ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যেসব পয়েন্টে রয়েছে ভোগান্তির আশঙ্কা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৩:৫৯ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২৪ রোববার
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ততম মহাসড়ক। যে মহাসড়ক দিয়ে দৈনিক গড়ে ২০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরও কয়েকগুন বেড়ে যায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। তবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলে যানজটের কবল থেকে রেহাই পেতে পারে যাত্রীরা।
গতকাল শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কের কোথাও কোনো সংস্কার কাজ চলমান নেই। তবে বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও রাস্তা বন্ধ রেখে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
সেইসঙ্গে মহাসড়কের পাশে প্রচুর অবৈধ স্থাপনা থাকায় যানবাহন চলাচলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এদিকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এবারও গ্রামে ছুটবে মানুষ। ফলে তখন মহাসড়কে ছোট বড় যানবাহনের চাপ বাড়বে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের ৮ টি পয়েন্টে যানজটের শঙ্কা করা হচ্ছে। পয়েন্টগুলো হলো সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, মৌচাক স্ট্যান্ড, ১০ তলা ভবন, শিমরাইল মোড়, সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর, বন্দরের মদনপুর, সোনারগাঁয়ের মোঘরাপাড়া, মেঘনাঘাট টোলপ্লাজা এলাকা। এর মধ্যে সাইনবোর্ড, ১০ তলা ভবন, শিমরাইল মোড়, মোঘরাপাড়া এলাকায় সবসময় যানবাহনের জটলা লেগেই থাকে।
অন্যদিকে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেলেই টোলপ্লাজা এলাকায় যানজট মোঘরাপাড়া এলাকা ছাড়িয়ে যায়। এছাড়াও মেঘনা ও গোমতী সেতুতে টোল আদায়ে বিলম্ব এবং মহাসড়কে যানবাহন বিকল কিংবা সড়ক দুর্ঘটনা যানজটের অন্যতম বড় কারণ হতে পারে। যেসব কারণে ঈদযাত্রায় যাত্রীরা ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন।
এর আগে গত ২১ মার্চ রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় যানজটের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে এখানকার কয়েকটি স্থানের কথা তুলে ধরে হাইওয়ে পুলিশ। এইসব পয়েন্টে যানজট নিরসনে বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হয় ওই আলোচনা সভায়।
পরিবহন চালকদের দাবি, সাইনবোর্ড, ১০ তলা ভবন, শিমরাইল মোড়, মদনপুর চৌরাস্তা ও মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় লোকাল বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। এখানে যাত্রী ওঠানামা করার কারণে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এ কয়েকটি স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে যানজট থাকবে না।
পাশাপাশি মহাসড়কটি ঘিরে শিমরাইল মোড় এবং মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় হকারদের কারণে যানবাহনগুলো চলাচল করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। অপরদিকে মেঘনা টোল প্লাজায় সব টোল বুথ চালু রাখতে পারলে যানজট থাকবে না বলে মনে করেন তারা। এছাড়া ছোট ছোট যানবাহন সিএনজি, অটোরিকশা, ভ্যান মহাসড়কে চলাচল করতে না দিলেই হয়তো যানজট দূর হতে পারে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই একেএম শরফুদ্দিন জানান, যাত্রীদের ঈদযাত্রা স্বাচ্ছন্দময় করতে অন্যান্যবারের মতো এবারও আমরা মহাসড়কে নিয়োজিত থাকবো। যেসব পয়েন্টে যানজটের শঙ্কা রয়েছে ওইসব পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক বলেন, গতবারের চেয়ে এবার মহাসড়কে আরও বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকার পাশাপাশি মোবাইল টিম, হোন্ডা টিম, অ্যাম্বুলেন্স টিম থাকবে। এছাড়া মহাসড়কে যেকোনো যানবাহন বিকল হয়ে গেলে কিংবা কোন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত সরানোর জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় এবং মদনপুর অংশে দুটি রেকার রাখা হবে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কোনো সংস্কার কাজ চলমান না থাকায় যাত্রীরা সহজেই তাদের গন্তব্যস্থলে যেতে পারবে।
তবে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ স্থাপনা না থাকলে আর যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং না করলে যানজটের কোনো শঙ্কাই থাকবে না। পাশাপাশি মেঘনাঘাট টোলপ্লাজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে টোলপ্লাজার প্রত্যেকটি বুথ সবসময় যেন সচল থাকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক জেলা পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের পেট্টোল টিম নিয়োজিত থাকবে। এন. হুসেইন রনী /জেসি