নীরবতায় বেপরোয়া সবুজ বাহিনী
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৫:৫৬ পিএম, ২ এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার
নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘদিন যাবৎই আত্মগোপনে থেকে কয়েক গ্রুপে সেন্ডিকেট করে মাদক সাপ্লাই দেওয়া চিহ্নিত মাদকের ডিলার, ঝুট সন্ত্রাস, চোরাই গ্যাস সিন্ডিকেট, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি, জুয়ার আসর, মোবাইলের বিট জুয়া পরিচালনা, ভূমিদুস্যতা, ছিনতাই, অস্ত্রবাজি, কিশোরগ্যাং দ্বারা চুরি-ছেঁচড়ামীসহ অর্ধশত অপকর্মের মূলহোতা বহু মামলার আসামী তাঁতিপাড়া এলাকার বদুর বড় ছেলে মাদক ডিলার সবুজ মিয়া ও তার পালিত বাহিনীর সদস্যরা প্রশাসনের অভিযানে ও মাদক ব্যবসা প্রচালিত রাখতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন।
বাবুরাইলের থাকা আস্তানার পাশাপাশি পুলিশ ও ডিবি থেকে বাচঁতে এখন তারা কৌশলে মই ব্যবহার করে নাগবাড়ি এলাকায় কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী মেম্বারের পালিত ছেলে বাবুর আস্তানা ব্যবহার করছে। জানা গেছে, দফায় দফায় যুগের চিন্তা পত্রিকায় সবুজ বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে চিহ্নিত গডফাদার সবুজের কুকর্ম ধারাবাহিকভাবে ফাঁস হওয়ায় এখন সে আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ুব আলীর পালিত ছেলে বাবুকে ব্যবহার করছে।
সবুজ বাহিনী পুলিশের ঝামেলা এড়াতে মই ব্যবহার করে বাবুরাইল থেকে চোরাই মালামালসহ মাদকের কারবার নাগবাড়ি শেষ মাথা এলাকায় বাবুর আস্তানায় লেনদেন করছে সবুজ বাহিনী জানিয়েছে সূত্র। সূত্র জানিয়েছে, নাগবাড়ি শেষ মাথায় ঠাকুর বাড়ির গোডাউন তারা ব্যবহার করছে। রাত গভীর হলেই দামি দামি মোটরসাইকেলের বহর সেখানে জড়ো হচ্ছে। কিন্ত সদর ও ফতুল্লা থানার কিছু কথিত পুলিশ সদস্যরা মান্থি পাওয়ায় তারা মাদকের স্পট এলাকাগুলোতে টহল অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। যাকে ঘিরে প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর।
সূত্র বলছে, সবুজ বাহিনীর লাগামহীন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বাড়ির মালিক মাওলানা হারুনুর রশিদ বাদশাকে তারা প্রকাশ্যে পিটিয়েছে। সূত্র জানায় বাড়ির নিচতলা মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাদশা মিয়া তার ভাড়া বাড়িও ভাঙতে বাধ্য হয়েছে। মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য হওয়ায় নাগবাড়ি এলাকার কাদির মিয়া, বিল্লায় মিয়া, বারেক হাজির বাড়ির ভাড়াটিয়ারাও অতিষ্ঠ। একের পর এক বাসা মাদকসেবীদের অত্যাচারে খালি হচ্ছে। তা ছাড়া ডিলার সবুজ মিয়া ও তার পালিত বাহিনীর সদস্যদের এখনো ধরতে ব্যর্থ প্রশাসন।
তার পালিত বাহিনীর সদস্যরা এখনো প্রশাসনের হাতের নাগালে না আসায় স্বস্তি মিলছে না এলাকা জুড়ে। একের পর এক অপকর্মের মাত্রা তাদের বেড়েই চলেছে। তারা বর্তমানে বাবুরাইল ও কাশীপুরকে তাদের আওতাভুক্ত করে রেখে মাদক ও নানা অপকর্মের দ্বারা যা বর্তমানে এলাকাবাসীর মুখে মুখে দৃশ্যপট থাকলে ও পুলিশ-প্রশাসন কেন নিরব। মাসিক মাসোয়ারা দিলেই যদি প্রশাসনের হাতের নাগালে না আসা যায় তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাঁতিবাড়ি থেকে নাগবাড়ি গোটা এলাকা এসব মাদককারবারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।
প্রতি মোড়ে মোড়ে পুলিশ সাংবাদিক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি জানাতে প্রতি টিমে ১০/১২ জনের করে কিশোর গ্যাংকে প্রস্তুত রেখেছে মাদকব্যবসায়ীরা । কেউ কোন টু শব্দ করলেই তাদের সাথে লাঞ্ছিত হতে হয়। কয়েকবছর আগে এই জায়গাটিতেই ইলেকট্রিক মিস্ত্রী অপু মার্ডার হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারিগর ছিল এই সন্ত্রাসী মাদকব্যবসায়ীরা। মাদসেবীদের অত্যাচার এতোটাই বেড়েছে যে এই এলাকাতে ‘নতুন দিগন্ত' নামে একটি যে পাঠাগার রয়েছে সেটিও আজ বন্ধের পথে।
এদিকে মাদকের ডিলার সবুজ প্রকাশ্যে না এসে আত্মগোপনে থেকে তার লোক শহিদ, বায়রা মামুন, খান সুমন ধীরে ধীরে তাদের মাদকের এরিয়া বড় করা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এই মাদকের মাধ্যমেই বাকি এলাকাগুলোতে ডুকে তারা তাদের অপকর্ম ও সেই এলাকাগুলোতে প্রয়োগ করতে মরিহা হয়ে উঠেছে। মাদকের টাকায় কোটিপতি বনে যাচ্ছেন ডিলার সবুজ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। শুধু নারায়ণগঞ্জেই নয় কোন কর্ম বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াই তারা কিভাবে বনে গেলেন কোটি টাকার মালিক তা নিয়ে ও রয়েছে প্রশ্ন।
এদিকে এ বিষয়ে বহু প্রশাসনিক বা দুদুকের অনেক কর্মকর্তারা ও বিষয়টি জানলে ও অভিযান নেই তাদের বিরুদ্ধে কারণ অভিযান না দিয়েই মিলে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। তা ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন কায়দায় আরো ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের সাথে আতাঁতের পায়তারা করছে তারা। যার মূল সাহস পাচ্ছে তারা প্রশাসনের বেখেয়ালীপনায়। যাকে ঘিরে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ সুপার ও স্থানীয় সাংসদ সদস্যর হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।এন. হুসেইন রনী /জেসি