সোহাগ রনির ‘পুঁজি’ মেঘনা ইকোনমিক জোন
এম মাহমুদ
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৯:৪৩ পিএম, ৮ জুন ২০২৪ শনিবার
মেঘনা ইকোনমিক জোনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সেখানে প্রভাব বিস্তার করতেন সেসময়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহাগ রনি। প্রভাবের তেলেশমায় মেঘনা ইকোনমিক জোনের জমি ক্রয়, বালু ভরাট, ঠিকাদারি সবটাই ছিল সোহাগ রনির কজ্বায়। তবে সকল কিছু কজ্বায় নিতে গিয়ে সোহাগ রনির ঘায়ে লাগে হত্যাকান্ডের তীলক। কিন্তু মেঘনা ইকোনমিক জোনে জমির দালালি করে ব্যাপক অর্থ বিত্ত অর্জন করার মাধ্যমে সেই হত্যাকাণ্ডের তীলক মুছে ফেলতে থাকেন।
পরবর্তীতে আর্শীবাদস্বরূপ নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের ছায়া তার মাথায় পড়ার পর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কেননা সেই প্রভাবশালী পরিবারের আশকারায় জোরপূর্বক জমি দখল করে বালু ভরাট করার পারফরমেন্স দেখিয়ে মেঘনা ইকোনমিক জোনের বালু ভরাটের দায়িত্ব নিয়ে নেন। বালু ভরাটের পরবর্তী ধাপ হিসেবে মেঘনা ইকোনমিক জোনের বিভিন্ন কোম্পনীর নির্মাণ শুরু হলে ঠিকাদারি ব্যবসাও পেতে বসেন সোহাগ।
আর এই ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেই দাবি করেন ভ্যাট ট্রাক্্র দিয়ে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। অথচ ব্যবসার আড়ালে মেঘনা ইকোনমিক জোনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন কোম্পানী থেকে মাসোয়ারা নিয়ে ধীরে ধীরে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে ব্যাপক অর্থ বিত্তের মালিক হয়ে নজরকারেন সোনারগাঁজুড়ে সকলের। আর এই অর্থ বিত্তের প্রভাবে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ছড়ি ঘুড়ানোর পায়তারা করেন।
সেই আলোকেই সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী হাসনাত পরিবারকে টেক্কা দিয়ে মোগরাপাড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। পরবর্তীতে ছড়ি ঘুড়ানো সমন্বত রাখতে ফেরত হাসনাত পরিবারের সাথে বুক মিলিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে যান। তবে তার সকল কিছুর পুঁজি হচ্ছে মেঘনা ইকোনমিক জোন যেখান থেকে তার উত্থান।
সূত্র বলছে, ২০১৫ সালের দিকে সোহাগ রনির এলাকা ফুলবাড়িয়ে গ্রামের পাশেই মেঘনা ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। সেসময় থেকেই জেলা ছাত্রলীগের সহ –সভাপতি রাজনৈতিক পদের অপব্যবহার করে মেঘনা ইকোনমিক জোনের জন্য জমি ক্রয়ের জন্য দালালিতে নিজের নাম লিখান। এর কিছুদিনের মধ্যেই আলোচিত আরমান হত্যাকান্ডে সোহাগ রনিকে দোষারপ করে মামলা দায়ের করেন তার বিরুদ্ধে আরমানের পরিবার।
আরমান হত্যাকান্ডের পর বেপড়োয়া হয়ে সোহাগ রনি তার গ্রাম ফুলবাড়িয়াসহ তার পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষের জমি ভয় ভীতি প্রদর্শন করে নিজের মনগড়া দামে মেঘনা ইকোনমিক জোনকে ক্রয় করে দেয়। তবে সেই সময় থেকেই সোহাগ রনির ভয় ভীতিতে তটস্থ হন ভুক্তভোগীরা। যার কারণে এখনো মুখ ফসকে তার বিরুদ্ধে কোন রকম মন্তব্য করার সাহস এখনো পায় না ভুক্তভোগীরা ।
তবে এভাবেই মেঘনা ইকোনমিক জোনের জমি ক্রয়ের ভালো পারফরমেন্স করার প্রক্কালে তাকে সেই জমিগুলোতে বালু ভরাটের দায়িত্ব দিয়ে দেন। এভাবে অর্থবিত্তের বিশাল মালিক হয়ে নিজের নামের সাথে হাজী টাইটেল লাগাতে হজ্ব করে এসে তার নামকরণ করেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে হাজী সোহাগ রনি। হাজী টাইটেল সংযুক্ত করে হঠাৎ হয়ে যান মেঘনা ইকোনমিকের ঠিকাদারি ব্যবসায়ী এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
হয়েছেন বিশাল অর্থবিত্ত আলীশান বাড়ি, ফ্লাট, গাড়ির মালিক। কিন্তু তার আর্থিক অবস্থান দ্রুত পরিবর্তন নিয়ে নানা জনের নানা মতামত রয়েছে। কেননা মেঘনা ইকোনমিক জোনের বিভিন্ন কোম্পানী থেকে গোপনীয় ভাবে মাসোহারা নিচ্ছে অনেকের অভিমত এভাবেই হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে গাছ। তবে অর্থবিত্তের প্রভাবে সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়ি ঘুড়াতে থাকেন সোহাগ রনি।
পরবর্তীতে সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী হাসনাত পরিবারকে টেক্কা দিয়ে হাসনাত পরিবাবের সদস্য মোগরাপাড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু হোঁচট খাইয়ে মোগরাপাড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়ার খায়েশ দেখান সোহাগ রনি। যার ফলে আওয়ামীলীগ থেকে নৌকার মনোনয়নও ভাগিয়ে নেন। তবে এই ইউপি নির্বাচেনও সোহাগ রনি মেঘনা ইকোনমিক জোনকে পুঁজি করে এবং তাদের সহায়তার মাধ্যমে নির্বাচনে করেছে বিপুল অর্থের ছড়াছড়ি।
তারপরও ভোটের ফলাফলে আরিফ মাসুদ বাবুর কাছে পরাজিত হন সোহাগ রনি। তবে নির্বাচনে পরাজিত হয়ে হাসনাত পরিবাবের বিরুদ্ধচারণ করে পড়েন বেকায়দায়। যার ফলে রাজনীতিতে তার ছড়ি ঘুড়ানো সমন্বত রাখতে সেই হাসনাত পরিবাবের সাথে বুক মিলিয়ে হয়ে যান সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এমনকি হাসনাত পরিবার থেকে কায়সার হাসনাত সংসদ সদস্য হয়ে গেলে মেঘনা ইকোনমিক জোনে তার পুঁজি ঠিক রাখতে হাসনাত পরিবাবের সাথে আর বিরোধে জড়াননি।