শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সবুজ-শহিদে অতিষ্ঠ কাশীপুরবাসী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪০ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২৪ শনিবার

 

# তাদের মাদকের ছোবলে নষ্ট হচ্ছে যুবসমাজ
# মাদকের স্থান থেকে রাস্তা পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাস্থ কাশীপুর ইউনিয়নের এলাকায় হাত বাড়ালে খুব সহজেই মাদকদ্রব্য মিলছে। মাদক সরবরাহকারীরা কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে একটি চক্রের ছত্রছায়ায় এই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারির হোতা তাঁতিপাড়া এলাকার বদুর ছেলে সবুজ মিয়া ও তারই সহযোগী শহিদ ওরফে বোগা শহিদ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

 

এরা বাবুরাইল থেকে শুরু করে তাঁতিপাড়ার বট তলা এলাকা, মুন্সিবাড়ির নতুন রোড, আমবাগান, ইব্রাহীম ব্রিজের ভিতরের বিভিন্ন গলিতে, হোসাইনী নগর এলাকাসহ বাংলাবাজার এলাকার ব্যাংক কলোনীর আশেপাশের এলাকাগুলোতে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, প্রভৃতি রকমারি মাদক বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এলাকায় বিক্রি করানো হচ্ছে। এদিকে সুবজের আত্মীয় মামুনের দ্বারা কাশীপুরের আওতাধীন কয়েকটি মাদক চিহ্নিত এলাকায় মাদক সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে।

 

যাকে ঘিরে কাশীপুরের যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ধেয়ে আসছে। অপর দিকে এই সবুজ ও শহিদ বাহিনী বর্তমানে মাদক কারবারির পাশাপাশি ইট-বালু-সিমেন্টের ব্যবসা পরিচালনা করছে। যার মাধ্যমে বাড়িওয়ালাদের জিম্মি করে তাদের থেকে ইট-বালু-সিমেন্ট না নিলে দেয় নানা হুমকি আবার যদি তাতেও কোন কাজ না হয়। সেই অবস্থায় তার পালিত লোকজন দিয়ে তাদের বাড়ি ঘরে হামলা করানো হচ্ছে।

 

তা ছাড়া ও এই বাহিনীর প্রতি সদস্য স্থানীয় নয় সকলেই ভাসমান যার কারণে তাদের দিয়ে কয়েক গ্রুপে কিশোরগ্যাং তৈরি করে বাবুরাইল থেকে ইব্রাহীম ব্রিজ পর্যন্ত দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে এখানকার অলিগলি। বর্তমানে এই সবুজ-শহিদ বাহিনীতে অতিষ্ট হয়ে পরেছে কাশীপুরবাসী। সকলেই তাদের পরিত্রানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ বাবুরাইল থেকে তাঁতিপাড়া ও তার আশেপাশের এলাকাগুলোতে আত্মগোপনে নানা প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন সবুজ মিয়া ও তার ভাই সুমন। বট তলার কিছুটা অদূরে একটি গলির মধ্যে এই সবুজের বসবাস। এলাকায় বিভিন্ন আত্মীয়ের ছোট ছোট রুম ভাড়া নিয়ে মাদকের আস্থানা সৃষ্টি করেছেন। তা ছাড়াও এলাকার এই গলি দিয়ে ডুকলেই আগে দেখা মিলে সবুজের পালিত কয়েকটি গার্ড। তারা নিয়মিত সেই গলি পাহারা দিয়ে থাকে।

 

অপর দিকে এই সবুজ বর্তমানে গার্ডের পাশাপাশি এলাকা থেকে বট-তলা পর্যন্ত ফিটিং করেছে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সবুজ বাহিনী এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বহুদিন যাবৎ। তা ছাড়া এই সবুজকে শুধু রাত ২টা বা ৩টা ছাড়া এলাকায় দেখা যায় না বলে ও জানা গেছে। তা ছাড়া ও তাদের নিয়ন্ত্রণে এলাকাসহ কিছু অসাধু প্রশাসন থাকার কারণে তাদের কাছে জিম্মি এলাকাবাসী। প্রতিবাদ করলেই এলাকা ছাড়তে হবে এমনই ভয়ে নিশ্চুপ এলাকার সাধারণ জনগণ।

