বেখেয়ালিপনায় সরকারি কোয়ার্টারে বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক
মেহেরীন জারা
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:৩৭ পিএম, ২১ মে ২০২৪ মঙ্গলবার
নারায়ণগঞ্জ নগরীর মীর জুমলা সড়কে বাজারের পাশেই অবস্থিত সরকারি কর্মচারীদের কোয়ার্টার। সেখানে নানা সরকারি দপ্তর পুলিশ সুপার কার্যলয়, আদালতপাড়া, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহি প্রকৌশলীর কর্মচারীদের মিলে দুটি বহুতল ভবনে প্রায় ১৪টি পরিবারের বসবাস করে স্টাফ কোয়ার্টারে।
সরেজমিনে কোয়ার্টারের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় ভিতরে পানি নিষ্কাষনের ড্রেনগুলো তেমন কাজ করেনা বললেই চলে। ভবনগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কালো নর্দমার পানি ও বাজারের ময়লা মিশে একাকার হয়ে পানি উঠে যায় কোয়ার্টারে।
কোয়ার্টারের ভিতরে নিচু জায়গাটি ৪ মাস আগে বালু দিয়ে বরাট করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত সে অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোয়ার্টারের ভিতরে নোংরা আবর্জনা ও কালো পচা পানি জমে আছে, যার কারনে সেখানে মশার উপদ্রব ও প্রজননক্ষেত্র গড়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে বহুবার চিঠি দিয়েও কেনো প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ করেন বসবাসরত কর্মচারীরা।
স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা এক সরকারি কর্মচারী বলেন, ১২ বছর ধরে এখানে থাকছি এর কোনো সঠিক ব্যবস্থাই চোখে পড়ে না। বাজারের ড্রেন গুলোও ভালো মতো পরিষ্কার করে না, যার কারনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হয়। এরকম গনপুর্ত বিভাগ ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরেও চিঠি পাঠিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
আর এখানের ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়না। সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে একদিন পরিষ্কার করে দিলেও পরে আর কবে আসবে সেটার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। ভিতরের নিচু জায়গাটি সে আগের অবস্থায় আবার বাজারের ময়লা ড্রেনের পচাঁ পানিতে ভরে যায়।
সেখানে থাকা আরেক সরকারী কর্মচারী সাহেদ বলেন, আমরা যে সরকারি কর্মচারীরা এই সরকারি প্রতিষ্ঠানে থাকি, এ নিয়ে তাদের কোনো উদ্যোগ দেখি না। মাঝে মাঝে মশার কামরে বাচ্চাদের জ্বর ঠান্ডাও হয়ে যায় ময়লা-দূর্গন্ধে আরো মশার আধিপত্য বাড়ছে। এই নিয়ে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না, মশার উপদ্রব এতোটাই বেড়েছে থাকাটাই মুশকিল। এর মধ্যে সামান্য বৃষ্টিতে কোয়ার্টারের নিচ তলা ডুবে ময়লা আবর্জনায় ভরে যায়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র পাল যুগের চিন্তাকে বলেন, মীর জুমলা সড়কের পাশে কোয়ার্টারের ড্রেনগুলো আমরা সবসময় পরিষ্কার করি। আর আমাদের তদারকি কমিটি আছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের,তারাও দেখছে। তারপরও এ বিষয়ে আমরা দেখে যথাযথ ব্যবস্থা করবো।
নারায়ণগঞ্জ গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আহসান হাবীব জানান, ওই স্থানে যে সমস্যাটি হচ্ছে এই বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। বিষয়টি ভালো করে দেখে ব্যবস্থা করবো।
নাসিকের ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ্বাস বলেন, এটা আমার জন্য একটা সমস্যা। স্টাফ কোয়ার্টারের যে বিল্ডিং টা রয়েছে সেটা ৩০-৪০ বছরের পুরোনো। এখানে যে রাস্তা এবং ড্রেনগুলো আছে সেটার উপর একটা টেন্ডার হয়েছে সিটি কর্পোরেশন থেকে। সপ্তাহখানিক পর কাজ শুরু হয়ে যাবে। আর ড্রেন পরিষ্কারের সাথে কোয়ার্টরের কোনো কিছুই জরিত না।
সেখানের জায়গাটি বাজারের সড়কের থেকে দের-৩ ফুট নিচু জায়গায় অবস্থিত। এখন চলছে ডেঙ্গুর মৌসুম আমি তো এতো অসুধ দিয়ে কবার করতে পারবো না। এখন এই ড্রেন পরিষ্কার করলেই এই সমস্যা সমাধান হবে না। পানি ওখানে জমে থাকে যায়না, আমি নিজের চোখেই দেখেছি। এর একটি সমাধান জায়গাটা উচু করতে হবে এবং এর দায়িত্ব হচ্ছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষদের। এন. হুসেইন রনী /জেসি