সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সন্ধ্যা নামলেই ভয়ঙ্কর জেলা কারাগারের আশপাশ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:০৪ পিএম, ৪ মার্চ ২০২৪ সোমবার

 

# ধারাবাহিক ছিনতাইয়েও তৎপরতা নেই পুলিশের
# জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে দেখছি : ওসি ফতুল্লা

 

ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের আশপাশ। তাদের উৎপাতে রীতিমতো ঘর থেকে যেনো বের হওয়াই দায়। সন্ধ্যা নামলেই ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়তে থাকে সেখানে। ধারাবাহিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও দৃশ্যত কোনো তৎপরতা নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এ নিয়ে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা নানা সমালোচনা করলেও পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে তারা।

 

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কস্থ সাব রেজিস্টার অফিস ও জেলা কারাগারের মধ্যবর্তী স্থানে ইমন নামে এক যুবককে কুপিয়ে তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এর আগে, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে একই স্থানে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই গার্মেন্টসকর্মীর বেতনের টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এছাড়াও হরহামেশাই এখানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা নামলেই পুরো নীরব হয়ে পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস এলাকা। মধ্যবর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনের সড়কের দুই পাশ ও থাকে ফাঁকা। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় মাদকসেবীরা ছোট ছোট দলে বসে মাদক সেবন করছে। অন্ধকার থাকায় এই রাস্তাগুলো মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের পছন্দের স্থান বলে জানান সচেতন নাগরিকরা।

 

স্থানীয় বাসিন্দা আরমান হাসান জানান, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। অফিসের কাজে আমাকে অনেক সময় রাতে বাসায় ফিরতে হয়। আগে কখনো এই রাস্তায় হাঁটতে ভয় পাইনি, কিন্তু এখন পাই। এখানে দলবেঁধে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আড্ডা দেয়। বিশেষকরে, কিশোরদের উৎপাতটা একটু বেশি। ওরা রাস্তার মধ্যেই মাদক সেবন করে!

 

আহম্মদ নামে এক দোকানদার বলেন, এখানে দু’একটি নয় বরং বেশ ক’টি বহিরাগত গ্রুপ রাস্তার দুইপাশে প্রতিনিয়ত আড্ডা দেয়। ওরা সকলেই মাদকসেবী। রাস্তার মধ্যেই এরা গাঁজা সেবন করে। তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে রাস্তায় মাথা নিচু করে চলতে হয়। কেউ তাদের বাধা দিলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়।

 

তিনি আরও বলেন, এখানে যারাই ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে তারা সবাই এলাকার বাইরের কিশোরগ্যাং ও মাদকসেবী। রাতে যারা আড্ডা দেয় মূলত তারাই এখানে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো ঘটায়। এই রাস্তাগুলো কিছুটা অন্ধকার হওয়াতে মূলত তারা এ সকল সুযোগগুলো নেয়। পুলিশ-প্রশাসনের উচিৎ জরুরী ভিত্তিতে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।

 

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। এমন কিছু হলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এস.এ/জেসি