সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কালাপাহাড়িয়ার মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম স্বপন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ১৮ মে ২০২৪ শনিবার

 

 

# ভয়ঙ্কর এই ব্যক্তিই এবার হতে চান উপজেলা চেয়ারম্যান

 

আড়াইহাজার উপজেলার আওতাধীন কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নটি নেতিবাচক সংবাদের কারণে প্রায়ই শিরোনাম হয়।  চরাঞ্চল খ্যাত এই ইউনিয়নের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হচ্ছে সাইফুল ইসলাম স্বপন।  তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর সমর্থনে এবার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন।  তবে যে প্রার্থীকে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের মানুষই আতঙ্ক মনে করে সেই প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান হলে উপজেলার পরিস্থিতি কি হবে সেটা ভেবেই গা শিউরে উঠছেন উপজেলাবাসী।


এই প্রার্থী সম্পর্কে কালাপাহাড়িয়ার বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি কালাপাহাড়িয়া  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ইউনিয়নবাসী ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তারা জানান, তিনি ঠিকমতো ইউনিয়ন পরিষদে যেতেন না, জন্ম নিবন্ধন সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহের জন্য তার আশেপাশের লোকদের কাছে ধরনা দিতে হতো। কিন্তু তাদের কাছে টাকার বিনিময়ে কাজ করাতে বাধ্য হতাম। পাশাপাশি নানারূপ ভোগান্তির শিকার হতাম। শুধু তাই নয়,তার এলাকার এক গরুর হাট নিয়ে তিনি তার এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছেন।


তথ্য মতে, একটি গরুর হাট তিনি নির্ধারিত জায়গা থেকে ক্ষমতাবলে সরিয়ে তিনি তার নিজ বাড়ির পাশে নিয়ে গেছেন।  এতে করে, গোটা ইউনিয়নবাসী পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। এছাড়াও, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের  চেয়ারম্যান থাকাকালীন চাঞ্চল্যকর পুলিশ হত্যা মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছিল।  

 

গ্রেফতারকৃত আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপন এর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।  তবুও, রহস্যজনক কারণে চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।  এছাড়াও, তিনি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক ড্রেজার বসিয়ে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করেন।


এতে করে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কালাপাহাড়িয়াবাসীকে করেছেন চরম বিপদগ্রস্থ। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই ইউনিয়নে প্রচুর মারামারি হতো। তার এমন কর্মকাণ্ডের শেষ নেই। এর ফলে এলাকাবাসীর বাধ্য হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জয়ী করে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। এর ফলে সাইফুল ইসলাম স্বপন নামটা শুনলেই ভয়ে আতকে উঠেন কালাপাহাড়িয়াবাসী। তবে এ প্রার্থীই এবার  এমপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।


তিনি ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর স্বপনকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্তে নাখোশ গোটা উপজেলাবাসী।কেননা, তারা বলছে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে বহু ত্যাগী ও যোগ্য নেতা রয়েছে।  তাদের বাদ দিয়ে হুইপ মহোদয় এমন এক প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন যাকে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা কেউ মেনে নিতে পারেনি।  এর ফলে এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে গেছে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগ।


সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে। নজরুল ইসলাম বাবুর সমর্থিত প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শাহজালাল মিয়ার সাথে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হ্যালো সরকারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ। শুধু তাই নয় হুইপ সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে গোটা উপজেলার সাধারণ ভোটাররা।  

 

তারা বলছে ভোটাররা যদি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তবে হুইপ সমর্থিত প্রার্থী, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সর্বশেষ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনের এবারো ভরাডুবি  সময়ের ব্যাপার। কারণ ভোটাররা বলছে যে প্রার্থীর কাছে একটা ইউনিয়নের বাসিন্দারাই সুরক্ষিত নয় তার কাছে গোটা উপজেলার মানুষ কিভাবে সুরক্ষিত থাকবে?