রূপগঞ্জে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৩
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:২২ পিএম, ৭ জুন ২০২৪ শুক্রবার
রূপগঞ্জে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের আরো অন্তত ১৩ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা। নিহত মো. দ্বীন ইসলাম (২৩) নাওড়া এলাকার বিল্লাত হোসেনের ছেলে।
আহতরা হলেন, নাওড়া এলাকার জাহিদ মিয়া, মো. সোহেল, শাহিন, জাহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, রাজীব, হোসেন মিয়া, নাজমুল প্রধান, জেসমিন, ইভা, ওয়াসিম ও সাখাওয়াত। আহতদের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সঙ্গে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেনের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছে। সেই বিরোধের জেরে প্রায় সময়ই দুই পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষের জেরে মোশাররফ হোসেন এলাকা ছাড়া হন। গত মঙ্গলবার মোশাররফ তার এক স্বজনের জানাজায় অংশ নিতে এলাকায় আসেন। সে সময় প্রতিপক্ষের লোকজন মোশাররফের উপর হামলা করলে মোশাররফ এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এর জেরে গত তিন দিন ধরে নাওড়া এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই উত্তেজনা থেকে প্রথমে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি এবং বিকেল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন হেলমেট মাথায় দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের একাধিক লোক গুলিবিদ্ধ ও আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দ্বীন ইসলাম নিহত হন।
মোশাররফের ফুফাতো ভাই ও নিহত দ্বীন ইসলামের চাচা নাজমুল নাজমুল জানান, মঙ্গলবারের সংঘর্ষের পর এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। তিন দিন ধরেই মোশাররফ হোসেন ও স্থানীয় প্রধান বাড়িতে হামলার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। এনিয়ে এলাকায় পুলিশও মোতায়েন করা হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ করেই তিন থেকে চারশো লোক অস্ত্রশস্ত্রনিয়ে মোশাররফ হোসেন ও নাজমুল প্রধানের বাড়িতে হামলা চালায়। মোশাররফের লোকজন হামলায় বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় গুলিতে দ্বীন ইসলাম আহত হলে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘গ্রামবাসীর সঙ্গে মোশাররফের লোকজনের সংঘর্ষ হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এতে মোশাররফের এক লোক নিহত হয়েছে। তিনি গ্রামে না থাকায় ঘটনার বিস্তারিত জানেন না।'
ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ঘটনার সময় সেখানে নাওড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ছিলেন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। পরে খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা থেকে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে অন্তত ১২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ি। পুলিশ নির্বিকার থাকার অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।'
ওসি বলেন, ‘এলাকা এখন শান্ত আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’