অবৈধ হয়েও চলছে মেডিএইড ডায়াগনস্টিক
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৪:২৩ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২৪ বুধবার
# প্যাথলজিস্ট না রেখেই নাম চলছে ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম
# বিগত ৩ বছর যাবৎ লাইসেন্স নবায়নবিহীন
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর হাসপাতালের অদূরে কাজিপাড়া বটতলা এলাকার আনাচে কানাচে নোংরা পরিবেশে হুটহাট গড়ে উঠেছে লাইসন্সেবিহীন ক্লিনিক-হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তা ছাড়া পাশেই সরকারি ৩শ’ হাসপাতালে থাকা কিছু ডাক্তার ও দালালদের ম্যানেজ করে এই ছোট একটি খানপুরে এই ৩’শ শয্যা হাসপাতালের শেল্টারে গড়ে উঠেছে শত শত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদিকে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠলেও ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নিয়ে কিছুটা থাকলে ও কিছুটা নেই।
জানা গেছে, গত (১০ মার্চ) খানপুরের আল-হেরা হাসপাতালে চিকিৎকের ভূল চিকিৎসায় প্রাণ হারায় মোস্তাকিম নামের এক ফুটফুটে শিশু যা নিয়ে নগর জুড়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। এর পাশেই স্থাপিত আছে মেডি এইড ডায়ানস্টিক সেন্টার। যার নেই কোন কাগজের বৈধতা ২০০৭ সালে নগর খানপুরের আমেনা ভবনে লাইসেন্স নিয়ে চালু হয়ে মেডি এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার আজকে প্রায় ৩ বছর যাবৎ লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই দেদারসে চালু রয়েছে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। তা ছাড়া এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই কোন নিজস্ব প্যাথলজিস্ট।
কিন্তু নিয়মিত নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে প্যাথলজিস্ট ছাড়াই। এদিকে দীর্ঘদিন লাইসেন্স নবায়নবিহীন সহ নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অল্প কিছুদিন পূর্বে সিভিল সার্জনের অভিযানে সিলগালা হওয়া মেডি এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যা সিলগালা করার ঘন্টা খানিক পরই সিভিল সার্জনের অভিযানকে তোয়াক্কা না করেই তালা ভেঙ্গে চালু করা হয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও অনলাইন মিডিয়া প্রকাশ ও সংবাদে বা গত দুই দিন পূর্বে ভূল চিকিৎসায় ঝড়ে পড়া মোস্তাকিমের লাশের পড়ে ও টনক নড়েনি নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের।
সূত্র মতে জানা যায়, গত (২৭ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে শহরের খানপুরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল লাইসেন্সেবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলাতে অভিযান দেন সেখানে তারা অভিযুক্ত আয়েশা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইমন যার বর্তমান নাম আহিল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মেডি এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সিলগালা করে দেওয়া হয়। কিন্তু এর পর আয়েশা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে আর তাদের হাসপাতাল খুলতে দেখা যায়নি।
কিন্তু মেডি এইড ও ইমন ওরফে আহিল ডায়াগনিস্টক সেন্টারকে ঠিকই তালা ভেঙ্গে খুলতে দেখা গেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দফায় দফায় সিলগালা বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর গত (৪ মার্চ) আহিল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অস্থায়ী কালের জন্য বন্ধ ও মালিককে ৭ দিনের কারাদন্ড প্রদান করেন ভোক্তা অধিকার ও ভ্রাম্যমান আদালত। সেদিন মেডি এইডের মালিক আজাদুল ইসলাম (আযম) তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার মেডি এইডে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে ছিলেন। সেদিন কোন মতে বেঁচে যাওয়ায় আর ভ্রাম্যমান আদালত তার ডায়াগনিস্টকের দিকে না যাওয়ায় উনি বেঁচে যায়। এর পর থেকে নিয়মিত দেদারসে চালু রেখেছে নবায়নবিহীন মেডি এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এদিকে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ও অবগত রয়েছে তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা বা সেখানে কোন প্যাথলিজস্ট বা ভালো সরঞ্জাম নেই। কিন্তু নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা কে পরিচালনা করছেন এমনই প্রশ্ন রয়েছে আশেপাশের বাকি ডাক্তার বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর। তিনি ও আহিলের মালিক রবিনের মতো করে নিজেই নানা প্রকারের পরীক্ষা বা নানা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন এমন প্রশ্ন রয়েছে ডায়াগনস্টিক জুড়ে।
তা ছাড়া সিভিল সার্জন কর্তৃক শোনা যাচ্ছে উনি লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন সব যথাযথভাবে ঠিক করেছেন। কিন্তু তার বিষয়ে নানা অভিযোগে তার সেই কাগজপত্র নবায়ন হবে না বলে ধারনা করা হচ্ছে। কিন্তু এটা উনি জেনেও নানাভাবে লবিংয়ের মাধ্যমে সিভিল সার্জনের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই দেদারসে চালু রেখেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। কিভাবে ৩ বছর লাইসন্সে নবায়ন না করে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এই মেডি এইড প্রচলিত হচ্ছে তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন অনেকেই দোষ দিচ্ছেন সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান যুগের চিন্তাকে বলেন, মেডি এইডের লাইসেন্স নবায়নের সকল কার্যক্রম উনি চালু রেখেছেন। কিন্তু উনার এটা নবায়ন দেওয়া হবে কিনা এটা স্বাস্থ্য বিভাগের বিষয়। আর কিছুদিন পূর্বে এটা আমরা সিলগালা করে দিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু তাকে পূনরায় চালু রাখার কোন পারমিশন দেওয়া হয়নি। এস.এ/জেসি