা গেছে, নিয়মিত দুই দফায় চাষাড়া টু পঞ্চবটী রোডের অটো থেকেই তোলা হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা যা মাস শেষে এসে দাঁড়ায় কয়েক লাখ টাকার উপরে এসে। অপর দিকে প্রায় অর্ধশত সিএনজি স্ট্যান্ড রয়েছে যেখান থেকে নিয়মিত সিএনজি প্রতি সংগঠনের ধার্যকৃত মূল ২০ টাকা কিন্তু এই কতপিয় নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিরা অনেকের কাজ থেকে ডাবল বিল আবার কারো থেকে ৩০ টাকা করে তোলার ও অভিযোগ রয়েছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলেছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি চাষাড়া প্রেসক্লাবে যানজট নিরসনের গোল টেবিল বৈঠকের পরই সরকারি মহিলা কলেজের সামনে থাকা সিএনজি স্ট্যান্ডটি রেললাইনের ঘন্টা ঘরের সামনে গিয়ে আশ্রয় নেয়। কিন্তু অটো ও ইজিবাইকগুলো জায়গা ফাঁকা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, আর তাদের শেল্টার দিচ্ছে সেই নারায়ণগঞ্জ জেলা অটো রিক্সা ইউনিয়নের যাটজট নিরসনে নিয়োগকৃত সদস্যরা। তারা নিয়মিত হাজার হাজার টাকা সংগঠনের নামে চাঁদা উঠিয়ে চাঁদার মহোৎসবে পরিণত করেছে এই সড়কটিকে।

 

এদিকে শুধু এই সড়কেই ক্ষান্ত নন এই সংগঠনের লোকেরা। তারা বিশ্ব রোডের রাইফেল ক্লাবের সামনে, তার উল্টো পাশে শীতল কাউন্টারের সামনে। তারা যানজট নিরসনের নামে শহরে একটি নিরব চাঁদাবাজি করে আসছে। তারা বিভিন্ন প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা তোলায় ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা ও তাদের কাছে অসহায়। আবার বহু ট্রাফিক পুলিশের সাথে আতাঁত করে ও এই মঞ্জু, বাবুল, জিয়া, দুধু তাদের চাঁদাবাজি চালু রেখেছেন।

 

এ বিষয়ে জানতে কয়েকজন অটো রিক্সা চালককে জিঙ্গেস করলে তারা বলেন, মঞ্জু ভাই জিয়া ভাই তারা সবাই আমাদের এখানে বসতে বলেছে আর এখান থেকে নিয়মিত পঞ্চপটি লোক উঠাতে তারা সাহায্যে করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এক বেলায় ২০ টাকা পরের বেলায় ২০ টাকা মোট ৪০ টাকা তাদের দিয়ে থাকি।

 

যার কারণে এখানে আমরা যেভাবেই এসে দাঁড়াই না কেন কোন ট্রাফিক পুলিশ ও আমাদের কিছু বলতে পারে না, যদি আশেপাশের সব জায়গায় নিয়মিত অটো চালাকদের উপরে বহু নির্যাতন হয় কিন্তু আমরা ডাম্পিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিয়মিত দাঁড়াচ্ছি কোন অসুবিধার সম্মূখিন হতে হয় না। আমি মনে করি ৪০ টাকার জায়গায় তাদের ৫০/৬০ টাকা নিয়মিত দিলে ও আমাদের উপকার ছাড়া ক্ষতি নেই।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা অটো রিক্সা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জুলহাস যুগের চিন্তাকে বলেন, আমাদের সংগঠন থেকে শুধু সিএনজি এর থেকে নিয়মিত ২০ টাকা করে তোলা হয়। এর বেশি আর কিছুই না, আমরা অটো থেকে কোন প্রকারের টাকা উঠাই না। যদি এমন কেউ উঠিয়ে থাকে প্রমাণ পেলে আমরা তাদের বহিষ্কার করবো।

 

নিয়মিত চাঁদা উত্তোলনকারী মঞ্জু বলেন, আমরা সিএনজি ও অটো থেকে নিয়মিত যে টাকা উত্তোলন করি এটা আমাদের সংগঠন থেকে। আমাদের সংগঠনের সভাপতি সেলিম ভাই ও সেক্রেটারী জুলহাস ভাইয়ের নির্দেশনায় আমরা এখানে অটো রিক্সা চালক ইউনিয়ন সংগঠনের নামে টাকা তুলি। এস.এ/জেসি