বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বত্র জুয়ার ক্ষতিকর প্রভাব

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৫৮ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২৪ শনিবার

 

 

শুরু হয়েছে আইপিএল। শুক্রবার চেন্নাই সুপার কিংস ও রয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গলোরের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠলো আইপিলের ১৭তম আসরের। লীগের এই খেলাগুলো ভারতে অনুষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশে পড়ছে এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র বিগত সময়ের মতো আইপিএলে প্রতিটি ম্যাচ নিয়ে জুয়া খেলতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ জুয়ারী পর্যন্ত।

 

গতকাল সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনগুলোর তুলনায় এদিন চায়ের দোকান ও হোটেলগুলোর সামনে প্রচন্ড জটলা। টিভিতে চলমান আইপিএলের প্রথম ম্যাচ। সেখানে বসে দাঁড়িয়ে কেউ চা খাচ্ছেন তো কেউ অন্য কিছু। কেউ আবার কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন খেলা। তাদের মধ্যে খেলা নিয়ে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। চায়ের দোকানগুলোতে উপস্থিত মানুষগুলোর মধ্যে এক ধরণের অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেলো। দেখা গেলো, খেলা নিয়ে বারংবার মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন তারা। এদের মধ্যে কেউ বলছিলেন, আরসিবি তো নিলাম কিন্তু আর একটু আগে নিলে বোধহয় ভালো হতো। আবার কেউ বলছিলেন, চেন্নাইয়ে ৫ মেরে রাখছি ভালোই হইছে। কথাগুলো শুনে কৌতুহলী হলেও এই কথাগুলোই হচ্ছে জুয়ার সাংকেতিক ভাষা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে অন্যান্য লীগের তুলনায় সবচেয়ে বেশি জুয়া মাথা চাড়া দিয়ে উঠে আইপিএল এর সময়। প্রতি বছর আইপিএলকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের অলিগলি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণসব জায়গাগুলোতে কোটি কোটি টাকার জুয়ার ব্যবসা চলে থাকে। সেই জুয়া নানাভাবে হয়। দলের হার-জিত, পরের বলে কতো রান বা ছয়-চার হবে কি না, পরের ওভারে ব্যাটসম্যান আউট হবেন কি না। একজন বোলার কতো উইকেট পাবেন বা ব্যাটসম্যান কতো রান করবেন, দলের রাত কতো হতে পারে এবং নির্দিষ্ট দল কতো রান বা উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভ করতে ইত্যাদি ইত্যাদি। বাজির সব দরদাম ঠিক হয় মোবাইলে থাকা বিভিন্ন এ্যাপস বা বেটিং সাইটের মাধ্যমে।

 

এদিকে, আইপিএলের এই রমরমা জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করে সেখানে জড়িয়ে পরেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী,যুবক ও ব্যবসায়ীসহ অনেকেই। এছাড়াও সমাজের শ্রমজীবী মানুষ, যারা আগে ‘দিন আনে দিনে খায়’ তারাও এই জুয়ার জালে পড়ে হারাচ্ছেন কষ্ট করে জমানো সামান্য পুঁজিও। অনেকেই আবার জুয়ার খপ্পরে পরে যখন নিঃস্ব হচ্ছেন তখন জুয়ার পুঁজি যোগাতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডেও জড়িয়ে পরছেন। এছাড়াও স্কুল-কলেজের কোমলমতি ছাত্ররা বিপথগামী হচ্ছেন।

 

অপরদিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ব্যাটিং এ্যাপসের মাধ্যমে ঘরে বসেও জুয়া খেলা যায় এমন মনোভাব থেকেই মূলত আরও বড় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার ফলে, এখন আর উপর থেকে দেখে কোন ভাবেই বোঝা সম্ভব নয় যে, সে জুয়ারী! এস.এ/জেসি