 

অপর দিকে শহিদ ওরফে বোগা শহিদ তিনি ও সবুজের ছাত্রছায়ায় থেকে বিভিন্নভাবে এলাকায় ত্রাসের জন্ম দিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে, তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসার পাশাপাশি মানুষদের ফিটিংসহ বর্তমানে এলাকাবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে ইট-বালুর মাধ্যমে, এলাকায় কেউ বাড়ি করতে হলেই নিতে হয় এই শহিদের থেকে ইট-বালু সিমেন্ট যদি কেউ নিতে রাজি না হয় তাদের উপর জোর প্রয়োগ করা হয়।

 

প্রসঙ্গত কিছুদিন পূর্বে আমবাগান ইব্রাহীম ব্রিজ এলাকায় কয়েকটি নতুন বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে নানাভাবে সেই বাড়ির মালিকদের লোক দিয়ে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বকভাবে উচ্চ মূল্যে ইট-বালু-সিমেন্ট দিয়ে আসছে। তা ছাড়াও তার লোক দ্বারাই দিচ্ছে ফ্লাটের বাকি ইলেকট্রনিক্স ও পাইপ ফিটিং এর কাজ। যাকে ঘিরে ইলেকট্রিশিয়ান একজনকে কাজ দিয়ে তার কাছ থেকে দুই দফায় প্রায় লাখ টাকার মতো আদায় করেছে এই শহিদ।

 

এমনভাবে নতুন বাড়ি করলেই এলাকায় ঢুকে পুরো বাড়ির কাজ করতে বাড়িওয়ালাকে হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখায়। পরবর্তীতে সকল কাজ তিনি তার লোক দিয়েই করায়, আর তাদের থেকে ও হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। এই শহিদ বর্তমানে মাদকের পাশাপাশি এলাকায় এইসব কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন।

 

এদিকে বর্তমানে কাশীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এই সবুজ ও শহিদ বাহিনীর লোকেরা মাদক বিক্রি চালিয়ে আসছেন আলাদা আলাদা মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে জানা গেছে, বাবুরাইল তাঁতীপাড়া বটতলা এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন শহিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী লিটন, মুন্সিবাড়ী নতুন রোডে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন পলাশ নামের এক মাদক ব্যবসায়ী তা ছাড়া এই পলাশ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক রেহান শরীফ বিন্দুর বাড়ির আশে-পাশে এই ব্যবসা পরিচালনা করলে ও নেই তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযান।

 

অপর দিকে হোসাইনী নগর এলাকা থেকে শুরু করে ইব্রাহীম ব্রিজ এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন সেন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক বিক্রি হয় এখানে মূল হোতা সেই জোড়া খুন মামলার আসামী শহিদের লোক হিসেবে পরিচিত ওয়ান পিস ফয়সালসহ আরো বহু মাদক ব্যবসায়ীগুলোর মাধ্যমে এই এলাকায় মাদক বিক্রি হয়। ৬ থেকে ৭টি গ্রুপের মাধ্যমে। বাংলাবাজার এলাকার ব্যাংকলোনী এলাকায় মাদক বিভিন্ন দোকানে ও পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে তাদের নিয়ন্ত্রণে আসছে কাশীপুরের মাদকসহ ছোট ছোট যাবতীয় ব্যবসা যাকে ঘিরে নিজেদের পরিবারের লোক নিয়ে ভয়ে আতঙ্কে এলাকাবাসী।

 

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ নূরে আযমের মুঠোফোনে একাধিক কল করতে চাইলে ও তার ফোনে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এস.এ/জেসি